এসএসসি পরীক্ষা ২০২৫: পদার্থবিজ্ঞানে ভালো নম্বর পেতে হলে
Published: 25th, April 2025 GMT
প্রিয় পরীক্ষার্থী, তোমাদের সব পরীক্ষাই ভালো হয়েছে। এরপরের পরীক্ষাটা হলো পদার্থবিজ্ঞান। ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি তোমার খুব কাজে লাগবে। পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মোট ১৪টি অধ্যায় রয়েছে। সব কটি অধ্যায়টি তোমাদের সিলেবাসে রয়েছে। তাই এ বিষয়ের পরিধি বেশ বড় কথাটি মাথায় রাখতে হবে। পদার্থবিজ্ঞানে এ বছর সব অধ্যায় থেকে প্রশ্ন করা হবে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নেও কিছু গাণিতিক সমস্যা দেওয়া থাকে। কম সময়ে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। পরীক্ষার আগে যে দুদিন সময় পাবে, তখন গাণিতিক সমস্যা অনুশীলন করবে।
পদার্থবিজ্ঞানে বহুনির্বাচনি অংশে নম্বর থাকবে ২৫, সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশে ৫০ নম্বর এবং ব্যবহারিক অংশে নম্বর ২৫।
১.
প্রথম অধ্যায় ভৌত রাশি এবং পরিমাপ অধ্যায়ে ভৌত রাশি ও তার ব্যবহৃত পরিমাপের বিস্তারিত এখানে রয়েছে। মনে রেখো প্রতীক গাণিতিক প্রকাশ। কোনো কিছুর সংক্ষিপ্ত রূপ নয়, তাই এদের সঙ্গে কোনো ফুল স্টপ ব্যবহার করবে না।
২.
দ্বিতীয় অধ্যায় হলো গতি। এর মধ্যে স্কেলার ও ভেক্টর রাশি রয়েছে। ত্বরণ, মন্দন, গতির সমীকরণ ভালো করে পড়বে। এ অধ্যায়ে পড়ন্ত বস্তুর সূত্রগুলো ভালো করে দেখে নেবে। বিভিন্ন গতির বিষয় জেনে নেবে।
৩.
তৃতীয় অধ্যায় হলো বল নিয়ে। নিউটনের তিনটা সূত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা কোনোভাবেই সহজভাবে নেবে না। বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল দুই ধরনের প্রশ্ন এখান থেকে হতে পারে। সংঘর্ষ ও ভরবেগ পড়তে ভুলবে না।
৪.
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি নিয়েই চতুর্থ অধ্যায়। এ অধ্যায় দরকারি তোমার পরীক্ষার জন্য। তাই ভালো করে পড়বে। মনে রেখো, কাজের একক জুল তেমনি শক্তির একক ও কিন্তু জুল এখানে শক্তির বিভিন্ন রূপ রয়েছে। এখানে নবায়নযোগ্য শক্তিটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর রুটিন, কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫পদার্থবিজ্ঞানে বহুনির্বাচনি অংশে নম্বর থাকবে ২৫, সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশে ৫০ নম্বর এবং ব্যবহারিক অংশে নম্বর ২৫।
৫.
বস্তুর ওপর তাপের প্রভাব বিষয়টি ষষ্ঠ অধ্যায়ের অংশ। বস্তুর তাপ ও তাপমাত্রা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে নেবে। তাপ একধরনের শক্তি আর তাপমাত্রা হলো বস্তুর মধ্যে তাপ দেওয়ার পর অবস্থান।
৬.
সপ্তম অধ্যায় হলো তরঙ্গ ও শব্দ। শব্দের তরঙ্গ, শব্দের বেগ, শ্রাব্যতার সীমা কত, তা জানতে পারবে। মাটির নিচে গ্যাস বা তেল আছে কি না, তা ত্রিমাত্রিক সিসমিক সার্ভের মাধ্যমে জানা সম্ভব।
৭.
অষ্টম অধ্যায়টি হলো আলোর প্রতিফলনবিষয়ক। আলোর প্রকৃতি, আলোর প্রতিফলনের সূত্র, বিভিন্ন রকম দর্পণ সম্পর্কে পড়বে। এ অধ্যায়টি দরকারি, সে জন্য বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল দুই ধরনের প্রশ্নই থাকবে। মনে রেখো, আলো হলো বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ। প্রতিফলন, প্রতিফলনের সূত্র ভালো মতো পড়বে। দর্পণ একটা দরকারি বিষয় কথাটি মনে রেখো। সাধারণ আয়নার প্রতিবিম্ব ডান এবং বামে পরিবর্তন হয়। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের জন্য আলোর সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
৮.
দশম অধ্যায়টি স্থির বিদ্যুৎ নিয়ে। মনে রেখো পরমাণু হচ্ছে সবকিছুর ‘বিল্ডিং ব্লক’। সব পরমাণুর কেন্দ্রে রয়েছে একটা নিউক্লিয়াস, তাকে কেন্দ্র করেই ঘুরে ইলেকট্রন। ঘর্ষণে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হয়, তড়িৎ ক্ষেত্র, ধারক ভালো করে পড়বে।
৯.
একাদশ অধ্যায়টি চল বিদ্যুৎ নিয়ে। আমাদের জীবনে যত বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় তার সবই এ অধ্যায়ে। ব্যাটারি সেল, জেনারেটর, সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখবে। এ অধ্যায়ে রয়েছে ওহমের সূত্র, লোডশেডিং, নিরাপদ বিদ্যুতের ব্যবহার। এগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বে।
১০.
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিকস বিষয়ে হলো ১৩তম অধ্যায়। বর্তমান সভ্যতার মূল চালিকা শক্তি হলো ইলেকট্রনিকস। আলফা, বিটা ও গামা রশ্মি, তেজস্ক্রিয়তা,ইন্টারনেট, ই-মেইল বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে এখানে। সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন হতে পারে।
*জেনে রাখো—
১.
জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর পাঠ্যবইয়ের মতো সঠিক হতে হবে। ‘সংজ্ঞা’ বা ‘কাকে বলে’ ধরনের প্রশ্নের উত্তর লিখতে কখনো নিজের মতো করে বানিয়ে লিখবে না।
২.
অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর লিখতেও পাঠ্যবই অনুসরণ করতে হবে।
৩.
পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাণিতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করার কৌশল রপ্ত করতে হবে। উদ্দীপকের তথ্যগুলো প্রতীকের সাহায্যে লিখে নিলে কোন সূত্র দিয়ে সমস্যাটির সমাধান করতে হবে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। প্রয়োগমূলক অংশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই গাণিতিক সমস্যাগুলোই থাকে।
৪.
উচ্চতর চিন্তন দক্ষতা অংশেও অনেক ক্ষেত্রে গাণিতিক সমস্যা থাকে। এ ক্ষেত্রে ‘গ’ অংশের গাণিতিক সমস্যার সঙ্গে পার্থক্য কিংবা সাদৃশ্য আছে কি না, তা প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়।
৫.
গাণিতিক সমস্যা সমাধানে সঠিক একক লিখতে হবে। অবশ্যই আন্তর্জাতিক পদ্ধতির একক ব্যবহার করতে হবে।
৬.
প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে চিত্র আঁকা জরুরি। চিত্র অধিক সুন্দর হওয়ার চেয়ে শুদ্ধ হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চিত্র আঁকতে যাতে সময় বেশি ব্যয় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে। লেখা শেষে অবশ্যই রিভিশন দেবে।
লেখক: রমজান মাহমুদ, সিনিয়র শিক্ষক, গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ণ ত ক সমস য ব যবহ র ক স জনশ ল পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিঁখোজ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে ট্রলার থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে নেমে জয় আহমেদ (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিঁখোজ হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন এলাকায় ঘাটে দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল প্রায় ৬ ঘন্টা চেষ্টা করেও ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে পারেনি ।
নিখোজ, জয় আহমেদ চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের ৬ নং ওয়ার্ডের বাস চালক মারুফ মিয়ার ছেলে। সে এবছর পিআরডি হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের পিআরডি হাইস্কুলের ৩৮ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী সরকারী মুড়াপাড়া পাইলট স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শিক্ষকদের সাথে একটি ট্রলার যোগে বাড়ী ফিরছিল।
ট্রলারটি চনপাড়াপূর্নবাসন কেন্দ্র এলাকার কাছাকাছি আসলে শিক্ষকদের নিষেধ করা সত্ত্বেও এসএসসি পরীক্ষার্থী জয় আহমেদ, ইফাজ, আসিফ, পরশ, ইসমাইল, তানভীর, আব্দুর রহমান ও রাকিব গোসল করতে নদীতে ঝাপ দেয়। এদের মধ্যে জয় আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
এর পর থেকে নিখোজ জয় আহমেদ। বহু খোজাখুজির পর জয়কে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবন দেন পুলিশ। ঢাকা সিদ্দিক বাজার ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের একটি ডুবুরি দল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি নিখোজ জয়ের মরদেহ। সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারে নামে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিটের অধিনায়ক হুমায়ুন কবির।