Prothomalo:
2025-04-25@07:30:20 GMT

পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, সবজি চড়া

Published: 25th, April 2025 GMT

সবজির দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে তিন–চার (শীত মৌসুম) মাস ধরে যে স্বস্তি ছিল, সেটি আর নেই। কারণ, বাজারে এখন কম দামে সবজি পাওয়া যায় না। অধিকাংশ সবজির দামই ৮০ টাকার ওপরে। পাশাপাশি দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও মুরগির ডিমের। এ ছাড়া আগের মতোই বাড়তি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা–বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্যগুলো জানা গেছে।

গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে করলা, পটোল, বরবটি, শজনে, ধুন্দুল, ঝিঙা, লতি—এসব সবজি ৮০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল। বেগুন, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গার কেজি ছিল ৫০–৬০ টাকা।

গতকাল ঢাকার তিনটি বাজার ঘুরে ১৫ ধরনের সবজির দরদাম সম্পর্কে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। তাতে দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ, আট ধরনের সবজির দামই ৮০ টাকার ওপরে। যেমন প্রতি কেজি বরবটি, কচুর লতি, পটোল, চিচিঙ্গা, বেগুন ও শালগমের দাম রাখা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা করে। কাঁকরোল ও শজনের দাম আরও বেশি। প্রতি কেজি কাঁকরোল ১২০ টাকা ও শজনে ১৪০–১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে করলা, লাউ, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স ও পেঁপের কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কম দামের মধ্যে রয়েছে শুধু টমেটো, তা–ও কেজি ৪০–৫০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০–২৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অবশ্য গত বছরের এই সময়েও বাজারে সবজির দাম বেশ চড়া ছিল। যেমন গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে করলা, পটোল, বরবটি, শজনে, ধুন্দুল, ঝিঙা, লতি—এসব সবজি ৮০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল। বেগুন, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গার কেজি ছিল ৫০–৬০ টাকা।

সবজির চড়া দামের বিষয়ে বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো.

ইমরান মাস্টার বলেন, এ বছর রমজান মাস পর্যন্ত শীত মৌসুমে সবজির প্রচুর সরবরাহ ছিল; দামও অনেক কম ছিল। তবে এতে অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। বর্তমানে যেসব সবজি আসছে, সেগুলোর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি। এসব কারণে বর্তমানে উৎপাদনস্থলেই সবজির দাম বাড়তি রয়েছে।

দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও ডিমের

বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম আরও বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা; আর এক মাসের মধ্যে এ দাম ২০–২৫ টাকা বেড়েছে। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। পাড়া–মহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। এ ছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা। অবশ্য এ ধরনের পেঁয়াজের সরবরাহ খুব কম।

এক সপ্তাহের মধ্যে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়, যা গতকাল ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। তবে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কম রয়েছে। বৃহস্পতিবার এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০–১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০–২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এ বছর রমজান মাস পর্যন্ত শীত মৌসুমে সবজির প্রচুর সরবরাহ ছিল; দামও অনেক কম ছিল। তবে এতে অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। বর্তমানে যেসব সবজি আসছে, সেগুলোর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি। এসব কারণে বর্তমানে উৎপাদনস্থলেই সবজির দাম বাড়তি রয়েছে।বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার

বাজারে সরু তথা মিনিকেট চালের দাম কমেনি। বিক্রেতারা জানান, এখন বোরো ধানের মৌসুম চলছে। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র দু–একটি ব্র্যান্ডের বোরো ধানের মিনিকেট চাল বাজারে এসেছে। তাতে সার্বিকভাবে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। যেমন বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল মিনিকেটের কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। এ ছাড়া ধরনভেদে নাজিরশাইল ৮০–৯৫ টাকা, ব্রি–২৮ চাল ৬০ টাকা ও স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রমজান মাসে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কিছুটা আরামে ছিলাম। এরপর একে একে চাল, সয়াবিন তেল ও ডিমের দাম বাড়ল। সবজির দামও ক্রয়সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের কষ্টও বাড়ছে।তালতলা এলাকার বাসিন্দা সাব্বির আলম

এদিকে ১৫ এপ্রিল বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়। তবে দাম বাড়লেও বাজারে চাহিদার তুলনায় বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা কম বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা এলাকার বাসিন্দা সাব্বির আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রমজান মাসে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কিছুটা আরামে ছিলাম। এরপর একে একে চাল, সয়াবিন তেল ও ডিমের দাম বাড়ল। সবজির দামও ক্রয়সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের কষ্টও বাড়ছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স সবজ র দ ম র সরবর হ ৮০ ট ক র ৬০ ট ক অন ক ক গতক ল বছর র ব সবজ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলে এমন উদ্যোগে অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক তহবিল ‘পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি’। কৃষকদের সহায়তা করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আই-ফার্মারকে পাঁচ লাখ ডলারের এই সহায়তা দিচ্ছে তহবিলটি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই তহবিলের অর্থায়ন আই-ফার্মারের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি উপকৃত করবে। এই তহবিল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি ২০২৪ সালে তাদের আঞ্চলিক কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পর প্রথমবারের মতো এই খাতে প্রবেশ করল। ক্ষুদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলছে আই-ফার্মার। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের উচ্চমানের কৃষি উপকরণ, আর্থিক সহায়তা, কৃষি পরামর্শ, বিমা সুবিধা ও ন্যায্য বাজার সংযোগ নিশ্চিত করছে। কৃষক, সরবরাহকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আই-ফার্মার উৎপাদন বাড়াতে, আয় বাড়াতে ও টেকসই কৃষি চর্চা প্রসারে ভূমিকা রাখছে।

নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক লরা আলসেনাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনও সহজ শর্তে অর্থ ও মানসম্মত কৃষি উপকরণ পাওয়ার জন্য নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইফার্মারের উদ্ভাবনী মডেল কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই বিনিয়োগের ঘোষণা তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করতে এবং বাংলাদেশে আরও টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ বলেন, পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই অর্থায়নের ঘোষণা আমাদের আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দিতে সক্ষম করবে। এর মাধ্যমে আমরা আরও ভালো মানের কৃষি উপকরণ, সহজতর আর্থিক সহায়তা ও শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পারবো, যা সরাসরি কৃষকের আয় ও জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করা প্রভাবশালী উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করে আসছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এই তহবিলটি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগগুলোর জন্য এই তহবিল আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার এক
  • দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি
  • চালের দাম যেটুকু কমে বাড়ে তার চেয়ে বেশি
  • ওয়াসার পানিতে লাল কেঁচো, সাদা পোকা!
  • ঈশ্বরদী ও নন্দীগ্রামে ৫৩ চালকলের নিবন্ধন বাতিল
  • বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি
  • এডিবির বিনিয়োগ করা একাধিক প্রকল্প কাজে আসছে না
  • বাজারে খুলনার তরমুজ বেশি, চিনবেন কীভাবে
  • চীনের ফেরত দেওয়া বোয়িং কিনতে চায় ভারত