কিছু সংস্কার প্রস্তাবে অভিন্ন অবস্থান ইসি ও বিএনপির
Published: 25th, April 2025 GMT
নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) দায়বদ্ধ করতে কয়েকটি নতুন বিধান করার প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এসবে আপত্তি জানিয়ে ইসি বলেছিল, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের দায়দায়িত্ব নির্ধারণ–সংক্রান্ত এসব প্রস্তাবে বিএনপিও একমত হয়নি। এ ক্ষেত্রে বিএনপি ও ইসির অবস্থান অভিন্ন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনার লক্ষ্যে প্রস্তাব তৈরির জন্য গত অক্টোবরে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর একটি ছিল বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি সুপারিশের সারসংক্ষেপ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়। তারা ১৬টি ক্ষেত্রে দুই শতাধিক সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন২০২৫-এর মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও বিভিন্ন দল ২২ ডিসেম্বর ২০২৪সংস্কার কমিশনের সুপারিশের একটি ক্ষেত্র ছিল ‘নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা’। বিদ্যমান আইনে কোথাও সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতার বিষয়টি সেভাবে স্পষ্ট করা নেই। নির্বাচন কমিশনের আইনি, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রস্তাব কোনো মন্ত্রণালয়ের বদলে জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির কাছে উপস্থাপনের বিধান করার সুপারিশ করে সংস্কার কমিশন। এতে বলা হয়, সংসদীয় কমিটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠাবে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশের একটি ক্ষেত্র ছিল ‘নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা’। বিদ্যমান আইনে কোথাও সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতার বিষয়টি সেভাবে স্পষ্ট করা নেই।এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকালে কমিশনারদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে তা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে সুরাহা করার বিদ্যমান বিধান কার্যকর করা এবং মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বা শপথ ভঙ্গের অভিযোগ এলে তা তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করার জন্য সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করে সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনের এসব সুপারিশ বা প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি আছে নির্বাচন কমিশনের। সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশের পর গত ২৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। সেদিন তিনি মূলত ইসির অর্থ বরাদ্দ, মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে ইসির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে, তা তদন্তে সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়া এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।
পরে ১৭ মার্চ সংস্কার কমিশনের ২৮টি সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের ভিন্নমত তুলে ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দেয় ইসি। সেখানেও দায়বদ্ধ করার সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসি চিঠিতে বলেছে, তাদের অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়া হলে উদ্দেশ্যমূলক প্রভাব বাড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এটি সংসদীয় কমিটির কাজ নয়, এটি নির্বাহী কাজ। আর সংসদীয় কমিটিকে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হলে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে। মেয়াদ–পরবর্তী সময়ে অভিযোগ এলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে। সেদিন তিনি মূলত ইসির অর্থ বরাদ্দ, মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে ইসির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে, তা তদন্তে সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেওয়া এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।বিএনপির অবস্থানইসিকে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানও ইসির মতো। গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপির আলোচনা হয়। সেখানে দলটি ইসিকে সংসদীয় কমিটির কাছে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়নি। বিএনপি বলছে, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের নতুন করে সংসদীয় কমিটির কাছে দায়বদ্ধ করা ঠিক হবে না। আর এমন কোনো বিধান করাও উচিত হবে না, যাতে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে ভবিষ্যতে আলাদা একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছিল সংস্কার কমিশন। এ প্রস্তাবে ভিন্নমত দিয়ে ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া চিঠিতে ইসি বলেছিল, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইসির সাংবিধানিক দায়িত্ব। এটি সরিয়ে নিলে ইসির সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপিও একই ধরনের অবস্থান তুলে ধরে।
ইসিকে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানও ইসির মতো। গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপির আলোচনা হয়। সেখানে দলটি ইসিকে সংসদীয় কমিটির কাছে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়নি।গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, সংসদীয় কমিটির কাছে ক্ষমতা দেওয়া হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সত্তায় আঘাত আসতে পারে। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে এবং মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইসির সাংবিধানিক এখতিয়ার। এখানে আরেকটি বডি করা হলে একসঙ্গে দুটি সত্তা হয়ে যাবে।
ইসির দায়িত্ব–সংক্রান্ত প্রস্তাবে আপত্তিনির্বাচন কমিশনের কিছু দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার প্রস্তাব ছিল সংস্কার কমিশনের। একটি হলো নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সত্যায়ন করা। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (ফলাফল গেজেটে প্রকাশের আগে) ইসি নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ‘সার্টিফাই’ করে তা গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের বিধান করতে হবে।
ইসির এ ঘোষণায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ করতে পারবে। কাউন্সিল বা আদালত সর্বোচ্চ সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে।
এ প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে ভিন্নমত জানায় ইসি। তারা মনে করে, এ প্রস্তাব অপ্রয়োজনীয়। কারণ, কমিশন সন্তুষ্ট হয়েই ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এ ধরনের বিধান করা হলে রাজনৈতিক দল অহেতুক নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ পাবে।
এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে, তারা নিজেরা চর্চা করে। তাই তারা রাজনৈতিক দলের চেয়ে এসব ভালো বোঝে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো বিএনপি নিজেদের মতো করে বিশ্লেষণ করেছে। বিশ্লেষণে হয়তো ইসির সঙ্গে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি মিলেছে। অন্য কিছু নয়।সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি নেতাবিএনপির সূত্র জানায়, সংস্কার কমিশনের এ প্রস্তাবের সঙ্গে তারাও একমত হয়নি। দলটির যুক্তি হলো, ভোট গ্রহণের দিন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রভিত্তিক তাৎক্ষণিক ফলাফল ঘোষণা করেন এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে এবং নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল প্রাপ্তিসাপেক্ষে ইসি সন্তুষ্ট হয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থীর নাম–ঠিকানা প্রকাশ করে থাকে। এই গেজেটই ‘সার্টিফিকেশন’। এ ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফলের সত্যায়নের বিধান করা হলে অহেতুক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
বিএনপি আরও বলেছে, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলে বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ দায়েরের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে নির্বাচনী কার্যক্রম চূড়ান্তকরণে জটিলতা দেখা দেবে। রাজনৈতিক দল এ ধরনের অভিযোগ দাখিলের আইনি সুবিধা পেলে নির্বাচনী কার্যক্রম চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে না। নির্বাচনে প্রার্থী বা সংক্ষুব্ধ পক্ষের অভিযোগ দায়েরের বিধান আছে, রাজনৈতিক দলের নয়।
ইসিকে দায়বদ্ধ করা ও তাদের দায়দায়িত্ব–সংক্রান্ত সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি ও ইসির অবস্থান অনেকটা অভিন্ন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে, তারা নিজেরা চর্চা করে। তাই তারা রাজনৈতিক দলের চেয়ে এসব ভালো বোঝে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো বিএনপি নিজেদের মতো করে বিশ্লেষণ করেছে। বিশ্লেষণে হয়তো ইসির সঙ্গে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি মিলেছে। অন্য কিছু নয়।
সংস্কার কমিশনের একটি সূত্র জানায়, অতীতের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়। নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট হয়ে যাওয়ার পর কিছু করার থাকে না, এই যুক্তি দিয়ে এসেছে ইসি। এ কারণে তারা ‘সার্টিফিকেশন’ এর প্রস্তাব করেছে।সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কেননির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ওই কমিশনের সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইনে ইসিকে দায়বদ্ধ করার স্পষ্ট কোনো বিধান না থাকায় অতীতে, বিশেষ করে সর্বশেষ তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনেক অন্যায় করেও ইসি পার পেয়ে গেছে। এ কারণে সংস্কার কমিশন ইসিকে দায়বদ্ধ করার বিষয়ে কয়েকটি সুপারিশ করেছে।
সংস্কার কমিশনের একটি সূত্র জানায়, অতীতের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়। নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট হয়ে যাওয়ার পর কিছু করার থাকে না, এই যুক্তি দিয়ে এসেছে ইসি। এ কারণে তারা ‘সার্টিফিকেশন’ এর প্রস্তাব করেছে।
সংসদীয় কমিটির কাছে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ইসির জন্য এ ধরনের দায়বদ্ধতার কাঠামো অনেক দেশেই আছে। কারণ, একটি গণতান্ত্রিক দেশে কেউই দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে নয়। আর দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠানকে অন্যায় আচরণ থেকে দূরে রাখে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ব চনব যবস থ ম য় দ পরবর ত র ব ধ ন কর স প র শ কর এ প রস ত ব র অবস থ ন কর মকর ত ফল ফল র ভ ন নমত ব এনপ র ব যবস থ র জন য বল ছ ল কর র স ষ ট কর ধরন র তদন ত র একট আপত ত ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ছিল বলেই ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের শাসনকাঠামোতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে ঘাটতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ছিল বলেই একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আমজনতার দলের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এর অংশ হিসেবে আজ আমজনতার দলের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন।
আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা তৈরি করবে। তিনি বলেন, ১৬ বছর ধরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ যে ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন সহ্য করেছে, তা যেন আর ফিরে না আসে। এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের অব্যাহত আলোচনা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।
আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এখন পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।