সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতানৈক্য; তাতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাবে। এসব কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ব্যাহত হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে নির্বাচন এবং রাজনীতি নিয়ে শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। 

গত বুধবার ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। নীতিগত অনিশ্চয়তা ও উচ্চ সুদের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগে তেমন গতি আসার সম্ভাবনা নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে রাজনীতি প্রসঙ্গে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ধীরগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপ অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। এতে আরও বলা হয়, ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। অনেকগুলো কমিশন, কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে। প্রস্তাবিত অনেক সংস্কার এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনও তেমন উন্নতি হয়নি। এ বছরের ডিসেম্বর এবং আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের ঘোষণার পরও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। 

বিশ্বব্যাংক মনে করে, কিছু কিছু খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে। সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, সরকারি ও করপোরেট খাতে সুশাসন আরও সুসংহত করা। তৃতীয়ত, দেশে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের যে চাহিদা, তা মেটাতে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিকল্প নেই। 
তারা মনে করছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত ছিল মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এই রাজস্ব দিয়ে দেশের প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। চতুর্থত, বাংলাদেশের আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা নিয়ে কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক। তারা বলেছে, দেশে আর্থিক খাত যেভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে, তাতে জরুরি ভিত্তিতে এই খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা দরকার। 
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর এই বাণিজ্যনীতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তেমন একটা পড়বে না। আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পুরোপুরি অনুভূত হবে। সংস্থাটি বলেছে, প্রভাব ঠিক কতটা পড়বে, তা এখনই সুনির্দিষ্ট হয়ে বলা যাবে না। কারণ, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও নীতি ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। সেই অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেও তাদের হিসাব, বৈশ্বিক এই বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১ দশমিক ৭ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে কমবে। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ বব য ক র জন ত ক দশম ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুক লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা

বাড়িঘরে হামলা ও প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জামালপুর জেলার আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস। ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন তিনি।

সোমবার রাত ১০টায় নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে ৫ মিনিটের লাইভে হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মীর ইছহাক। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, দীর্ঘ রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে। অথচ আজও তাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ৫ আগস্টের পর আট মাস কেটে গেলেও আসামিরা তাঁর বাড়িতে এসে রাতের আঁধারে হামলার চেষ্টা করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতার অভিযোগ, সদর উপজেলার মেস্টা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বদরুল হাসান বিদ্যুতের পরিবার তাঁর বাড়িতে হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত। বিদ্যুতের বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই মিলে তাঁর গ্রামের বাড়িতে হামলা করতে গিয়েছিলেন। এ সময় তারা তাঁকে গুম বা খুন করার হুমকি দিয়েছেন।

ইখলাস প্রশ্ন তোলেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হয়েও যদি নিরাপত্তা না পান, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কেন তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে?

লাইভে তিনি বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও ওই রাতে হামলা ঠেকানো গেছে। তবে হামলাকারীরা এখনও আত্মগোপনে থেকে তাঁকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর বাবা-মাকে গ্রামে হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে, তাদের জীবন এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এ সরকার ও তার দোসররা এখনও তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন কিছুই করছে না। হামলার পরিকল্পনাকারী বিদ্যুৎকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, সেটা জানতে চাই। তাহলে অপরাধীরা কি টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে?’

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে ইখলাস বলেন, ‘আপনি বারবার এই আসামিদের সুযোগ দিচ্ছেন, যা আমাদের ওপর হামলার সুযোগ করে দিচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। তিনি জীবন দিয়ে হলেও চান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।

আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

জামালপুর সদর থানার ওসি আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চলতি অর্থবছরে চরম দারিদ্র্য বাড়তে পারে: বিশ্ব ব্যাংক
  • রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে
  • সরকারি অনুদানের সিনেমা জমা দেওয়ার সময় বাড়লো
  • নবীনগরে হেফাজতের কমিটি নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষ
  • যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য চুক্তির শর্ত প্রস্তুত, আজ থেকে আলোচনা
  • ফেসবুক লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা
  • সার কেনাসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুই প্রস্তাব অনুমোদন
  • অর্ধবার্ষিকে হামিদ ফেব্রিক্সের লোকসান বেড়েছে ১২৬১.৯০ শতাংশ
  • ১৫% নগদ লভ্যাংশ দেবে ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্স