চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট অঞ্চল থেকে ধান-চালের ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ধান ও চাল ক্রয় কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। 
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘ধান-চাল কেনা নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট হবে না। বিগত আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে কোনো সিন্ডিকেট ছিল না, বোরো ধান সংগ্রহেও কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। বিগত সরকারে আমলে কী হয়েছে না হয়েছে, তা আমার জানা নেই। এখন কোনো সিন্ডিকেটের অস্থিত্ব থাকবে না। সরকারি সভার মাধ্যমে অনেক বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করে ধান চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এবার সিলেট অঞ্চল থেকে ৩২ হাজার ৪৬৩ টন ধান ও ৫২ হাজার ১৫১ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তর থেকে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।  
লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণের আশাবাদ জানিয়ে সিলেট আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বোরো মৌসুমে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া গত বছর আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হলেও ধান কেনা হয়েছে ৬৬ ভাগ। এবার লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে কম। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তাই কৃষকদের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ ধান কেনা সম্ভব হবে। 
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট জেলায় ৫ হাজার ৫৫০ টন, সুনামগঞ্জে ১৪ হাজার ৬৪৫ টন, হবিগঞ্জে ৮ হাজার ২৫২ টন এবং মৌলভীবাজারে ৪ হাজার ১১ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে সিলেট অঞ্চলের চার জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ২১৯ হেক্টর জমিতে। এ অঞ্চলে ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৭ টন ধান উৎপাদন হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ ন স গ রহ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইবলিস জিন না ফেরেশতা

মানুষ সৃষ্টির আগে আল্লাহর সৃষ্টিতে ছিল ফেরেশতা ও জিন। ইবলিস আগুনের তৈরি। থাকত ফেরেশতাদের সঙ্গে। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করত। ফলে ইবলিস জিন নাকি ফেরেশতা—এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো; তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল ও অহংকার করল । তাই সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৪)

 ইবলিসকে সেজদা করতে বলার কারণ

ইবলিসকে কেন ফেরেশতাদের সঙ্গে সেজদা করতে আদেশ করা হলো, সে কি ফেরেশতা? আল্লাহতায়ালা আদমকে সৃষ্টির আগেই ফেরেশতাদের আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন।

আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আমি যখন আদমের সৃষ্টি সম্পন্ন করব এবং তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেও’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৭২)। তখন ইবলিস সেই মজলিশেই উপস্থিত ছিল। তাই ইবলিস ফেরেশতা না হলেও সে ওই আদেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

ইবলিস জিন হওয়ার প্রমাণ

ইমাম রাজি (রহ.) বলেন, ইবলিস জিনদের একজন, তার মৌলিক উপাদান আগুন। এ জন্য তিনি তিনটি দলিল উপস্থাপন করেছেন।

এক. ইবলিসের সৃষ্টি আগুন থেকে। কোরআনে এসেছে, ইবলিস বলেছে, ‘তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ আর তাকে (আদমকে) সৃষ্টি করেছ কাদা মাটি দিয়ে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১২)

দুই. ইবলিসের ছেলেমেয়ে আছে, সে বংশবিস্তার করে। ফেরেশতারা এর থেকে মুক্ত। তাদের স্ত্রী-সন্তান নেই। তাদের মধ্যে নেই নারী-পুরুষের বিভাজনও। অথচ আল্লাহ ইবলিস সম্পর্কে বলেছেন, ‘তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে ওকে ও ওর বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ?’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ৫০)

তিন. ফেরেশতারা আল্লাহর সব আদেশ মেনে চলে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাদের (ফেরেশতাদের) যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা আদেশ করা হয় তা-ই করে।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬) আল্লাহ কোরআনে অধিকাংশ স্থানে ইবলিসকে ‘শয়তান’ বলে সম্বোধন করেছেন। শয়তান শব্দটি দিয়ে কট্টরভাবে অবাধ্য হওয়াকে বোঝায়। (আত-তাফসিরুল কাবির, ফখরুদ্দিন রাজি, ২/৪২৯-৩০)

আরও পড়ুনসুরা আর রাহমানে জিন ও মানবজাতি উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে১০ নভেম্বর ২০২৩

তা ছাড়া ‘আল্লাহতায়ালা জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুন থেকে’ (সুরা রহমান, আয়াত: ১৫), আর ফেরেশতাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নুর বা আলো থেকে (মুসলিম, হাদিস: ২,৯৯৬)।

ইবলিস কোন শ্রেণির জিন

ইবনে আব্দিল বার (রহ.) বলেছেন, জিনদের বিভিন্ন শ্রেণি রয়েছে, ১. সাধারণ জিনদের বলা হয় জিন্নি। ২. যেসব জিন মানুষের সঙ্গে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে, তাদের বলা হয় আমির। ৩. যেসব জিন বাচ্চাদের সামনে আবির্ভূত হয়, তারা আরওয়াহ। এটি রুহ শব্দের বহু বচন। ৪. যেসব জিন খারাপ হয়ে যায় এবং মানুষের ক্ষতি করতে চায়, তারা শয়তান। ৫. যেসব শয়তানের দুষ্কৃতি খুব বেড়ে যায়, তাদের বলে মারিদ। ৬. যারা শক্তিশালী ও দুশ্চরিত্র হয়ে ওঠে, তাদের বলা হয় ইফরিত। (আত-তামহিদ, ইবনে আবদিল বার, ১১/১১৭-১১৮)

আরও পড়ুনইবলিসের কাহিনি১২ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ