দেশে যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য স্বাভাবিক। তবে আমরা বসব, আলোচনা করব এবং এগিয়ে যাব।

আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এ কর্মশালা আয়োজন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি। নেতাকর্মীর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। কারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের রাজনৈতিক ও ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখেছি, দেশের বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা– সব ধ্বংস হয়ে গেছে। সমাজে বিভিন্ন অধঃপতন শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে একসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। জনগণের সমর্থনে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। বিগত ১৫ বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।

কর্মশালায় পঞ্চগড় অংশে তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড.

মাহাদী আমিন, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু; ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন এবং দিনাজপুর অংশে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গণশিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক মোরশেদ হাসান, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ প্রশিক্ষণ দেন ও বক্তৃতা করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন গণতন ত র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

পোপের মৃত্যুতে দেওয়া শোকবার্তা মুছে ফেলল ইসরায়েল

রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়েছিল ইসরায়েল। তবে এখন সেগুলো মুছে ফেলা হয়েছে।

ইসরায়েল সরকারের এক্স অ্যাকাউন্টে সোমবার পোস্ট করা একটি বার্তায় লেখা ছিল, ‘চির শান্তিতে ঘুমান,‍ পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর স্মৃতি আশীর্বাদস্বরূপ হোক।’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই বার্তা সরিয়ে ফেলা হয়।

হিব্রু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ইসরায়েলি কূটনৈতিক মিশনগুলোকে একই ধরনের সব শোকবার্তা মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ভ্যাটিকানের দূতাবাসগুলোর শোকবইয়ে স্বাক্ষর না করতে বলা হয়েছে।

পোপের মৃত্যুতে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজোগ শোকবার্তা দিলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে এখনো নীরব আছেন।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আইজ্যাক হেরজোগ লিখেছেন, ‘খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মহান আধ্যাত্মিক পিতা, মহামান্য পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে আমি খ্রিষ্টানদের প্রতি, বিশেষ করে ইসরায়েলে থাকা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর শোক জানাচ্ছি। তিনি এক গভীর বিশ্বাসী এবং সীমাহীন সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। মানবতা ও শান্তির জন্য তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

জেরুজালেমের কেন্দ্রীয় ক্যাথলিক গির্জা ল্যাটিন প্যাট্রিয়ার্কেট পরিদর্শনে গিয়ে বিরোধী দলের পার্লামেন্ট সদস্য গিলাদ কারিভ বলেন, ‘ইসরায়েল সরকার ও নেসেট (পার্লামেন্ট) থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা না দেওয়ায় আমি লজ্জিত। ইসরায়েলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের পক্ষ থেকে শোক জানাতে আমি এখানে এসেছি।’

এটি এমন এক প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, যখন ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর কারণে ইসরায়েলে পোপের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে কেন্দ্র করে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে কথা বলে আসছিলেন।

২০২৩ সালের নভেম্বরে পোপ ফ্রান্সিস গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্পর্কে বলেছিলেন, এটা ‘যুদ্ধ নয়, বরং সন্ত্রাসবাদ’। এই মন্তব্যের পর জেরুজালেম পোস্টের সম্পাদক তাঁকে ‘হামাসের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থনকারী’ বলে অভিযুক্ত করেন।

হামাস হলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়েছে।

ল্যাটিন প্যাট্রিয়ার্ক অব জেরুজালেমের কার্ডিনাল পিয়েরবাতিস্তা পিজ্জাবাল্লাকে গাজা অঞ্চলে প্রবেশের অনুমতি না দিতে ইসরায়েল সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।

পোপ তাঁর শাসনকালের শুরুতে বেথলেহেমের বিভাজক প্রাচীরের সামনে প্রার্থনা করেছিলেন। ওই দেয়াল পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের দৈনন্দিন সংগ্রামকে তুলে ধরে। পোপ সেখানে প্রার্থনা করায় অনেক ইসরায়েলি ক্ষুব্ধ হয়েছিল।

চলমান যুদ্ধের সময়ও তিনি গাজা সিটির হোলি ফ্যামিলি নামের একমাত্র ক্যাথলিক গির্জার সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখতেন। তিনি গাজার জনগণের দুর্ভোগের কথা বারবার তুলেছেন।

পোপের জন্য দেওয়া শোকবার্তা সরিয়ে ফেলার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যম ওয়াইনেটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির এক কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যাখ্যা পাইনি, শুধু একটি সুস্পষ্ট আদেশ পেয়েছি যে মুছে ফেলতে হবে। যখন আমরা প্রশ্ন করেছি, তখন বলা হয়েছে, “বিষয়টি পর্যালোচনার অধীন”। এই উত্তর আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। যাঁদের কাছে আমরা ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্ব করি, সেই মানুষদেরও সন্তুষ্ট করতে পারেনি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সবাই উদ্‌গ্রীব: আমীর খসরু
  • বিএনপি দেশে সংস্কার শুরু করেছিল শহীদ জিয়ার সময় থেকে: তারেক রহমান
  • যে কোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
  • ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্রের ঘাটতিতে: আলী রীয়াজ
  • পোপের মৃত্যুতে দেওয়া শোকবার্তা মুছে ফেলল ইসরায়েল
  • একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথরেখা
  • নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার টালবাহানা করছে: রুহুল কবির রিজভী
  • পতিত সরকারের প্রধানের নির্দেশে ভাস্কর মানবেন্দ্রের বাড়িতে আগুন: রিজভী
  • বিশ্বশক্তির দাবা খেলায় কি ভারত কিস্তিমাত হয়ে যাচ্ছে