জম্মু–কাশ্মীর পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী আগামীকাল শুক্রবার শ্রীনগরে যাচ্ছেন। সেখানে পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যালোচনা করবেন। 

আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এ তথ্য জানিয়েছে।

সামরিক সূত্রের বরাতে ওই খবরে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ কোর কমান্ডিং কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। পহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা–পরবর্তী পরিস্থিতিতে উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান নিয়ে তারা আলোচনা করবেন।

সামরিক তৎপরতার পাশাপাশি পহেলগামে হামলার পর ভারত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার ২০টি দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছে নয়াদিল্লি। বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ওই বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি পহেলগামে হামলা, তার পরিপ্রেক্ষিত এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। 

পিটিআই জানিয়েছে, ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতেরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের পাশাপাশি ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, নরওয়ে, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার কূটনীতিকেরাও উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সন্ধ্যায় ওই বৈঠকে যাওয়ার আগে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও দলটির নেতা রাহুল গান্ধীসহ অন্যান্য দলের নেতারা উপস্থিত হয়েছেন। বৈঠক শুরুর আগে উপস্থিত নেতারা পেহেলগামে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন।

একই দিনে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। শ্রীনগরের শের ই কাশ্মীর ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে দুপুরে সেই বৈঠকে পহেলগামে হামলা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে সাধারণ মানুষের ওপর ‘ঘৃণ্য, অমানবিক ও কাপুরুষোচিত আক্রমণের’ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ‘এটা কাশ্মীরিয়তের মূল্যবোধ ও ভারতের ঐক্য, সম্প্রীতি এবং শান্তির ওপর আক্রমণ।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপস থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে উপস্থাপন চলছে

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে উপস্থাপন চলছে।

বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানিতে পেপারবুক থেকে আসামি ও সাক্ষীদের জবানবন্দি উপস্থাপনের পর অভিযোগ গঠনের আদেশের অংশবিশেষ উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

এ মামলায় বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের পেপারবুক থেকে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আসামিদের ডেথরেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার, সুমাইয়া বিনতে আজিজ ও তানভীর প্রধান শুনানিতে ছিলেন। আসামি পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, পেপারবুক থেকে আসামি ও সাক্ষীদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি উপস্থাপন করা হয়। এরপর অভিযোগ গঠনের আদেশের অংশবিশেষ পড়ে শোনানো হয়। আগামী রোববার শুনানি হবে। ওই মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব; কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।

কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা এসব আপিল ও আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে। সিনহা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে, যা একই বছর ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করতে হয়। পেপারবুক প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণ করেন। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ