নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের গোদনাইল ডিপোর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবৈধভাবে জ্বালানি তেলের বিক্রয় বন্ধে করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেডের গোদনাইল ডিপোতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (বিপণন) ও সরকারের যুগ্ম সচিব জনাব মো.

আবদুল কাদের সভায় সভাপতিত্ব করেন।

বিপিসি’র ব্যবস্থাপক (বিপণন) জনাব মো. আল আমীনের পরিচালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। 

অংশগ্রহণকারী অংশীজনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনাব মো. অকিল ভূঁইয়া, মো. ফজলুল হক, মো. আনোয়ার হোসেন মেহেদী, মো. সাইজুদ্দীন মাতবর, জনাব কামাল বিশ্বাস, মো. মিলন ভূঁইয়া, জনাব মো. ইসমাইল এবং শ্রমিক প্রতিনিধি হাজি মো. জাহিদ হোসেন, জনাব এস এম আসলাম প্রমুখ।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ টিপু সুলতান এবং বিপিসি’র পক্ষে মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) জনাব মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন।

র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ শামস্, এসি ল্যান্ড (সিদ্ধিরগঞ্জ) জনাব দেবযানী কর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জনাব মো. সোহেল রানা এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব নিলুফা ইয়াসমিন।

সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, রাষ্ট্রীয় তেল বিপণন কোম্পানি পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের গোদনাইল ডিপোর আশেপাশে গড়ে ওঠা ভাসমান ও অবৈধ জ্বালানি তেল বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সকল এসোসিয়েশন কর্তৃক আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ সকল অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ীদের নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

অন্যথায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে।

জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির ড্রাইভার শ্রমিকদের নিয়োগপত্র প্রদানের বিষয়ে মালিক সমিতি সভায় ঐকমত্য পোষণ করেন। এছাড়া সকল গাড়ীতে Vehicle Tracking System (VTS) স্থাপন ও সচল রাখার বিষয়েও মালিক সমিতি আশ্বাস প্রদান করেন।

সভায় পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ডিপো ইনচার্জগণ উপস্থিত ছিলেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ব যবস থ জন ব ম ব পণন

এছাড়াও পড়ুন:

‘সবচেয়ে বড় প্রেরণা বাবা’

শৈশবের প্রিয় মুহূর্ত 
শৈশবের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত কেটেছে আমার বাবার সঙ্গে। তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন। আমার বাবাকে এখনও মনে করি তিনি পৃথিবীর সেরা শ্রেষ্ঠ মানুষ। হাত ধরে বাজারে যাওয়া, কোথাও বের হওয়া, তাঁর সঙ্গে সময় কাটানো সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত। বাবা আমার একজন আইডল ছিলেন। বাবার মতো হওয়ার জন্য ভাই-বোনদের মধ্যে তাঁর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেছি। তিনি আমাকে সবখানে নিয়ে যেতেন। তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোটাই ছিল জীবনের সেরা সময়।
যখন আপনি নবীন লেখক
বাবা মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতেন। বিভিন্ন রিহার্সাল বা নাটক দেখানোর জন্য আমাকে নিয়ে যেতেন। তবে পরিবারের কেউ লেখালেখি করতেন না। বাবা প্রতি সপ্তাহের শুক্রবারের পত্রিকা কিনতেন। সাহিত্য পাতার বিভিন্ন গল্প-কবিতা পড়তেন। বিশিষ্ট লেখকদের গল্প আমাকে শোনাতেন। আমার কাছে মনে হলো, আমি বাবাকে শ্রদ্ধা করি। বাবা তাদের শ্রদ্ধা করেন। লেখালেখি করতে হবে, আমাকে লেখক হতে হবে। সে সময় আমাদের সৈয়দপুরে ‘বার ওয়েল’ নামে রেলওয়ের একটা সংগঠন ছিল। তখন আমি কলেজে পড়ি। সেখানে নোটিশ বোর্ডে দেখলাম, নবারুণের জন্য নতুনদের কাছ থেকে লেখা আহ্বান। গল্পের কোনো কিছু বুঝি না। সত্য বলতে গল্পের প্যারা, দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন এসব কিছুই বুঝতাম না। তবুও একটি গল্প সেখানে পাঠিয়ে দিই। তখন  তো টেলিফোন বা যোগাযোগ তেমন ছিল না। আলম ভাই নামে একজন আমার বাসায় আসেন। তিনি আবার বাবার ছাত্র ছিলেন। তাঁকে দেখেই বাবা চিনতে পারেন। কী অবস্থা জানতে চান। তখন আলম ভাই জানান, রেজানুর গল্প দিয়েছে, ওর সঙ্গে কথা আছে। তারপর আমাকে পরের দিন যেতে বলেন তাঁর কাছে। পরে তিনি গল্প ধরে ধরে পুরো বোঝালেন। গল্প সম্পর্কে একটা প্রশিক্ষণ দিলেন আর কি; যা পরবর্তী জীবনে বেশ কাজে আসে। কীভাবে গল্পের প্যারা, দাঁড়ি বা অন্যান্য সেসব বুঝিয়ে বললেন। গল্পটির নাম ছিল ‘ক্ষুদার জ্বালা’। পরবর্তী সময়ে সেই গল্পটি যখন ছাপা হলো, তখন অন্যরকম  অনুভূতি কম্পিত হয়। যে পছন্দ করে তাকেও দেখাই, যে অপছন্দ করে তাকেও দেখাই। 
প্রথম নাটক যেভাবে লেখা হয়
ঢাবিতে পড়ার সময় আমার ইচ্ছে হলো নাটক লিখব। একদিন বিটিভিতে আতিকুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে চলে যাই। পরে সেখানে আমার নাটক লেখার অনুভূতির কথা জানাই। তাঁকে নাটকের স্ক্রিপ্ট দিই। তিনি পরে জানাবেন বলে রেখে দেন। দুই মাস যায় কোনো খোঁজ পাই না। তখন আবার তাঁর কাছে চলে যাই। তিনি জানান, লেখা আরও ঠিকঠাক করতে হবে। এক পর্যায়ে সব ঠিক হয়ে যায়, তিনি পছন্দ করেন। নাটকের রিহার্সাল শুরু হয়। এক পর্যায়ে শুটিং শেষ হয়। পরে আতিকুল হক চৌধুরী জানান, নাটক অমুক দিন প্রচার হবে। আমি তো খুশিতে আত্মহারা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে বলেছি।  দুঃখের কাহিনি হলো, যেদিন প্রচার হওয়ার কথা, সেদিন আর নাটক প্রচারিত হলো না। সবাই তো আমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ভাবা শুরু করল। এক পর্যায়ে আতিকুল হক চৌধুরী চিঠির মাধ্যমে আমাকে খোঁজ করেন। আমি দেখা করি। পরে তিনি সান্ত্বনা দেন। শিডিউল জটিলতার জন্য প্রচার হয়নি। নেক্সটে প্রচার করা হবে। পরে সত্যি সত্যি প্রচার হলো। যখন নাম ঘোষণা হলো রেজানুর রহমানের গল্প অবলম্বনে আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় নাটক। শোনার পর শরীর দিয়ে ঘাম বেরিয়ে গেল। 
প্রিয় লেখক যারা 
আমার প্রিয় লেখক হলেন শওকত আলী। ‘উত্তরের খেপ’ নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন। ঢাকা থেকে ট্রাক নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে যাচ্ছে একজন ড্রাইভার। পথের মধ্যে যত কথাবার্তা, চোখের সামনে এখনও সেসব ভাসে। তাঁর লেখা আমাকে বেশ অনুপ্রেরিত করেছে। তরুণ বয়সে আরেকজনের লেখা আমার বেশ ভালো লেগেছিল। তরুণ বয়সে ভীষণ উন্মাদনা ছিল। ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস আমার বেশ ভালো লেগেছে। সবচেয়ে যে বিষয়টি ভালো লাগত, তিনি তরুণদের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারটি বুঝতেন। লেখালেখির জায়গায় বেশি উৎসাহিত করেছেন তিনি। হুমায়ূন আহমেদের লেখাও আমাকে বেশ উৎসাহিত করেছে। তাঁর সঙ্গে অনেক স্মৃতি রয়েছে। 
এখন যা লিখছি, পড়ছি
ছোটবেলা থেকে শুরু করে, বেড়ে ওঠা পর্যন্ত এই সময়ে। একান্নবর্তী পরিবার নিয়ে বড় উপন্যাস লেখার ইচ্ছে ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এই লেখাটি শুরু করেছি। যখনই সময় পাই বই নিয়ে বসে যাই। পড়া শুরু করি। পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে এখন পড়াশোনা কমে গেছে। আশা করি সেসব কেটে যাবে খুব শিগগিরই। 
প্রিয় উদ্ধৃতি
আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা আমার বাবা। তাঁর প্রতিটি কথাই যেন আমার প্রিয় উদ্ধৃতি। তিনি বলতেন, ‘সৎ হও, সততাই শক্তি। তুমি সৎ থাক, কেউ কোনোদিন তোমার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে না। তুমি বিপদে পড়বে না।’ v

lগ্রন্থনা :: ফরিদুল ইসলাম নির্জন

সম্পর্কিত নিবন্ধ