থানার পাশে অবৈধ বালুমহাল, ওসির প্রত্যাহার চাইলেন বিএনপি নেতা
Published: 24th, April 2025 GMT
রাজশাহীর চারঘাট থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবৈধ বালুমহাল চালাচ্ছিলেন পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতলেবুর রহমান মতলেব। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের প্রত্যাহার দাবি করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ।
পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে চারঘাটের চৌরাস্তা মোড়ে এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।
আবু সাঈদ চাঁদ চারঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘নদীভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসন ইউএনও ও এসিল্যান্ড প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। এ জন্য তাদের দোষ দিতে পারছি না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, চারঘাট বলে একটা থানা আছে, ওসি আছে, পুলিশ আছে কিন্তু এদের কোনো কাজ নাই। এরা বিগত সময়ে যেগুলো করেছে, এখনো সেগুলোই করছে। রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। ডিআইজিকে ওসির বিষয়ে বলেছি। তারপরও যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে জনগনকে সাথে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘চারঘাটে বালু উত্তোলন হচ্ছে অবৈধভাবে, কিন্তু পুলিশ নীরব দর্শক। রাতে গিয়ে বালুর ট্রাকের টাকা গুণে আপনারা টাকা নিচ্ছেন। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনো ভূমিকা নেই। আপনাদের প্রশাসনের কাছে আজকেই শেষ কথা। সেদিন ডিআইজি সাহেবকেও বলেছি, এটা ফালতু একটা ওসি। যে ওসির কোনো কাজ নাই, সে ওসি চারঘাটে থাকতে পারবে না।’’
চারঘাট উপজেলা সদরেই অবৈধ বালুমহাল চালু করে মাটি কাটছিলেন পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতলেবুর রহমান মতলেব। তার সঙ্গে জেলা ও স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাও ছিলেন। উপজেলা প্রশাসন কয়েকদফা অভিযানে গিয়েও অবৈধ বালু ও মাটি কাটা বন্ধ করতে পারেনি। এতে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, উপজেলা ক্যাম্পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। হামলার আশঙ্কায় কিছুদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন আর অভিযানেই যাচ্ছিল না। এ নিয়ে গত গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর সেদিন থেকেই মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ সমাবেশে বলেন, ‘‘চারঘাটের মাটিতে খবরদারি চলবে না। আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করি, আইনের মধ্যে চলার চেষ্টার করি। আইন যে ভঙ্গ করছে সে বিএনপির লোক হয়ে থাকলেও খাতির করছেন কেন? তাকে ধরেন। পরিস্কার কথা আমার, আমি নিজে অন্যায় করে থাকলে আমাকেও ধরেন। যারা ঘাট দখল করে খাবে, চাঁদাবাজি করে খাবে- তার দায়ভার বিএনপি নেবে না। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’’
মানববন্ধনে সাধারণ মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বুধবার বিকেল থেকেই চারঘাট উপজেলাজুড়ে মাইকিং করা হয়েছিল। সকাল ১০টা থেকেই উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সাধারণ মানুষ উপস্থিত হতে থাকেন। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারাও অবৈধ বালুমহাল বন্ধ এবং ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম বিকুল, যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহীন, উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক মাসুদ রানা, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল মমিন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালেক আদিল, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির রহমান মুকুট প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে প্রত্যাহারের দাবি ওঠার বিষয়ে কথা বলতে চারঘাট থানার ওসি মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এর আগে গত সোমবার তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, থানার পাশেই যে অবৈধ বালুমহাল চলছে তা তিনি জানেন না। বালুমহাল থেকে সপ্তাহ হিসেবে টাকা নেওয়ায় ওসি মিজানুর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে অসযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ আছে। সেদিন তিনি এ অভিযোগও অস্বীকার করেছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র রহম ন ব এনপ র স ব র রহম ন ব যবস থ র ব এনপ উপজ ল মতল ব
এছাড়াও পড়ুন:
জাবিতে অবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থবিদ্যা বিষয়ক অনুষদের ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব ও গবেষণা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে অনুমোদিত ভবনের কাজ অবিলম্বে শুরুর দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন।
গণিত বিভাগের ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাকিব বলেন, “জাবি সৃষ্টির ৫০ বছরেও আমাদের বিভাগের ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকট বিদ্যমান। একটা ল্যাবে ২৫ জনের বেশি ক্লাস করতে পারে না, বসতে পারে না। অথচ আমাদের প্রতিটা ব্যাচে ৮০ জন শিক্ষার্থী। আমরা আসলে এখান থেকে কি শিখব?”
আরো পড়ুন:
জাবিতে যুক্ত হলো আরো চারটি ইলেকট্রিক কার্ট
গাছ কেটে ভবন নির্মাণের ব্যাখ্যা দিল জাবি প্রশাসন
তিনি বলেন, “ক্লাস রুমগুলো এত ছোট যে, এক বেঞ্চে ৫-৬ জন করে বসতে হয়। কেউ কেউ দাঁড়িয়েও থাকে। এটা কোনোভাবেই পড়াশোনার সুন্দর পরিবেশ হতে পারে না। আমরা চাই জাবির এ পুরনো বিভাগ কোনোকিছুর সংকট থাকবে না। শিক্ষার্থীরা সবকিছুর সুবিধা ঠিকঠাক উপভোগ করবে। তাই আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, যতদ্রুত সম্ভব আমাদের ভবনের কাজ শুরু করতে হবে।”
গণিত শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি আবু রুম্মান বলেন, “চারটি বিভাগের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তার মধ্যে গণিত বিভাগ একটি। সেই সূচনালগ্ন থেকেই গণিত বিভাগ সফলতার সঙ্গে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। এতদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো আমরা ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকটে ভুগছি। ছোট ছোট কিছু রুমে আমাদের গড়ে ৮০/৯০ জন শিক্ষার্থীকে ক্লাস করতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “একটা ল্যাব পরীক্ষা শেষ করতে আমাদের ছয়-সাতদিন লেগে যায়। এত সমস্যার পরেও আমরা এতদিন চুপ ছিলাম। এখন আমাদের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু একটি মহল আমাদের গাছ কাটার দোহাই দিয়ে ভবনের কাজ আটকানোর চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসন বলতে চাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের ভবনের কাজ শুরু না হয়, আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকব।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী