কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের জেরে দেশটির সঙ্গে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি বাতিল করেছে পাকিস্তান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

দুই দেশের পরস্পরের সার্বভৌম ভূখণ্ডের প্রতি সম্মান করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে সিমলা চুক্তিতে। তা ছাড়া বিরোধ নিষ্পত্তিতে যুদ্ধ এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি রয়েছে তাতে। 

আরো পড়ুন:

বাণিজ্য-ভিসা-আকাশসীমা বন্ধসহ ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের একগুচ্ছ পদক্ষেপ

পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা: পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

পৃথিবীর ভূস্বর্গখ্যাত কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তান যার যার দখল অনুযায়ী সিমলা চুক্তির আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি বজায় রেখেছে তারা।

এখন পাকিস্তান সিমলা চুক্তি বাতিল করায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতির আশঙ্কা আরো জোরালো হলো। এতে করে বেড়েছে সামরিক উত্তেজনাও। 

ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের কাছে পারমাণবিক বোমা রয়েছে। যদিও তারা কখনো এর প্রয়োগ করেনি। চিরবেরী দেশ দুটি কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় মাঝেমাধ্যে সংঘাতে জড়ালেও সাম্প্রতিক ইতিহাসে কারগিল যুদ্ধ ছাড়া তাদের মধ্যে বড় কোনো যুদ্ধ হয়নি।

সিমলা চুক্তির প্রধান প্রধান বিষয়
১। অপরের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি: দুই দেশ তাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দেয়।

২। শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচার: চুক্তিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হবে; সশস্ত্র সংঘাতের মাধ্যমে নয়।

৩। নিয়ন্ত্রণের রেখা: এটি জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা চিহ্নিত করার জন্য একটি কাঠামো সৃষ্টি করে এবং সেই রেখা বরাবর একটি যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

৪। সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ: চুক্তিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।

সিমলা চুক্তি ভবিষ্যতের আলোচনার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে মনে করা হয়, যদিও বিভিন্ন সংঘাত ও কূটনৈতিক চাপে এর কার্যকারিতা চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল, যা বৃহস্পতিবার প্রমাণ হলো। 

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে; পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ তাদের সমর্থনকারীদের বিনাশ করার হুংকার দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। 

উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আরো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পানি আটকে দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছে তার মন্ত্রিসভা।

ফলে ভারত ও পাকিস্তান কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখে রয়েছে।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক ২ 

চট্টগ্রাম নগরীর লাভলেইন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে মিছিলটি বের করা হয়। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

মিছিল নিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা গেছে, মিছিলটি কোতোয়ালী থানার লাভ লেইন থেকে বের হয়ে নূর আহমদ সড়কের দিকে যায়। মিছিলে ১০ থেকে ১৫ জন অংশ নেন। ব্যানারে লেখা ছিল ‘শেখ হাসিনা ফোর্স’। তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু,’ ‘শেখ হাসিনা ফিরবে, রাজপথ কাঁপবে,’ ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই,’ এমন নানা স্লোগান দেন। এ সময় অন্তবর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তারা।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, ‘ভোরে লোকজনের চলাচল কম ছিল। দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এসময় তারা কয়েক মিনিটের ঝটিকা মিছিল করে পালিয়ে গেছে। পরে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ