যে কোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
Published: 24th, April 2025 GMT
যে কোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভা চত্বরে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটির আয়োজনে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান। এতে পঞ্চগড় অংশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদসহ জেলা উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সকাল ১০টার দিকে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি শুরু হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যের সময় পঞ্চগড় ছাড়াও দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ জেলা থেকে কর্মশালায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা সমাজের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে একসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে সামনে নিয়ে যেতে। কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার, মানুষের রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের রাজনৈতিক অধিকার এবং মানুষের ভোটের অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। সবকিছু বাধাগ্রস্ত হবে। বিগত ১৫ বছরে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এর ফলে দেশের বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সমাজে বিভিন্ন প্রকার অধঃপতন শুরু হয়েছে, অনাচার শুরু হয়েছিল।
তারেক রহমান বলেন, আমরা সুযোগ পেলে ৩১ দফার বাস্তবায়ন করব। একইভাবে আমরা যে সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলাম, বিগত পনেরো বছর ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে সংগ্রামে আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন, বহু নেতাকর্মী পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, তাদের এই বলিদানকে কোনোভাবে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। পৃথিবীর কোনো দেশে যুদ্ধ না হলে শিশু হত্যা হয় না, কিন্তু জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আমরা দেখেছি সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এই দেশে একশোর মতো শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই শিশুদের বলিদান ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন গণতন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথরেখা
আন্দোলনের রাজনীতি থেকে দল গঠন
১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দুবার এবং বিএনপি দুবার সরকার গঠন করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ দুই দল তাদের ক্ষমতার মেয়াদে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়নে লক্ষণীয়ভাবে কোনো কাজ করেনি;বরং তারা নিজেদের ক্ষমতাকে সংহত করা এবং বিজয়ীর জন্যই সব—এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি চিরস্থায়ী করার জন্য ব্যস্ত ছিল।
বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি।দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে জুলাই গণ–অভু৵ত্থানের পরে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির সরকার গঠন করার মতো সম্ভাবনাও অনেকে দেখছেন। সাধারণভাবে জনগণের মনোযোগ এদিকে নিবদ্ধ যে তারা উন্নততর গণতন্ত্রের চর্চাকারী হিসেবে ফিরে আসবে কি না। গণ–অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার ও গণতন্ত্রচর্চা নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেক বক্তব্য মানুষের মধ্যে সমাদৃত হয়েছিল। মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির ফলে ক্ষমতার যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সে জায়গা দখল করেছেন বিএনপির কর্মীরা। এই শূন্যতার সুযোগ নিয়ে বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ আছে। সাধারণ মানুষের এই অসন্তোষ বিএনপিকে আমলে নিতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস যে সংস্কারপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন, ছাত্ররা সেটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে তাঁরা এগিয়ে নিতে চান। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যেসব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তারা একটি নিজস্ব রাজনৈতিক ধারণা সামনে এনেছে। সেখানে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে শুরু করেছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিজেদের অগ্রণী ভূমিকার জন্য ছাত্ররা শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসতে না পারে, সে জন্য তাঁরা যৌক্তিকভাবেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। একটি নতুন, আরও ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা নিশ্চিত করতে তাঁরা সত্যিকারের সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে মানুষের আনন্দ–উল্লাস। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে সংসদ ভবন এলাকায়