সারা রাত খুঁটিতে ভর দিয়ে ছেলের লাশের অপেক্ষায় বাবা
Published: 24th, April 2025 GMT
করাতকলে (স মিল) সামান্য বেতনের চাকরি করে ছেলেকে প্রকৌশলী বানিয়েছেন। চাকরিও পেয়েছিলেন প্রকৌশলী ছেলে। বাবা জহুর আহমেদ (৬৫) স্বপ্ন দেখছিলেন সচ্ছলতার। কিন্তু ছেলেকে ঘিরে তাঁর সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। সুখ–স্বাচ্ছন্দ্যের সব আশা গুঁড়িয়ে দিয়ে এল আদরের ছেলে মো. সোলাইমানের লাশ।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি কারখানার প্রকৌশলী মো.
আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ভাটিয়ারীর উত্তর বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে দোকানের একটি খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে আছেন জহুর আহমেদ। সোলাইমানের লাশ তখনো আসেনি। জানালেন, ছেলেকে দেখে ঘরে ফিরবেন তিনি। বিষণ্ন মুখ, শূন্য দৃষ্টি। রাস্তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ছেলে আসবে। তাই দাঁড়িয়ে আছি।’ খবরটা শোনার পর থেকে সারা রাত সেখানেই ছিলেন জহুর আহমেদ।
পুলিশ জানিয়েছে, একই মালিকানাধীন কেএসআরএম ও রয়েল সিমেন্ট পাশাপাশি দুটি কারখানা। প্রকৌশলী সোলাইমান চাকরি করতেন রয়েল সিমেন্ট কারখানায়। কিন্তু কারখানাটির পাওয়ার প্ল্যান্ট ছিল কেএসআরএম কারখানার ভেতরে। ওই পাওয়ার প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তা মেরামত করতে যান সোলাইমান। কাজ শেষে তিনি কেএসআরএম কারখানার থেকে বের হয়ে নিজের কারখানায় ফিরে আসছিলেন। এ সময় রডবোঝাই একটি লরি পেছনের দিকে এসে তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালটির মর্গে রাখা হয়।
নিহত প্রকৌশলী সোলাইমানউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।