কেভিন ডি ব্রুইনির বয়স ৩৩ বছর। আরও দুই-তিন মৌসুম ইউরোপে খেলার স্বপ্ন তিনি দেখতেই পারেন। কিন্তু ইনজুরি প্রবণতার কারণে ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়তে হচ্ছে এই বেলজিয়াম তারকার। মৌসুম শেষে সিটিজেনদের সঙ্গে তার চুক্তি শেষ। ওই চুক্তি নবায়ন করবে না ম্যানসিটি বোর্ড।
ইতিহাদ ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া ওই ডি ব্রুইনিকে আগামী মৌসুমে দলে নিতে আগ্রহী অ্যাস্টন ভিলা। প্রিমিয়ার লিগে সেরা পাঁচে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা নিশ্চিত করার লড়াইয়ে আছে উনাই এমেরির অ্যাস্টন ভিলা। এরই মধ্যে ক্লাবটি নিজেদের মধ্যে ডি ব্রুইনিকে দলে ভেড়ানো সম্ভব কিনা এই আলোচনা করেছে।
ডি ব্রুইনিকে দলে নিতে আগ্রহী ইউরোপের আরও একটি ক্লাব। সেটি হলো ইতালির লিগ সিরি আ’র কোমো। চলতি মৌসুমে তারা রেলিগেশন থেকে শীর্ষ লিগে ফিরেছে। সাবেক স্পেন মিডফিল্ডার সেস ফ্যাবরেগাসের অধীনে দারুণ মৌসুম কাটাচ্ছে ক্লাবটি। ফ্যাবরেগাস তার দলে ব্রুইনিকে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
তবে অ্যাস্টন ভিলা ও কোমোয় গেলে ডি ব্রুইনি ম্যানসিটির সমপর্যায়ের বেতন পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠেয় ২০২৬ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে ডি ব্রুইনি ইউরোপে খেলতে চাইলে অপেক্ষাকৃত কম বেতনে অ্যাস্টন ভিলা ও কোমোর মতো দল বেছে নিতে পারেন বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডার।
এর আগে ডি ব্রুইনি বলেছিলেন, তিনি মনে করেন, তার এখনো ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবে খেলে যাওয়ার সামর্থ্য আছে। ম্যানসিটি তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করায় বিস্মিত হয়েছেন, স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি। মৌসুম শেষে ইউরোপে থাকা না হলে সৌদি প্রো লিগ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের এমএসএল লিগে দেখা যেতে পারে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ভ ন ড ব র ইন ফ টবল দলবদল অ য স টন ভ ল ব র ইন ক ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।