সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপু জামিন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আপিলের পাশাপাশি জামিনের আবেদন করেন টিপুর আইনজীবী খায়রুল বদিউজ্জামান। সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসুচি পালিত হয়। সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসুচি পালন করা হয়।
কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহম্মেদ আবু জাফর, দেশ টিভির শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, দীপ্ত টিভির রঘুনাথ খাঁ, আজকের পত্রিকার আবুল কাসেম, দৈনিক কালেরকণ্ঠের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন, ঢাকা প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার ইসরাফিল হোসেন, দৈনিক মানবজমিনের এসএম বিপ্লব হোসেন প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
র্যাবের নতুন মুখপাত্র ইন্তেখাব চৌধুরী
মাদক প্রতিবেদন: ফেনীর সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা
তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে ভবন তৈরির কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) তথ্য সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক টিপু। তথ্য চাওয়ায় উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মামুন হোসেনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো.
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা অবিলম্বে টিপুর মুক্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুন হোসেনসহ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
অবস্থান কর্মসুচি শেষে সাংবাদিকরা সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পালের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন শুনানি শেষে সাংবাদিক টিপুকে জামিন দেওয়া হয়।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।