চবির সমাবর্তন ১৪ মে, সনদে থাকছে উপাচার্যের হাতের সই
Published: 24th, April 2025 GMT
দীর্ঘ ৯ বছর পর আগামী ১৪ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পঞ্চম এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন ২২ হাজার ছয়শ’র বেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৮ হাজার সনদে নিজ হাতে সই করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার। বাকি শিক্ষার্থীরা সনদ উত্তোলন করেছেন। সমাবর্তন নিয়ে নানা সমালোচনার মধ্যেও উপাচার্যের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করছেন অনেকেই।
সমাবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
এদিকে সমাবর্তনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। গত কয়েকদিন ধরে উপাচার্যের কার্যালয়ের সভাকক্ষে গিয়ে দেখা যায় টেবিলে সারিবদ্ধ করে সাজানো সনদে একের পর সই করছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার। সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের হাতে মূলত স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সনদ তুলে দেওয়া হয়। এই সনদে উপাচার্যের সই থাকা প্রয়োজন। সাধারণত এই ধরনের আয়োজনে উপাচার্যের সইয়ের সিল ব্যবহার করা হয়। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উপাচার্য নিজ হাতে ১৮ হাজার সনদে সই করে সমাবর্তনের আয়োজনে যুক্ত করেছেন ভিন্ন মাত্রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নিজ হাতে সই করে একাডেমিক সন্তানদের কাছে নিজের স্মৃতি রাখতে চান বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন,
‘এটি স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবর্তন। সমাবর্তী ২৩ হাজার। মাত্র ১৮ হাজার সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। সিল বানিয়ে দেওয়া যেত। সেটা করিনি। সমাবর্তীরা এখানে ৫-৬ বছর পড়েছেন। তারা আমাদের একাডেমিক সন্তান। আমরা চাই, কষ্ট হলেও তাদের সনদে আমাদের হাতের ছোঁয়া থাক। সে জন্য স্বল্প সময়ে স্বাক্ষর করার জন্য এ পদ্ধতিতে কাজ করছি। আল্লাহ সহায় হবেন।’
এ বিষয়ে সমকালকে ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের কাছে সমাবর্তন একটি স্বপ্নের অনুষ্ঠান। তারা এই আয়োজনের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ৫৯ বছর হলেও সমাবর্তন হয়েছে মাত্র চারটি। ২০১১ সাল থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন পাননি। বিশাল এই সংখ্যক শিক্ষার্থীদের আয়োজন করতে প্রথমে হিমশিম হবে ভেবেছিলাম। তবুও বিশাল কর্মযজ্ঞে নেমেছি।
নিজ হাতে সই দেওয়ার প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমি চাইলে সিল বানিয়ে স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করতে পারতাম। সেটি দোষের কিছু না। কিন্তু আমার মনে হয়েছে আমার শিক্ষার্থীদের কাছে আমার একটি স্মৃতি থাকুক।
তিনি আরও বলেন, বাজার থেকে কৃত্রিম সোয়েটার আর আমার স্ত্রীর নিজ হাতে বোনা সোয়েটারে তো পার্থক্য আছে। প্রিয়জনের হাতে বোনা সোয়েটারে তাদের ভালোবাসা থাকে। তেমনি আমার হাতে দেওয়া স্বাক্ষর আমার শিক্ষার্থীদের কাছে ভালোবাসা।
উপাচার্য আরও বলেন, সমাবর্তনের আরও ২০ দিন বাকি আছে। এখন পর্যন্ত সই করেছি প্রায় সাড়ে তিন হাজার সনদ। শিক্ষার্থীদের জন্য অনন্য এক আয়োজন উপহার দিতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
চবির সমাবর্তনে আবেদনের সময় ছিল ১৫ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। এই সময়ে যারা সনদ উত্তোলন করেননি, তারা আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। তবে প্রথম দিকে মূল সনদ উত্তোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখা হলেও পরে সমালোচনার মুখে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মূল সনদ উত্তোলনকারী শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে নতুন করে আবেদনের সময় নির্ধারণ করা হয় ৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। এবার সমাবর্তনে অংশ নেবে ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা শিক্ষার্থীরা।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৪ সালে প্রথম সমাবর্তন, ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র হ জ র সনদ আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিনকে এবার থামতে বললেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের উপর বুধবার রাতে রুশ হামলায় ‘খুশি নন।’ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে এ কথা বলেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প লিখেছেন, “ভ্লাদিমির, থামো... শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করা যাক।”
রাশিয়ার সর্বশেষ আক্রমণটি গত বছরের ৮ জুলাইয়ের পর থেকে ইউক্রেনের রাজধানীতে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে।
রাশিয়া শান্তিচুক্তির শর্ত হিসেবে ক্রিমিয়ার ওপর মস্কোর নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দিতে ইউক্রেনের প্রতি দাবি জানিয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ক্রিমিয়ার উপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি না দিয়ে শান্তি আলোচনার ক্ষতি করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
ট্রাম্প লিখেছেন, “তিনি (জেলেনস্কি) শান্তিতে থাকতে পারেন অথবা পুরো দেশ হারানোর আগে আরো তিন বছর লড়াই করতে পারেন। জেলেনস্কি হলেন এমন ব্যক্তি যারা খেলার জন্য কোনো তাস নেই।”
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাতারাতি মারাত্মক হামলাগুলো ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ