সাদেক হোসেন খোকা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে আমেরিকার মতো নির্বাচনের আগে প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট হওয়া দরকার। যেন প্রার্থীদের যুক্তিতর্ক শুনে মানুষ কাকে ভোট দেবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বৃহস্পতিবার সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিন দিনব্যাপী আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ব্রাদার ড.

লিও জেমস পেরেরা সিএসসি।

ইশরাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণ প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছে। তারাই দেশের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। আমাদের ট্যালেন্ট খুঁজে বের করতে হবে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনী সাধনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। 

তিনি বলেন, আশা করি, আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারব। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর সমৃদ্ধশালী একটি দেশ। যুক্তিতর্ক করে পলিসি নির্ধারণ হবে। কোনো হানাহানি থাকবে না। শিক্ষার্থীদের আর যেন রাস্তায় নামতে না হয়, সে দিকে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরিবর্তী সময়ে পরিস্থিতিতে তরুণ প্রজন্মের ওপর দেশবাসীর আশা ভরসার জায়গা আরও বেশি তৈরি হয়েছে। কোনো অপশক্তি যেন জুলাই বিপ্লবকে ভূলুণ্ঠিত করতে না পারে সে জন্য নবীন ও প্রবীণ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জুলাই বিপ্লবে শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, তরুণরা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হবে। এই ব্যর্থতার দায় রাজনৈতিক শক্তিগুলো এড়াতে পারবে না।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যারা ভবিষ্যৎ সরকার পরিচালনায় আসবেন তাদের অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পথ নকশা তৈরি করা উচিত।

সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এ কলেজের উপাধ্যক্ষ ব্রাদার নিপু হিউবার্ট রোজারিও সিএসসি, যোসেফাইট ডিবেটিং ক্লাবের চিফ মডারেটর ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন করিব প্রমুখ। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এবারের উৎসবে ৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪৮ বিতর্ক দল অংশ নিয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে

আবু জামিল মো. সেলিম। ইংরেজির প্রভাষক। তাঁর বেতন স্কেল ২২ হাজার টাকা। ঈদে বোনাস পান ৫ হাজার ৫০০ টাকা। রাজধানীর শ্যামপুরের এ কে হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করেন তিনি।
তাঁর মতো লাখো এমপিওভুক্ত শিক্ষক প্রতি ঈদে মূল বেতনের এক-চতুর্থাংশ অর্থ উৎসব ভাতা পান। শিক্ষকরা লজ্জায় স্বল্প বোনাস পাওয়ার কথা কাউকে বলতে পারেন না। তারা জানান, একে তো নামমাত্র বোনাস, তাও পেতে অনেক সময় ঈদ পার হয়ে যায়।

রাজধানীর মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী (দপ্তরি) সুলতান আহমেদ। তাঁর বেতন স্কেল ৮ হাজার ৫০০ টাকা। তিনি ঈদে বোনাস পান ৪ হাজার ২০০ টাকা। এই কর্মচারী বলেন, ‘দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার নিয়ে এই টাকায় কীভাবে উৎসব করা সম্ভব?’

সারাদেশের পৌনে পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য রয়েছে সুখবর। তাদের উৎসব ভাতা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ঈদুল আজহার আগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য মিলেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী সমকালকে বলেন, উৎসব ভাতা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কতটুকু বাড়বে, সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব না।

কবে নাগাদ উৎসব ভাতা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি চলতি মাসের (এপ্রিল) মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করার। চলতি মাসে না হলে আগামী মাসের প্রথমার্ধে প্রজ্ঞাপন হতে পারে।’
জানা যায়, আগে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পেতেন না। ২০০৩ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বছরের অক্টোবর থেকে তা কার্যকর হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয়, শিক্ষকদের দেওয়া হবে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ। দুই ঈদে (অথবা পূজায়) ২৫ শতাংশ করে ভাগ করে তা দেওয়া হবে। সেই থেকে প্রতি ঈদে শিক্ষকরা ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। কর্মচারীদের জন্য ওই সভায় শতভাগ বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দুই ঈদে ৫০ শতাংশ করে তা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষকরা জানান, ’৯৬ সাল পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মূল বেতনের ৮০ ভাগ সরকার থেকে দেওয়া হতো। আওয়ামী লীগ সরকার তা ৯০ শতাংশে উন্নীত করে। ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকার ৯৫ শতাংশ করে। পরের বাজেটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তা শতভাগে নিয়ে যায়। দেখা গেছে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন স্কেল ধাপে ধাপে শতভাগে উন্নীত হলেও উৎসব ভাতা বাড়েনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছরের ৫ মার্চ উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেওয়ার আগে শিক্ষকদের উৎসব, বিনোদন, বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ানোর একটি প্রস্তাবে সই করেন। এরপর এ নিয়ে কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখা থেকে জানায়, গত ঈদুল ফিতরে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলে প্রায় ২৪০ কোটি টাকার উৎসব ভাতা দেওয়া হয়। এর মধ্যে শুধু স্কুল ও কলেজ ২০ হাজার ৫৬৭টি। এর সঙ্গে মার্চ/২০২৫ মাসের বেতন হিসেবে দেওয়া হয় ৮৮৩ কোটি ৫১ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা। 
জানা গেছে, ঈদ বোনাস বর্তমানের চেয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ আর কর্মচারীরা ৭৫ শতাংশ বোনাস পেতে পারেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুঁইয়া সমকালকে বলেন, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক চাইলে সরকারকে অবশ্যই শতভাগ উৎসব ভাতা দিতে হবে। শিক্ষকদের বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ কারণে আমাদের মূল দাবি, শিক্ষা জাতীয়করণ।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মস্কোতে ঢাকার ‘মাস্তুল’ সিনেমার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার
  • মস্কোতে বাংলাদেশের ‘মাস্তুল’–এর বিশ্ব প্রিমিয়ার
  • সহজ-সরল পাত্রী, বিয়ে করতে এসে পাত্র দেখলেন উল্টো চিত্র
  • পাত্রী সহজ সরল ও কম কথা বলে, বিয়ে করতে এসে পাত্র দেখলেন উল্টোচিত্র
  • পানি বর্ষণ উৎসবের মাধ্যমে শনিবার শেষ হতে চলেছে সাংগ্রাইং উৎসব
  • আর্সেনালের ড্র, শিরোপা উৎসবের অপেক্ষায় লিভারপুল
  • লোকনৃত্য, দেব আরাধনে শুরু লাই-হরাউবা
  • অষ্টগ্রামের বিস্তীর্ণ হাওরের বুকে ধান কাটার উৎসব
  • এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে