ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন কাশ্মীরি নিহত হওয়ার দুই দিন পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, “ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসী এবং তাদের সমর্থকদের চিহ্নিত করবে, তাদের খুঁজে বের করবে এবং অকল্পনীয় শাস্তি দেবে।”

আজ বৃহস্পতিবার বিহারের মধুবনী জেলায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এই হুশিঁয়ারি উচ্চারণ করেন। খবর এনডিটিভির। 

মোদি বলেন, “স্পষ্ট শব্দে বলে দিতে চাই, যে এই হামলা চালিয়েছে, ওই জঙ্গিদের ও ষড়যন্ত্রকারীদের এমন সাজা দেওয়া হবে, যা ধারণার বাইরে। সাজা হবেই।” 

আরো পড়ুন:

কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ভারতীয় সেনা নিহত

ভারতের কঠোর পদক্ষেপ, জবাব দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান

এদিন মধুবনীতে সভা শুরুর আগে পহেলগাঁওতে নিহতদের স্মরণে ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

এরপর মোদি বলেন, “কোটি কোটি দেশবাসী আজ শোকাহত। পহেলগাঁওতে নিরীহদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। নিহতদের পরিবারের পাশে গোটা দেশ। সরকার আহতদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা করছে। কেউ সন্তান হারিয়েছেন, কেউ ভাই, কেউ আবার জীবনসঙ্গীকে হারিয়েছেন। তাদের কেউ বাংলা বলত, কেউ কান্নাড়া, কেউ মারাঠা। কার্গিল থেকে কন্যাকুমারী সকলে ক্ষোভে ফুঁসছে। এই আক্রমণ কেবল নিরস্ত্র পর্যটকদের উপরই ঘটেনি। দেশের শত্রুরা ভারতের আত্মাকে আক্রমণ করার সাহস করেছে।” 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “সন্ত্রাসবাদীদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। ১৪০ কোটি ভারতীয়র ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জঙ্গিদের কোমর ভাঙব। সন্ত্রাসবাদীদের ধ্বংস করে ছাড়বে ভারত। বিহারের মাটি থেকে গোটা বিশ্বকে বলছি, ভারত জঙ্গিদের খুঁজে বের করে প্রত্যেককে সাজা দেবে। সন্ত্রাসবাদে ইতি টানবে ভারত। যারা মানবতায় বিশ্বাস করেন, তারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমি সেই সমস্ত দেশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাদের এই বিপদে সমর্থন করেছেন।”

এর আগে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সুরক্ষা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকের পরে নয়াদিল্লি জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে অবিলম্বে স্থগিত করা হচ্ছে সিন্ধু পানিচুক্তি। যতদিন না পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে লাগাম টানবে, ততদিন সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত থাকবে বলে ভারত সরকারে তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়।

সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার পাশাপাশি ওয়াঘার আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার।

পাকিস্তানিদের ভারতে আসা বন্ধ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। একইসঙ্গে পাকিস্তানিদের জন্য সব সার্ক ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আগে ইস্যু করা সার্ক ভিসার মাধ্যমে যে পাকিস্তানিরা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনে প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে ভারত। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাশ্মিরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই পর্যটক। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)।

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন টিআরএফ।

এদিকে, কাশ্মিরের হামলার ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে নিজেদের অবস্থান মঙ্গলবারই স্পষ্ট করে পাকিস্তান। কিন্তু তারপরও ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় ইসলামাবাদ পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ‘ভারতীয় কর্মকাণ্ডের জবাব দিতে’ আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনসিসি) সভা ডেকেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক ষ প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই উপদেষ্টার এপিএস ও পিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে নামছে দুদক

দুর্নীতির অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও)
ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন।
      
তিনি বলেন, তাদের দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে যে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে আইন অনুযায়ী সেটি কমিশনের যাচাই-বাছাই সেল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রকাশ্য অনুসন্ধান শুরু হবে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জমা হলেও একই সেল সেটি খতিয়ে দেখার পর একই প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান শুরু হবে। দুর্নীতির আমলযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

জানা গেছে, গত ২২ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২২ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও উপদেষ্টা তাকে অব্যহতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন গত ৮ এপ্রিল। চলতি বছরের গত ১৪ আগস্ট মোয়াজ্জেম হোসেনকে এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। 

এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) (ছাত্র প্রতিনিধি) তুহিন ফারাবিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ