যে কারণে কিছুক্ষণ পরপর আপনি ফোন চেক করেন, জানলে অবাক হবেন
Published: 24th, April 2025 GMT
অ্যাটেনশন ইকোনমি কী
হাতের মুঠোয় এখন অসীম তথ্য। সবাই চায় আপনার মনোযোগের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে। তাই আপনি স্মার্টফোনে যা কিছু দেখেন, সবকিছুই এমনভাবে সাজানো, যা আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে বাধ্য। কেননা এখানে আপনি যা কিছু দেখছেন, লাইক বা মন্তব্য করছেন, যত প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন, এর মাধ্যমে কেউ না কেউ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এখানে আপনার সময়, মনোযোগ হলো মূল্যবান সম্পদ।
আপনার মতো এ রকম কোটি কোটি মানুষের সময় আর মনোযোগের বিনিময়ে অনলাইনে চলছে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা। আর এটিকেই বলা হচ্ছে অ্যাটেনশন ইকোনমি, যেখানে সবাই আপনার মনোযোগ আকর্ষণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে ব্যস্ত। ঠিক এ কারণেই আপনি কিছুক্ষণ পরপর ফোন চেক না করে পারেন না।
একবিংশ শতকের এই ডিজিটাল যুগে আপনি যে স্ট্রিমিং সার্ভিস, রিলস, ভিডিও, অডিও বা বিজ্ঞাপন—যা-ই দেখেন বা শোনেন না কেন, এ সবই এমনভাবে ডিজাইন করা, যাতে এসব আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করে আর তার মাধ্যমে অন্যরা ব্যবসা করেন।
আরও পড়ুনঘুমানোর সময় মুঠোফোন কোথায় রাখবেন০৩ মার্চ ২০২৩মনোযোগ অর্থনীতির মূল কথাইন্টারনেট অসীম তথ্য আর বিজ্ঞাপনে ভরপুর। কিন্তু আপনার সময় ও মনোযোগ সীমিত। তাই সবচেয়ে কম সময়ে আপনি যাতে সবচেয়ে বেশি তথ্য ও সেবা ভোগ করতে পারেন, তার প্রতিযোগিতা চলছে তো চলছেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন সাইটের অ্যালগরিদম আপনার সর্বোচ্চ সময় মনোযোগ ধরে রাখতে সারাক্ষণ বিভিন্নভাবে কাজ করে চলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এবং আপনার জন্য পারসোনালাইজড কনটেন্ট তৈরি করে সামনে এনে চলছে ‘সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশন’। আপনি কোন ধরনের কনটেন্ট উপভোগ করেন, তা ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করে আপনাকে বেশি বেশি সে ধরনের কনটেন্টই দেখানো হচ্ছে। যাতে আপনার মনোযোগ পর্দা থেকে না সরে।
আরও পড়ুনমুঠোফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেও যেভাবে ভালো থাকবেন২৯ মার্চ ২০২৩মনে রাখবেনঅপনার মনোযোগ ব্যবহার করে অন্যের ব্যবসা চলছে। অন্যরা জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে অর্থ উপার্জন করছেন। আপনার মনোযোগ, সময়, এমনকি আপনি নিজেও এভাবে নিজের অজান্তেই একসময় পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষ অর্থ উপার্জন করলেও আপনার স্বাভাবিক পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবন থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য—সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অনিয়ন্ত্রিত স্ক্রলিংয়ের শেষ কোথায় কে জানে! তাই আপনি নিয়ন্ত্রিত হওয়ার আগেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
সূত্র: মিডিয়াম
আরও পড়ুনসকালে উঠেই মুঠোফোন দেখেন? জেনে নিন আপনার ব্যক্তিত্বের ধরন২৫ নভেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন র স ব যবহ ই আপন র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, ১৮ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ পেল পাঁচ গ্রামের মানুষ, ভোগান্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামে টানা ১৮ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ এসেছে। গতকাল সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে সরাইল সরকারি কলেজ–সংলগ্ন ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে যায়। এতে সরাইল সরকারি কলেজ, নাথপাড়া, দত্তপাড়া, সূত্রধরপাড়া, কর্মকারপাড়া ও ঘোষপাড়া বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। পরে ওই পাঁচ গ্রামে বিদ্যুৎ আসে গতকাল রাত সাড়ে ১১ টায়।
কালীকচ্ছ ইউনিয়নের নাথপাড়া, দত্তপাড়া, সূত্রধরপাড়া, কর্মকারপাড়া ও ঘোষপাড়া গ্রাম পাঁচটি পাশাপাশি অবস্থিত। আবার এই গ্রামগুলো সরাইল সদর ইউনিয়নঘেঁষা। এই পাঁচ গ্রামে পড়েছে স্থানীয় সরকারি কলেজ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে এখানে জনবসতি ছিল কম। প্রায় ৩০ বছর আগে এই নিরিবিলি এলাকার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল মাত্র একটি ট্রান্সফরমার। বর্তমানে এই পাঁচ গ্রামের লোকসংখ্যা বেড়েছে। ছোট ছোট শিল্পকারখানাও গড়ে উঠেছে। ফলে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। তাই ৩০ বছরের পুরোনো ট্রান্সফরমারটি বাড়তি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। কয়েক দিন পরপর এটি বিকল হয়ে পড়ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ট্রান্সফরমার একবার বিকল হলে তা মেরামত করতে দু-তিন দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আবার চাঁদা তুলে টাকাও দিতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
গতকাল ভোর থেকে বিদ্যুৎহীন হওয়ার পর ভোগান্তিতে পড়েন পাঁচ গ্রামের মানুষ। নাথপাড়ার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আ ফ ম দেলোয়ার পাভেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকার ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে পড়ে। কয়েক দিন পরপর এমনটি হয়ে আসছে। এলাকাবাসী চাঁদা তুলে মেরামতের পর আমরা বিদ্যুৎ পাই। একবার ট্রান্সফরমার বিকল হলে দু-তিন দিন অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় ভোগান্তির সীমা থাকে না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
সূত্রধরপাড়ার বাসিন্দা দুলাল সূত্রধর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খুব বিপদের মধ্যে আছি। এখানে বিদ্যুৎ গেলে আর আসে না। আমাদের পাড়ার ওপর দিয়ে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। ছয় মাস ধরে বসতবাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের পানিতে একটি তার ঝুলে আছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলছি, কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছি না।’
ঘোষপাড়ার বাসিন্দা স্থানীয় সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল বলেন, ‘এখানে কয়েক দিন পরপর বিদ্যুৎ–সংকট দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) সরাইল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে বজ্রপাতে ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে পড়েছিল। এটি প্রতিস্থাপন করতে সময় লেগেছে। এ জন্য এমনটি হয়েছে। ওই পাঁচ গ্রামের জন্য আরেকটি ট্রান্সফরমার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।