পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) গতকাল মুলতান সুলতানসের ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমেছিল ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। তাদের ইনিংসে দশম ওভারে বোলিং করতে আসেন অফ স্পিনার ইফতিখার আহমেদ। জোরের সঙ্গে করা ইয়র্কার লেংথের তৃতীয় বলটি ঠেকিয়ে ইউনাইটেডের ব্যাটসম্যান কলিন মানরো আম্পায়ারের দিকে হাতের ইশারায় একটি ইঙ্গিত করেন।

ডান হাত দিয়ে বল ছোড়ার ভঙ্গিতে নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের সাবেক এই ব্যাটসম্যান বুঝিয়ে দেন, ইফতিখার ‘ঢিল’ মারছেন। মানে অবৈধ অ্যাকশনে বোলিং করছেন মুলতানের এই বোলার। তারপরই ঝামেলার শুরু!

আরও পড়ুনযে চাকরিতে ভালো না করলেও বেতন বাড়ে১ ঘণ্টা আগে

না, বড়সড় কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে কিছুক্ষণের জন্য থেমেছিল খেলা। মানরো কিছু একটা বলতে বলতে বারবার হাত ভেঙে বল ছোড়ার ভঙ্গি করে ইফতিখারকে বুঝিয়ে দেন তিনি ‘ঢিল’ মারছেন। ইফতিখার স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটা ভালোভাবে নেননি।

মানরোকে কিছু একটা বলে লেগ আম্পায়ারের দিকে একটু চিৎকার করতে করতেই এগিয়ে যান ইফতিখার। তিনি যখন আম্পায়ারের সঙ্গে যুক্তিতর্কে ব্যস্ত, মুলতান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান মানরোর দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেন। দুজন একে অপরের দিকে আঙুল তুলে কথাও বলেন। মুলতানের আরও কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে এ সময় কথা-কাটাকাটি হয় মানরোর। এরপর তিনি নিজের ক্রিজে গিয়ে দাঁড়ান।

আরও পড়ুনআরভিনদের আশীর্বাদ মুজারাবানি১২ ঘণ্টা আগে

ইফতিখার সেই ওভার শেষ করে ১২তম ওভারেও বোলিং করেন। ২ ওভারে ২০ রানে উইকেট না পাওয়া এই স্পিন অলরাউন্ডারকে আর বোলিংয়ে আনেননি মুলতান অধিনায়ক রিজওয়ান। আম্পায়ার তাঁর বোলিংয়ে অ্যাকশনের কারণে ‘নো’ ধরেননি। তবে ইফতিখারের দ্বিতীয় ওভার পর্যন্ত ক্রিজে থাকতে পারেননি মানরো। ১১তম ওভারে স্বদেশি মাইকেল ব্রেসওয়েলকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ইফতিখারকে ক্যাচ দেন ২৮ বলে ৪৫ করা মানরো। ক্যাচটি নিয়ে কোনো উদ্‌যাপন করেননি ইফতিখার। তবে তাঁর চোখেমুখে বিরক্তির স্পষ্ট ছাপ ছিল।

ম্যাচ শেষে দুই দলের অধিনায়ক এ ঘটনা নিয়ে কিছু বলেননি। তবে শেষ হাসি হেসেছেন মানরোরাই। ১৭ বল হাতে রেখে মুলতানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ইউনাইটেড।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম প য় র ইফত খ র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর

পিএসএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে তিনটি–তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। তাঁর দারুণ বোলিং লাহোর কালান্দার্সকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আজও ২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। তবে ছিলেন বেশ খরুচে; ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।

অবশ্য শুধু রিশাদ কেন, রান উৎসবের ম্যাচে বেশিরভাগ বোলারই আজ কঠিন সময় পার করেছেন। তবে ম্যাচ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে মুলতান সুলতানস। রিশাদের লাহোরকে তারা হারিয়েছে ৩৩ রানে।

এবারের পিএসএলে নিজেদের মাঠ মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এটিই মুলতানের প্রথম ম্যাচ। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ হারা দলটি এ রাতেই পেল প্রথম জয়।

ওপেনার ইয়াসির খানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে (৬টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ বলে ৮৭) ২২৮ রানের পাহাড় গড়েছিল মুলতান। জবাবে লাহোর ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৫  রানে থামে। ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লাহোরকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন উবাইদ শাহ। মুলতানের পেসার উবাইদের আরেক পরিচয় পাকিস্তান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহর ছোট ভাই।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৯ রান তুলে ফেলেছিল মুলতান, যা এবারের পিএসএলে পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সর্বোচ্চ। সপ্তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন রিশাদ, দেন ১০ ওভার। ১২তম ওভারে আবার বোলিংয়ে ফিরে দেন ১২ রান।

তবে নিজের শেষ দুই ওভারে ২ উইকেট নেন রিশাদ। এই দুই ওভারে আরও ২৩ রান দিলেও আউট করেন উসমান খান আর অ্যাস্টন টার্নারকে। এরপরও মুলতানের রানের লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি আজ দেদারসে রান বিলিয়েছেন। শেষ দিকে ইফতিখার আহমেদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২২৮ রান করে ফেলে স্বাগতিকেরা।

কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও ফখর জামানের উইকেট হারায় লাহোর কালান্দার্স। দলীয় ৮৭ রানের মধ্যে হারায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে।

এরপরেই ব্যাটিংয়ে নামেন রিশাদ। আগের দুই ম্যাচে আটে ও সাতে নামা এই অলরাউন্ডার আজ আরও এক ধাপ ওপরে উঠে এসে ব্যাট করলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ২ বলে ২ রান করে লেগ স্পিনার উসামা মিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন।

তবু লাহোরের জয়ের কিঞ্চিৎ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্যাম বিলিংস ও সিকান্দার রাজা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিং শুধু লাহোরের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রিশাদদের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার বাবর আজমের পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মুলতান সুলতানস: ২০ ওভারে ২২৮/৫ (ইয়াসির ৮৭, ইফতিখার ৪০*, উসমান ৩৯, রিজওয়ান ৩২; রিশাদ ২/৪৫, রাজা ১/১৫, আসিফ ১/২৬, আফ্রিদি ১/৪৩)।

লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ১৯৫/৯ (রাজা ৫০*, বিলিংস ৪৩, ফখর ৩২; উবাইদ ৩/৩৭, ব্রেসওয়েল ২/২০, উসামা ২/২৬)।

ফল: মুলতান সুলতানস ৩৩ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসির খান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন কোচ তাহলে পেয়ে গেছে পাকিস্তান, জানা গেল নাম
  • দুই উইকেট নিয়ে সবার উপরে রিশাদ
  • এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর