Samakal:
2025-04-24@10:39:38 GMT

বিশৃঙ্খলায় জেরবার বিসিবি

Published: 24th, April 2025 GMT

বিশৃঙ্খলায় জেরবার বিসিবি

আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের পদত্যাগ, টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনির পদত্যাগ, দেবব্রত পালের সঙ্গে অন্য ম্যাচ রেফারিদের বিবাদে জড়িয়ে পড়ার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। সেটি হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়কে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া। 

লিগের একাদশ রাউন্ডে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে হৃদয় এলিট আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে বাজে আচরণ করে নিষেধাজ্ঞায় পড়েন। সংবাদ সম্মেলনে এসে দেশের আম্পায়ারদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা ছাড়াও মুখ খোলার প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। মাঠে এবং মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভেঙে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞায় পড়েন হৃদয়। মোহামেডানের আবেদনের পরও বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটি শাস্তি কমায়নি। অথচ সবার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আম্পায়ার্স বিভাগ শাস্তি স্থগিত করে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়। 

এর প্রতিবাদে টেকনিক্যাল কমিটির প্রধানের পদ ছাড়েন মনি, দুদিন আগে বিসিবির চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন আম্পায়ার সৈকত। ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পালের সঙ্গে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে লিখিত চিঠি দিয়েছেন বাকি ম্যাচ রেফারিরা। সেদিক থেকে বলা যায়, বিসিবিতে চলছে বিশৃঙ্খলা।

বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানান, হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যু নিয়ে টিভি টকশোতে নিজের মতামত দেন দেবব্রত পাল। যেটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি রাহুলের বিরুদ্ধে গেছে। এতে করে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ১৯ এপ্রিল ম্যাচ রেফারিদের নিয়ে মিটিং করেন ইফতেখার মিঠু। সেখানে আপত্তিকর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে বলে জানান আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘দেবব্রত পাল ম্যাচ রেফারি হয়েও আরেক ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে মিডিয়াতে কথা বলে নিয়ম ভেঙেছে। সে (দেবব্রত) মিটিংয়ের শৃঙ্খলা মানছিল না। মিটিং শেষে তো বাগ্‌বিতণ্ডা হাতাহাতিতে গড়ায়।’

দেবব্রত পালকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ঢাকায় মিডিয়ার কাছে অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো বলেছেন, রাহুল কর্তৃক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যেই ইস্যু নিয়ে এত ঘটনা, সেই হৃদয়ের শাস্তি দুই ম্যাচ বহাল রাখা হবে বলে জানান মিঠু। এই লিগে না পরের মৌসুমে এটি কার্যকর হবে, তা পরিষ্কার করেননি। তিনি বলেন, ‘মোহামেডানের একটা চাপ ছিল শাস্তি কমানোর। এ কারণে সাময়িকভাবে করা হয়েছে।’ 

মোহামেডানের চাপ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বিসিবি পরিচালক ও মোহামেডানের কর্মকর্তা মাহাবুবুল আনাম বলেন, ‘কেউ বলতে পারবে না আমি হৃদয়ের শাস্তি কমাতে বলেছি। মোহামেডান ভুল স্বীকার করে শাস্তি কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে। সিদ্ধান্ত যা হয়েছে, তা আম্পায়ার্স বিভাগ নিয়েছে।’ 

ম্যাচ অফিসিয়ালদের একজন জানান, ইফতেখার মিঠু টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান মনিকে বলেছিলেন, বোর্ড পরিচালকরা মিটিং করে হৃদয়ের শাস্তি কমানো হয়েছে। এ কথা শোনার পর মনি টেকনিক্যাল কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম প য় র স কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

নোমানী হত্যার আসামিকে কোপানোর দৃশ্য ভাইরাল, জড়িতরা অধরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (৪০) গুলি ও ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে নগরের পঞ্চবটী এলাকার খড়বোনার গাড়োয়ানপাড়ায় এ হামলা করা হয়। পরে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রবি বাড়ির পাশে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ফেলে। তখনই গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর এক ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে থাকেন। দৌড়াতে গিয়ে রবি হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। তখন ফের ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপানো হয়। একপর্যায়ে একজন হামলাকারী কাছ থেকে তার পায়ে গুলি করেন। হামলার সময় কাতরাতে কাতরাতে রবি বলছিলেন, ‘‘ও বাপ, ও মা, আমি কী করেছি?’’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই নারী এগিয়ে আসার চেষ্টা করলেও গুলির শব্দ শুনে সরে যান। আশপাশ থেকে নারীদের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল।

আহত রবিকে স্থানীয়রা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পরে তাকে ভর্তি করা হয় ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। রাতেই অস্ত্রোপচার শুরু হলেও অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দ্রুত তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

শিবিরনেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামিকে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম

ফেনীতে বিএনপি কর্মীকে হত্যায় গ্রেপ্তার ৫ 

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, রবির এক পায়ে গুলি লেগেছে। তার অন্য পা ও দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। অস্ত্রোপচার শুরু হলেও পরিবারের ইচ্ছায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

আহত রবির বাড়ি নগরের বিনোদপুর-মীর্জাপুর এলাকায়। তার বাবার নাম আজিজুল ইসলাম। রবি আওয়ামী লীগের কর্মী। তার ভাই শহিদুল ইসলাম শহিদ নগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনিও নোমানী হত্যা মামলার আসামি।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, রবির বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে শিবির নেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তার নাম রয়েছে। হামলার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত জড়িতদের শনাক্ত বা আটক করা যায়নি।

তিনি আরো জানান, হামলার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা ফিরে এসে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর বাজারে ছাত্রশিবির, ছাত্রলীগ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানী। এই মামলার অন্যতম আসামি রবি গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

রবির ভাই শহিদুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জে জনতার হাতে আটক হন এবং পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হন শহিদুল ইসলাম। সেদিন কয়েকজন যুবক তার দুই পায়ের রগ কেটে দেন। হামলায় আহত হন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ও মির্জাপুর নাজমুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইনুল হোসেন এবং যুবলীগ নেতা রুহুল আমিন।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ