যুক্তরাষ্ট্রে ২০ বছর আগে নৃশংস হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
Published: 24th, April 2025 GMT
২০ বছরের বেশি সময় আগে এক তরুণী মাকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি ছিল চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১৩তম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা।
টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন এক বিবৃতিতে বলেন, মোয়েসেস স্যান্ডোভাল মেনডোজা নামের এই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হান্টসভিল শহরের কারাগারে কার্যকর করা হয়।
২০০৪ সালের মার্চে ২০ বছর বয়সী র্যাচেল ও’নিল টোলেসনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন মেনডোজা।
আদালতের নথি অনুযায়ী, টোলেসনের ওপর যৌন নির্যাতন চালান মেনডোজা। পরে তাঁকে হত্যা করেন। এরপর তাঁর লাশ একটি পরিখায় নিয়ে আগুন দেন। ঘটনার কয়েক দিন পর টোলেসনের দেহাবশেষ উদ্ঘাটিত হয়।
টোলেসন পাঁচ মাস বয়সী এক সন্তানের মা ছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকে তিনি মেনডোজাকে চিনতেন।
টোলেসনকে হত্যার দায় স্বীকার করেন মেনডোজা। তবে তিনি তাঁর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ডের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তা নামঞ্জুর হয়।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে শেষ বিবৃতিতে টোলেসনের প্রিয়জনদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মেনডোজা। টেক্সাসের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে মেনডোজা বলেছেন, ‘এভেরি (টোলেসনের সন্তান),.
এর আগে গতকালই যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মেনডোজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ঠেকাতে তাঁর করা আপিল খারিজ করে দেন।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ফায়ারিং স্কোয়াডে। আর বাকি দুজনের মৃত্যুদণ্ড নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে কার্যকর করা হয়েছে। নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতিকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক বলে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ২৩টিতে মৃত্যুদণ্ড রহিত করা হয়েছে। তিনটি অঙ্গরাজ্য—ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন ও পেনসিলভানিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই তিনি নিকৃষ্টতম অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা
সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।
গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।
গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’
হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।
সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।
আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।
সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিবযেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।
দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।
সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী