দেশের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান দেবে সরকার। এ আবেদনের শেষ সময় আগামীকাল শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল। বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের জন্য আবেদন করতে হবে অনলাইনে। হার্ডকপিতে কোনো আবেদন নেওয়া হবে না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সময়সীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের পরিচালন বাজেট হতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বিশেষ বরাদ্দ প্রদানের নিমিত্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণের সময় অনিবার্য কারনবশত: আগামী ২৫/৪/২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। ইতোপূর্বে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব দুর্ঘটনা ও চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান দেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী, অসহায়, অস্বচ্ছল ও মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনুদান পেতে অগ্রাধিকার পাবেন।

শর্তাবলিগুলো হলো—

*দেশের সরকারি/বেসরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সংযুক্ত/স্বতন্ত্র (অনুদানপ্রাপ্ত/অনুদানবিহীন) ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত/এমপিওভুক্ত সরকারি/বেসরকারি কারিগরি/মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ার নিমিত্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ এবং পাঠাগারের উন্নয়নকাজের জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অস্বচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথচ প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান ভালো—এ রূপ প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।

*দেশের সব সরকারি/বেসরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সংযুক্ত/স্বতন্ত্র (অনুদানপ্রাপ্ত/অনুদানবিহীন) ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত/এমপিওভুক্ত সরকারি/বেসরকারি কারিগরি/মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাঁদের জটিল ও ব্যয়বহুল রোগ এবং দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবেন।

ইন্দোনেশিয়ার আইপিএস বৃত্তি, সুযোগ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতেসবচেয়ে বেশি বই পড়েন মার্কিনরা, বাংলাদেশিদের অবস্থান কততম

*সরকারি/বেসরকারি কারিগরি/মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীগণ জটিল ও ব্যয়বহুল রোগ, দুর্ঘটনা এবং শিক্ষার ব্যয় নির্বাহের জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবেন। তবে এ বিশেষ মঞ্জুরি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, দরিদ্র মেধাবী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।

*মঞ্জুরি করা অনুদান প্রাপ্তির লক্ষ্যে আগ্রহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ১ মার্চ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও শিক্ষক-কর্মচারী অনুদানের আবেদন ফরম বাটনে ক্লিক করে থেকে অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর আর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে আইটি প্রশিক্ষণে নতুন বিজ্ঞপ্তি, ২ লাখ টাকার কোর্স শেষে কর্মসংস্থান, যাদের সুযোগ১৬ মার্চ ২০২৫

*সরকারি-বেসরকারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী/শিক্ষার্থীদের অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে নীতিমালায় (নীতিমালাটি ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে) উল্লেখিত সুনির্দিষ্ট কারণসহ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষক-কর্মচারী/শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রমাণপত্র অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে (প্রত্যয়নের নমুনা অনলাইনে দেওয়া থাকবে)।

*শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা অর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব নম্বরে প্রদান করা হবে এবং শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীকে নিজ নিজ মুঠোফোন নম্বর এবং শিক্ষার্থীকে পিতামাতা/অভিভাবকের মুঠোফোন নম্বর (আবেদনের আগেই মুঠোফোন নম্বরটি নগদ সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে) দিতে হবে; আবেদনকারী শিক্ষক-কর্মচারীকে তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং শিক্ষার্থীদের তাঁদের অনলাইন জন্মসনদ এবং পিতামাতা/অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনরোটারি ইন্টারন্যাশনালের ১৩০ ফেলোশিপ, অস্ট্রেলিয়া–যুক্তরাজ্য–যুক্তরাষ্ট্র–জাপান–তুরস্ক ও উগান্ডায় পড়াশোনা২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

*২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অনুদান পেয়েছেন, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা এ বছর (চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে) আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

*কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের আবেদন ফরম’ বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে অনুদান পাওয়ার আবেদন করতে হবে।

আরও পড়ুনস্নাতক ও ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা পাবেন উপবৃত্তি, মিলবে ১০,০০০১৩ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন দ ন র অন দ ন প র অন দ ন ব সরক র দ ন কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ই-কমার্সে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা

পর্ব–২
ই-কমার্সের প্রাণভোমরা হলো আস্থা। যখন একজন ক্রেতা নিজের মোবাইল ফোনে বা ল্যাপটপে ক্লিক করে একটি অর্ডার দেন, তখন তিনি বিশ্বাস করেন যে তাঁর পছন্দের পণ্য ঠিকঠাক পৌঁছে যাবে। এই বিশ্বাসের ভিত্তি যদি দুর্বল হয়, তাহলে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা থমকে যায়। বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশে ই-কমার্স নিরাপত্তা পরিস্থিতি
ই–ক্যাব ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের যৌথ জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশের ই-কমার্স ক্রেতাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ এখনো অনলাইন লেনদেনে শঙ্কা অনুভব করেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতে, ২০২৩ সালে ই-কমার্স সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ হাজার। প্রধানত পণ্য না পাওয়া, ভিন্ন পণ্য সরবরাহ, টাকা ফেরতে বিলম্ব এবং গ্রাহকের তথ্য অপব্যবহার ছিল অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু।

কেন গ্রাহক আস্থা হারাচ্ছে?
* অনলাইন লেনদেন ঝুঁকি: ফিশিং, স্ক্যাম, ক্লোনড পেমেন্ট পোর্টালের কারণে গ্রাহক আস্থা কমছে।
* ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা সংকট: অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানার মতো তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে না।
* ফেক অফার ও প্রতারণা: ভুয়া পেজ, ছাড়ের নামে প্রতারণা ই-কমার্সকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
* রিফান্ড ও রিটার্ন নীতির জটিলতা: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত (রিফান্ড) না পাওয়া গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করে।

বিশ্ব অভিজ্ঞতা: সফল নিরাপত্তা মডেল
চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার ই-কমার্স ইকোসিস্টেমে নিরাপত্তা ও আস্থা বিষয়ক কিছু কার্যকর মডেল অনুসরণ করা হয়।
* চীন: আলিবাবার বায়ার প্রটেকশন প্রোগ্রাম।
* ভারত: অ্যামাজনের এ টু জেড গ্যারান্টি ও ইউপিআই সিস্টেমে ফ্রড রেজোলিউশন সেন্টার।
* ইন্দোনেশিয়া: টকোপিডিয়ার সেলার ভেরিফিকেশন ও ইজি রিটার্ন পলিসি।

ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য মূল করণীয়
* ভেরিফায়েড সেলার প্রোগ্রাম চালু করা।
* সাইবার নিরাপত্তা মান বাধ্যতামূলক করা।
* ক্রেতার যাচাই করা রিভিউ ও রেটিং সিস্টেম চালু।
* কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সিস্টেম তৈরি (আইসিটি বিভাগ ও ই–ক্যাব)।
* ট্রাস্ট ব্যাজ ও ডিজিটাল সার্টিফিকেশন চালু করা।

গ্রাহক আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য করণীয়
* রিফান্ড ও রিটার্ন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করা।
* অনলাইন লেনদেন সুরক্ষায় ব্যাংক ও এমএফএস সহযোগিতা বাড়ানো।
* ক্রেতা সুরক্ষায় ডিজিটাল ভোক্তা অধিকার আইনের বাস্তবায়ন।
* সচেতনতামূলক প্রচারণা: ‘বাই ফ্রম ভেরিফায়েড সেলার’ প্রচারণা চালু করা।

বাংলাদেশ সরকার ও ই-ক্যাবের ভূমিকা
* সাইবার সিকিউরিটি সেল সক্রিয় করা (আইসিটি বিভাগ)।
* ই–ক্যাবের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসার সুশাসন নিশ্চিত করা।
* সেলার ব্ল্যাকলিস্ট ডেটাবেজ তৈরি করা।
* ব্যাংক ও লেনদেন গেটওয়ের সঙ্গে কনসোর্টিয়াম গঠন করে প্রতারণা প্রতিরোধ করা।

ফিনটেকের ভূমিকা
ফিনটেক ইকোসিস্টেমের সঙ্গে ই-কমার্সের সংযোগ আরও জোরদার করতে হবে। ডিজিটাল লেনদেন নিরাপত্তায় বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রাহক অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে হবে।

ভবিষ্যতের লক্ষ্য
* ২০২৫ সালের মধ্যেই ৯৫ শতাংশ ই-কমার্স লেনদেন সুরক্ষিত ডিজিটাল মাধ্যমে করা।
* ১০০ শতাংশ ই-কমার্স সাইটে এসএসএল সার্টিফিকেট নিশ্চিত করা।
* রিফায়েড সেলারের সংখ্যা ১ লাখে উন্নীত করা।
* ই–ক্যাব সদস্যভুক্তদের জন্য বাধ্যতামূলক সাইবার নিরাপত্তা কমপ্লায়েন্স চালু করা।
ই-কমার্স কেবল প্রযুক্তির খেলা নয়, এটি মানুষের আস্থার খেলা। যেখানে নিরাপত্তা আছে, সেখানেই বাণিজ্য টেকে। বাংলাদেশের ই-কমার্স বিপ্লব সফল করতে হলে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হতে হবে গ্রাহক আস্থা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

(চলবে)


ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান: ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও ও গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ

আরও পড়ুনবাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই২২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরীক্ষার সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি, আবার প্রবেশপত্র ডাউনলোড
  • নয় মাসে মুনাফা থেকে লোকসানে জেমিনি সি ফুড
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২৪ এপ্রিল ২০২৫)
  • পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  • গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের দাবি
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনের সময় আর ২দিন, পিছিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা
  • ড্রাইভার পদে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, আবেদন করুন দ্রুত
  • বাংলাদেশ ল্যাম্পসের ৯ মাসে লোকসান কমেছে ৫৪.৭৩ শতাংশ
  • ই-কমার্সে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও গ্রাহক আস্থা