চলতি অর্থবছরে চরম দারিদ্র্য বাড়তে পারে: বিশ্ব ব্যাংক
Published: 24th, April 2025 GMT
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ‘ম্যাক্রো পভার্টি আউটলুক’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশ বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানাবিধ কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এই সময় মানুষ যেমন কাজ হারিয়েছে, তেমনি তাদের মজুরি কমেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থান কমে যাওয়া স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জীবনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। একই সময়ে স্বল্প দক্ষ কর্মীদের মজুরি ২ শতাংশ এবং উচ্চ দক্ষ কর্মীদের মজুরি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
এই বাস্তবতায় দেশের চরম দারিদ্র্যের হার বাড়বে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। তাদের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবছরে দেশে চরম দারিদ্র্যের হার ২ দশমিক ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়তে পারে। অর্থাৎ চরম দারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে উঠবে। এতে আরও অনেক মানুষের জীবন কষ্টকর হয়ে উঠবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে দেশে বৈষম্য আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। কয়েক বছর ধরেই যা ঊর্ধ্বমুখী। চলতি অর্থবছরে জিনি সহগ শূন্য দশমিক ৫ পয়েন্টের কম বাড়তে পারে।
এই বাস্তবতায় প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারগুলো ভালো থাকবে বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাংক। অর্থনৈতিক সংকটের মোকাবিলা করতে গিয়ে পাঁচটির মধ্যে তিনটি পরিবার তাদের সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করতে বাধ্য হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকেও বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকবে না বলেই মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশের রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৪ শতাংশে উঠতে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস। সরকারের মূলধন ব্যয় সামগ্রিকভাবে কমে আসতে পারে, যদিও তার সুফল তেমন একটা মিলবে না বলেই মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক। ভর্তুকি ও সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
এদিকে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।
নতুন পূর্বাভাসে বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, আগামী অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে।
চলতি বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল ২০২৫-এ এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কয়েক দিন আগে আরেক দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছিল, বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আইএমএফ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আরও কমিয়ে দিল।
বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগ, রপ্তানি ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে কিছু বাহ্যিক চাপ আংশিক প্রশমিত হয়েছে, যেমন ব্যালান্স অব পেমেন্ট ঘাটতি হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হওয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চরম দ র দ র য র হ র ২০২৪ ২৫ প রব দ ধ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
অর্ধবার্ষিকে হামিদ ফেব্রিক্সের লোকসান বেড়েছে ১২৬১.৯০ শতাংশ
পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হামিদ ফেব্রিক্স পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, ২০২৪) ও অর্ধবার্ষিকের (জুলাই থেকে ডিসেম্বর, ২০২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচ্য প্রান্তিকে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সোমবার (২১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হামিদ ফেব্রিক্স পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, আলোচ্য অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে হামিদ ফেব্রিক্স পিএলসির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে (১.৮০) টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (০.৩২) টাকা। সে হিসেবে অলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ১.৪৮ টাকা বা ৪৬২.৫০ শতাংশ।
অপরদিকে, ছয় মাস বা অর্ধবার্ষিক প্রান্তিকে হামিদ ফেব্রিক্স পিএলসির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (২.৮৬) টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (০.২১) টাকা। সে হিসেবে অলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ২.৬৫ টাকা বা ১২৬১.৯০ শতাংশ।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩০.৮১ টাকা।
ঢাকা/এনটি/রফিক