আ’লীগের কার্যালয়ে অস্থায়ী ছাত্রীনিবাস
Published: 24th, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ছাত্রীনিবাস করে দেওয়া হয়েছে শান্তিগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে। এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্য ঘোচাতে সুষম উন্নয়নে ‘ঐক্যবদ্ধ হোন, সোচ্চার হোন’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বুধবার দুপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনায় তারা অস্থায়ী ছাত্রীনিবাস অবিলম্বে জেলা শহরে স্থানান্তর করে শিক্ষার্থীদের শঙ্কা দূর করার দাবি জানান।
নতুবা সেখানে কোনো অঘটন ঘটলে দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। বক্তারা বলেন, জেলা সদর তথা শহরে নানা স্থাপনা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শান্তিগঞ্জের গ্রাম এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ভাড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। ওখানকার কম সামর্থ্যবান শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা করলে একটি টিউশনি করতে পারছেন না, যা অমানবিক।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাসাবাড়ি-স্থাপনা ভাড়া নিতে গিয়ে সরকারের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় দেখানো হচ্ছে এবং অর্থেরও নয়ছয় হচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমান উপাচার্যের আর্থিক অনিয়ম তদন্তের দাবিও তোলেন বক্তারা।
সভার সূচনা বক্তব্যে কথা বলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদরে বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব মুনাজ্জির হোসেন সুজন।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদরে বাস্তবায়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক বিশিষ্ট আইনজীবী হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী সমাপনী বক্তব্যে বলেন, যে আন্দোলনের সূচনা করেছেন তারা এটা কোনো আঞ্চলিক আন্দোলন নয়, এটা সুনামগঞ্জ জেলা সদর তথা জেলা শহরসহ সমগ্র জেলাবাসীর আন্দোলন। অতীতে সর্বদলীয় রাজনীতির ঐকতান হিসেবে ঐতিহ্য রক্ষার পরম্পরায় একাত্ম হয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল লেইস রোকেস, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক, জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুর রব, বিশ্বম্ভরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বপন বর্মণ, তাহিরপুর উপজেলা জামায়েতের নেতা শফিকুল ইসলাম, দিরাই উপজেলা বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, শাল্লা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আউয়াল, ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হক প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জেলা বিএনপির স্বাক্ষর প্রদানকারী সদস্য আবদুল হক, বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রবিউল লেইস রোকেস, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামছুদ্দিন আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুক আলম, সাবেক সিভিল সার্জন ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ স ন মগঞ জ ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।
রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।