নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হতে অমুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আপনাদের কথা আপনারাই সংসদে গিয়ে বলবেন। আশ্বাস নয়, আহ্বান জানাচ্ছি, যদি পছন্দ করেন, তাহলে আগামীতে জামায়াতের ব্যানারেই নির্বাচনের জন্য তৈরি হোন। আপনারা এলে স্বাগতম। না এলে, অন্তত ভালোবাসা চাই। কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, আপনার নিজের জন্য এবং দেশের জন্য চাই।

বুধবার রাতে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াস ইনস্টিটিউশনে ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের ‘ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে’ এ আহ্বান জানান জামায়াত আমির। তিনি মসজিদ-মাদ্রাসা যদি পাহারা দিতে না হয়, তাহলে মন্দির পাহারা দিতে হবে কেন? এই সংস্কৃতি আমরা মানতেই চাই না। এই সংস্কৃতি আমরা বদলাতে চাই। এমন রাষ্ট্র আমরা গঠন করতে চাই, যেখানে কাউকে মন্দির পাহারা দিতে হবে না।

শফিকুর রহমান বলেন, ভিন্নধর্মাবলম্বীদের যত ন্যায্য দাবি-দাওয়া ছিল, আগে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এসব দাবি পূরণের অঙ্গিকার করত। তবে কখনো তারা সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি।

জামায়াত আমির বলেন, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কাউকে যেন দেশ ছাড়তে না হয়। অতীতে যারা দেশ ছেড়েছেন, তাদেরকেও ফেরত আনতে চায় জামায়াত।

জামায়াত গালি খাওয়ার রাজনীতি করতে চায় না জানিয়ে ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, রাজনীতিবিদরা শুধু নিজেদের দিকে তাকান, তারা চতুর্দিকে কী হচ্ছে সেগুলো দেখেন না। এমন রাজনীতি করতে চাই না, যে রাজনীতি করলে মানুষ সামনে এলে সম্মান করবে, আর পেছনে গিয়ে গালি দেবে।

শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা অন্যকে সম্মান করতে পারে, তারা প্রকৃত মানুষ। আমাদের চোখের দিকে তাকিয়ে ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন। আমাদের অগোচরে আমাদের প্রশংসা করবেন। 

আমীরে জামায়াত বলেন, সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু, এই রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।

সমাবেশে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, সর্বধর্মের সবাই জামায়াত আমিরকে ভালোবাসে। আমাদের বক্তব্যগুলো সংসদে বলতে চাই। 

জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, অহিংসা পরম ধর্ম। জামায়াত ঢাকা শহরে কয়টা বাড়ি দখল করে রেখেছে আর অন্যরা কয়টা বাড়ি দখলে রেখেছে? এই হিসাবটা নেন তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। 

সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক,  বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল অনুপম বড়ুয়া, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও  কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা প্রমুখ। মহানগর দক্ষিণের আমির ম নূরুল ইসলাম বুলবুল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র জন য র জন ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ