খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে।

বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.

মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুয়েটে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। 

মো. মামুন অর রশিদ জানান, অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আদেশে উল্লেখ করা হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

গত ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। 

এসব ঘটনায় কুয়েট উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের এক দফা দাবিতে ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে বসেছিলেন ২৯ শিক্ষার্থী। বুধবার শিক্ষা উপদেষ্টা গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভিসির পদত্যাগের আলটিমেটামে দেন।

তবে কুয়েট ভিসি বলেছিলেন, সরকার তাকে না সরালে নিজে থেকে পদ ছাড়বেন না। শেষ পর্যন্ত সরকার-ই তাকে ভিসির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

এদিকে বুধবার সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও বিকেল থেকে ছাত্রদের ৬টি ও ছাত্রীদের ১টি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক য় ট উপ চ র য উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পরও অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার কথা বলার পরও কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি শিক্ষার্থীদের বারবার অনুরোধ করলেও ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষা উপদেষ্টা কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘‘তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতি শিগগির কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবে। তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ তা আদালতে টেকে না।’’

আরো পড়ুন:

কুয়েটে শিক্ষা উপদেষ্টা, কথা বলছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে

৪০ ঘণ্টা অনশনে, অসুস্থ কুয়েটের পাঁচ শিক্ষার্থী

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দুইমাস ধরে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু, আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে আর সময় দিতে চাই না। আমরা লাশ হয়ে গেলেও ভিসির পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙব না।

এর আগে, গত সোমবার বিকেল ৪টা থেকে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৩২ জন শিক্ষার্থী।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতপরিচয়ের কয়েকজনের বিরুদ্ধে শুধু দায়সারা একটি মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো হামলার ঘটনায় বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মামলায় ছাত্রদের ব্যক্তিগত পরিচয়, বিভাগ ও রোল নম্বর যেভাবে নিখুঁত বর্ণনা করা হয়েছে তা কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না। এরপর কর্তৃপক্ষ ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।

গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। দুই রাত খোলা আকাশের নিচে থাকার পর ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে হলে ঢোকেন তারা। কিন্তু হলে খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। এসব ঘটনায় উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনশন প্রত্যাহার করলেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা  
  • কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত
  • কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতীকী অনশন
  • উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে কুয়েটে কাফিন মিছিল
  • ‘মার্চ ফর কুয়েট’ এর হুশিয়ারি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের
  • কুয়েটে ৩৭ জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, হলও খুলেছে
  • ‘কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে’
  • কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের অনশন
  • শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পরও অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা