রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
Published: 23rd, April 2025 GMT
ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে পোশাক শিল্পে শোক দিবস ঘোষণা, রানা প্লাজার সামনে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের এক জীবনের ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে হতাহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও সন্ধ্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারের রানা প্লাজার বেদীর সামনে মোমবাতি জালিয়ে তাদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে অন্তত ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক নিহত এবং ২ হাজার ৪৩৮ জন শ্রমিক আহত হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ১২ বছর পূর্ণ হলেও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হয়নি। এটাকে দুর্ঘটনা বললে ভুল হবে, এটা হত্যাকাণ্ড। ক্ষতিগ্রস্ত সবার প্রয়োজনীয় সহায়তা, পুনর্বাসন এবং আহতদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দিতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
সুনামগঞ্জের হাওরে বজ্রপাত, ধানকাটা শ্রমিকের মৃত্যু
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘‘শ্রমিকরা আহত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘোরে। তারা এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেল না। ১২ বছর পার হয়ে গেল রাজা প্লাজার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার আমরা দেখতে পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।’’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুব আলম ইসমাইল বলেন, ‘‘রানা প্লাজার জায়গা ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকের পরিবারকে পুনর্বাসন, আহতদের সু-চিকিৎসা, সোহেল রানাসহ দায়ী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজা ধসের দিন ২৪ এপ্রিল কে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করতে হবে।’’
এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের মোতালেব হোসেন রতন, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন নাহিদুল ইসলাম নয়ন, রানা প্লাজা সারভাইভার্স এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত গ র ম ন টস
এছাড়াও পড়ুন:
ছবি তুললেই লাঠিপেটা, বনানীতে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ
রাজধানীর বনানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে চালকদের আন্দোলন উত্তপ্তে রূপ নেয়। আন্দোলনের ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে গেলেই রিকশাচালকদের হামলার শিকার হতে হয়েছে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে বনানী ১১ নম্বর রোড সংযোগ সেতুর সামনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই সময়ে যে কোনো ব্যক্তি ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে গেলেই চালকরা তাদের লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন। তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে জানান, অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আন্দোলনের ছবি তুলতেই চালকরা তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে।
তিনি বলেন, ‘‘অফিস সহকারীর সহায়তায় কোনোমতে জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি। অটোরিকশা চালকরা বড় রামদা ও লাঠি নিয়ে যাকে পেয়েছে তাকেই আক্রমণ করেছেন।’’
বনানী সোসাইটির বাসিন্দা মোহাম্মদ আমজাদ জানান, তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু রাস্তায় দাঁড়ালে চালকরা তাদের লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ শুরু করেন। ছবি তুলতে গেলে আরো বেপরোয়া হয়ে দুই বন্ধুকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘‘অটোরিকশা চালকরা বস্তি থেকে লোকজন ভাড়া করে এনে সোসাইটির বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। এই ঘটনার বিচার না হলে ভবিষ্যতে আরো বড় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।’’
বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা আন্দোলন করছিল। ছবি তুলতে গেলে তারা হামলা চালিয়েছে। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ঢাকা/রায়হান/এনএইচ