তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক আয়োজন ‘জাপান আইটি উইক ২০২৫’ (স্প্রিং) শুরু হয়েছে। জাপানের রাজধানীর বিখ্যাত প্রদর্শনী কেন্দ্র টোকিও বিগসাইটে বসেছে চলতি আসর। বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের সহযোগিতায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ছয়টি সদস্য প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিচ্ছে।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.

দাউদ আলী। জাপানে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোরারজী দেশাই বর্মন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব মো. তবিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এস এম ফরিদ উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাপান আইটি সপ্তাহে বেসিসের সদস্য ছয়টি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে নিজেদের পরিষেবা প্রদর্শন করবে। বাংলাফায়ার সল্যুশন, বিজেআইটি, ইনুমেন্ট সল্যুশন্স, টুইনফোর্চ সল্যুশন্স, ফ্রনচার টেকনোলজিস এবং রেভো ইন্টার‌্যাক্টিভের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে জাপান আইটি উইকে বেসিসের অংশগ্রহণ সমন্বয় করছেন বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য মো. রওশন কামাল জেমস।

জাপানে প্রদর্শনী প্রসঙ্গে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, জাপান আইটি উইকের মতো বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিত্ব করা সম্মানের। এমন অংশগ্রহণ স্টার্টআপ ও আইটি পরিষেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের জন্য বৈশ্বিক সুযোগ সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তুলে ধরবে বিশ্ব দরবারে।

জাপান আইটি উইকের মতো বৈশ্বিক আয়োজনে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিত্ব করতে পারা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন। এই অংশগ্রহণ কেবল আমাদের স্টার্টআপ ও আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বৈশ্বিক সুযোগ সৃষ্টি করবে না, বরং বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার এক উজ্জ্বল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এতে অংশ নেওয়ায় জাপানি বিনিয়োগকারী ও অংশীদারদের কাছ থেকে বাংলদেশের ব্যবসায়িক লিড প্রাপ্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সহযোগিতাকে সুদৃঢ় করবে।

জাপানের ট্রেড শোতে অংশ নেওয়া বেসিস সদস্যরা নিজেদের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও পরিষেবা সম্পর্কে অবহিত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশের ব্র্যান্ডিং করার মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনার কথা বলবেন। বিনিয়োগকারী ও আইসিটি সেবাদাতার মধ্যে যোগসূত্র তৈরিতে কাজ করবে জাপানের প্রদর্শনী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ প ন আইট সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন

হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেবেন। জামায়াতের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিলে আপনাদের স্বাগত জানানো হবে।’

বুধবার রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন শফিকুর রহমান। ভিন্নধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের ভালোবাসা চাই। অতীতে যাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশ ছেড়েছেন, তাঁদেরকেও আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই।’

ধর্ম ও পেশার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পরিচয়কে বৈষম্য উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এই সামাজিক পার্থক্যকে আমরা ঘৃণা করি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে নেবে। আমরা ওই সংস্কৃতির বিকাশ চাই, যেখানে কোনো মন্দির, চার্চ ও মঠ পাহারা দিতে হবে না।’

যেকোনো ‘মবের’ বিরুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে কিছু ভাঙচুরের ঘটনার বিরোধিতা করায় অনেকে আমার বিরুদ্ধে খেপে যান। কিন্তু আমি কোনো মবের পক্ষে নই। কেউ অপরাধী হলে তার জন্য আইন ও আদালত আছে। সেখানে তার বিচার হবে।’

প্রীতি সমাবেশে বিভিন্ন ধর্মের সদস্যরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি যাচাই–বাছাই করে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন শফিকুর রহমান।

জামায়াতে ইসলামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, ‘আমাদের প্রাণের আট দফা দাবি জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংযোজন করবে, সেই প্রত্যাশা রাখছি। আমরা ৫৩ বছর ধরে বঞ্চিত। যত বঞ্চনা কিংবা নির্যাতন হয়েছে, আমরা কোনো ঘটনার বিচার পাইনি। আপনারা সেই বিচার নিশ্চিত করুন।’

হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা হিন্দুদের ওপর সংঘটিত সকল নির্যাতন ভুলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। বাংলাদেশে হিন্দুরা ধর্মের দিক দিয়ে হলেও সংখ্যায় কম। ফলে আমরা শঙ্কায় থাকি।’

সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাছে সেই ১৯৫৪ সাল থেকে জিম্মি হয়েছিলাম। এবার আমরা সেই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি। তাই সংসদে আমরা নিজেরা নিজেদের কথা বলতে চাই।’

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি আবদুল মান্নান। প্রীতি সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

সমাবেশে অংশ নেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি নিবাস চন্দ্র মাঝি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহসভাপতি বদন্ত স্বরুপানন্দ ভিক্ষু, ইমানুয়েল ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পাস্তর তপন রায়, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব সভাপতি দিনবন্ধু রায়, শুভাশীষ বিশ্বাস, লিটন কোমল বড়ুয়াসহ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ