ব্রাজিল কিংবদন্তির ছেলে এখন স্পেন দলের অধিনায়ক
Published: 23rd, April 2025 GMT
বাবা ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার এবং মা ব্রাজিলের পরিচিত অভিনেত্রী। ছেলেরও সুযোগ ছিল ব্রাজিলের বিখ্যাত হলুদ জার্সি গায়ে তোলার। কিন্তু ব্রাজিল নয়, সে বেছে নিয়েছে স্পেনকে। বলা হচ্ছে, মার্সেলো-পুত্র এনজো আলভেজের কথা।
বাবা–মা দুজনই ব্রাজিলের হলেও এনজোর জন্ম ২০০৯ সালে স্পেনের মাদ্রিদ শহরে। এনজোর বাবা মার্সেলো তখন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা খেলোয়াড়। মাদ্রিদের হাওয়া–বাতাসেই এনজোর বেড়ে ওঠা।
এরপর ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এসে জাতীয় দল হিসেবেও ব্রাজিলের পরিবর্তে জন্মভূমি স্পেনকে বেছে নেয় এনজো। স্পেনকে বেছে নেওয়ার পর পিনাতার কাপে অনূর্ধ্ব–১৫ দলের হয়ে খেলার জন্য ডাক পায় এই ফরোয়ার্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্পেন যুবদলের ২–১ গোলে জেতা ম্যাচে অভিষেক হয় এনজোর।
আরও পড়ুনক্লাব ছাড়ছেন রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক, যাবেন পিএসজিতে২২ এপ্রিল ২০২৫অভিষেকের পর এখন বয়সভিত্তিক দলে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে চলেছে এনজো। ৯ নম্বর জার্সি পরে খেলা এই স্ট্রাইকার বর্তমানে স্পেন অনূর্ধ্ব–১৬ দলের অধিনায়ক। সর্বশেষ গতকাল অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে স্পেন অনূর্ধ্ব–১৬ দলের ২–০ গোলে জেতা ম্যাচে গোলও করেছে সে। স্প্যানিশ শহর বেনিদোর্মের গিয়ের্মো আমর মিউনিসিপাল স্টেডিয়ামে এনজো গোলটি করেছে ম্যাচের ৬৬ মিনিটে।
ডান প্রান্ত দিয়ে গড়া আক্রমণে সতীর্থের পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করে এই কিশোর। ছেলের গোল এবং স্পেনের জয় স্ট্যান্ডে বসে উপভোগ করেছেন রিয়াল কিংবদন্তি মার্সেলো। এনজোর গোলের পর বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেও দেখা যায় মার্সেলোকে, যিনি দুই মাস আগে পেশাদার ক্যারিয়ার থেকে অবসর নিয়েছেন। স্পেনের জয়ে ম্যাচের ৮৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করে মারিও দিয়াজ।
সতীর্থদের সঙ্গে এনজোর উদ্যাপন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনজ র
এছাড়াও পড়ুন:
ডলারের দরে নমনীয়তা দেখায়নি সরকার, আইএমএফের সঙ্গে আজ আবার বৈঠক
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ে কোনো সুরাহা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে– এ মুহূর্তে ডলারের দর বাজারভিত্তিকের ক্ষেত্রে নমনীয় করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আরেক দফা বৈঠক হবে। আজও ইতিবাচক কোনো বার্তা না এলে আগামী ১৯ মে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির চূড়ান্ত সুরাহা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে শর্তের অগ্রগতি যাচাইয়ে গত মাসে একটি মিশন ঢাকা সফর করে। তবে কোনো সমঝোতা ছাড়াই তারা ঢাকা ছাড়ে। মূলত বাংলাদেশ এখন বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে নমনীয়তা দেখাতে চাচ্ছে না। এ কারণে আলোচনা গড়ায় ওয়াশিংটনে। গত মাসের শেষ দিকে আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের ফাঁকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সাইডলাইনে আলাদা বৈঠক হয়। কিন্তু ঢাকা বা ওয়াশিংটন– কোথাও আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচি থেকে পরবর্তী দুই কিস্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। গতকাল এ নিয়ে আবার ভার্চুয়াল সভা হয়। সোমবারের এ সভায় বাংলাদেশের পক্ষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, অতিরিক্ত সচিব ড. জিয়াউল আবেদীন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান ও কবির আহাম্মদ যুক্ত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে ডলারের দরে নমনীয়তা না দেখানোর নীতিগত অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, বর্তমান ডলারের দর বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ কারণে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে দরের তেমন পার্থক্য নেই। আবার বৈধ পথে রেমিট্যান্সে প্রায় ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আছে। ডলারের দর দীর্ঘদিন ধরে ১২২ টাকায় স্থিতিশীল থাকার পরও এভাবে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এ মুহূর্তে ডলারের দরে সামান্য নমনীয়তা দেখালেই দর বাড়তে শুরু করবে। ডলার বাজারে আবার অস্থিরতা শুরু হবে। ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যাবে।
এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে বাজেট সহায়তা ছাড় নিয়ে আলোচনার সময়ও আইএমএফের কিস্তির বিষয়ে সমাধানের তাগিদ দেয় সংস্থাটি। গত রোববার ইতালির মিলানে এডিবির বার্ষিক সভায় সংস্থার দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বাজেট সহায়তার বিষয়ে আলোচনার সময় এডিবি আইএমএফের বিষয় জিজ্ঞাসা করেছিল। আমরা তাদের বলেছি, আইএমএফের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, চট করে আইএমএফের কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করা হবে না। মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মতো করতে চাই না। আইএমএফের কিস্তি ছাড়াই অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে। আমরা যদি আইএমএফ ও এডিবির সহায়তা নাও পাই, তাও নিজেদের মতো করে বাস্তবসম্মত বাজেট দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী দু’জনেই সম্প্রতি বলেছেন, প্রয়োজনে আইএমএফের ঋণ নেওয়া হবে না। তবে সব শর্ত মানা হবে না।
আর্থিক সংকট সামাল দিতে ২০২২ সাল থেকে কয়েক দফা আলোচনা শেষে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে পাওয়া গেছে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুনে পাওয়া গেছে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার। তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার অন্য সব শর্ত মেনে নিলেও বৈদেশিক মুদ্রা বাজারভিত্তিকের শর্ত নিয়ে দরকষাকষি করে আসছে।