পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌরসভায় স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাক্টরের ধাক্কায় বাবার মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে জিনেদিন জিদান (৬) নামের একটি শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা, বড় বোন এবং ট্রাক্টরচালকের সহকারী আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকালে পৌরসভার সবুজপাড়া এলাকায় এলএসডি মোড়ে দেবীগঞ্জ-ভাউলাগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জিদান একই উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বলরামপুর প্রধানপাড়া এলাকার স্কুলশিক্ষক নজরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। সে একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

এ দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন জিদানের বাবা নজরুল ইসলাম (৪৫), বড় বোন নওরীন জাহান (১০) ও ট্রাক্টর চালকের সহকারী কাঞ্চন (৩০)।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে চিলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তাজুল ইসলাম এবং দেবীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আক্কাস আলী ভূঁইয়া জানান, জিদান ও নওরীন দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের নর্থস্টার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। আজ সকালে মোটরসাইকেলে তাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন বাবা নজরুল ইসলাম। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইটবোঝাই ট্রাক্টর তাঁদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই মোটরসাইকেল থেকে সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ দুর্ঘটনার সময় ট্রাক্টরটি সড়কের পাশের একটি দোকানঘর ভেঙে পাশের খাদে উল্টে যায়। এ সময় ট্রাক্টরচালক পালিয়ে গেলেও তাঁর সহকারী কাঞ্চন গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয় লোকজন আহত চারজনকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে জিদানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কাঞ্চনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া নিহত শিশুটির বাবা ও বোন দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এদিকে দুর্ঘটনার প্রতিবাদ, নিরাপদ সড়ক ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে আজ দুপুরে শহরের বিজয় চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

চালক পালিয়ে গেলেও ট্রাক্টরটি জব্দ হয়েছে বলে জানান দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা। তিনি জানান, এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে। শিশুটির লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ