ভিনির বিরুদ্ধে ফিফার তদন্ত, দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা
Published: 23rd, April 2025 GMT
ব্রাজিলের এক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার ভিনিসিয়াস জুনিয়রের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। অভিযোগের সত্যতা মিললে দুই বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে পারেন তরুণ ফুটবলার ভিনি।
সংবাদ মাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, ভিনিসিয়াসের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একাধিক পেশাদার ক্লাবের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি নাকি ব্রাজিল ও পর্তুগালের ক্লাবের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত আছেন। পেশাদার ফুটবলার একাধিক ক্লাবের মালিকানা নিলে তা স্বার্থ দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে বড় সাজা দেওয়ার এখতিয়ার রাখে ফিফা।
বিষয়টির বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ মাধ্যম উল্লেখ করেছে, ব্রাজিলিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘টাইবেরিস হোল্ডিং দো ব্রাজিল’ গত ৭ এপ্রিল ফিফার ফুটবল বিষয়ক নৈতিক কমিটির কাছে ভিনিসিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- ভিনিসিয়াস ব্রাজিলের ‘অ্যাথলেটিক ক্লাব দে সাও জোয়াও দেল রেই’ এবং পর্তুগালের ‘আলভের্কা’ ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- ভিনিসিয়াস তার বাবার প্রতিষ্ঠান ‘অল এজেন্সিয়ামেন্টো স্পোর্তিভো’র মাধ্যমে ক্লাবগুলো পরিচালনা করেন বা অর্থায়ন করেন। অর্থাৎ ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নাও থাকতে পারেন তিনি। তবে ফিফার নিয়মে বলা আছে- সরাসরি বা পরোক্ষভাবে একাধিক ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না কোন পেশাদার ফুটবলার।
বিষয়টি নিয়ে ফিফার বিধির ২০ ও ২২ নম্বর ধারায় বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া আছে। ওই দুই ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্বার্থ দ্বন্দ্বের এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভিনি সাজা পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা দুই বছর পর্যন্ত হতে পারে। মার্কা দাবি করেছে, ফিফা এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
ভিনির বিরুদ্ধে স্বার্থ দ্বন্দ্বের খবর দেওয়ার সঙ্গে স্প্যানিশ আউটলেট মার্কা আরও একটি খবর দিয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে নতুন চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়ে গেছে ভিনির। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি ছিল তার। ওই চুক্তি বাড়িয়ে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। এতে করে আপাতত ভিনির প্রতি সৌদি ক্লাবের আগ্রহের খবরটি চাপা পড়ছে। তিনি ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে মামলার রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ
পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বাদীপক্ষের লোকজনের বিক্ষোভ, আদালতের বিষয়ে সম্মানহানি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আদম সুফি তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী সমিতির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। মো. আদম সুফির সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আইবুল আলম আঙ্গুরকে প্রধান করে চারজন আইনজীবীর সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা জজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খলিলুর রহমান, পঞ্চগড় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে মো. আদম সুফি বলেন, গত ২০ মার্চ পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার রায় প্রকাশের পর উচ্ছৃঙ্খল কিছু ব্যক্তি আদালতের বিষয়ে সম্মানহানিকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি দুঃখ প্রকাশসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি বস্তুনিষ্ঠ নয়। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আদালত ও আইনজীবীদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালত চত্বরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে করা দুটি মামলার আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন। বিক্ষোভে হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে আদালতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আদালতে আসা উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. আদম সুফি আরও বলেন, রায় ঘোষণার পর আদালতের উদ্দেশে বিক্ষোভকারী যে ধরনের স্লোগান দিয়েছেন, তা আদালতকে অসম্মান করার শামিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে যেভাবে টাকাপয়সা লেনদেনের কথা বলছিলেন, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পঞ্চগড়ে বিচারকেরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে তাঁদের বিচারকার্য পরিচালনা করবেন এবং জেলার মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন এমনটাই তাঁদের কামনা। কিন্তু কেউ যদি এই সম্মান আর আস্থার জায়গাটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরও সহায়তা চান।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ মার্চ জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গিগছ এলাকায় কসির উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সামসুল হকের পরিবারের লোকজনের জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে কসির উদ্দিনের ছেলে মো. এরশাদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিনই রাতে এরশাদের বাবা কসির উদ্দিন বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া থানায় ওই ঘটনায় সামসুল হক পক্ষের ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর ২০১১ সালের ১৪ জুন অপর পক্ষ সামসুল হকের স্ত্রী রনজিনা বেগম পঞ্চগড় আদালতে কসির উদ্দিন পক্ষের ১৯ জনকে আসামি করে একই ঘটনায় একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলার কার্যক্রম একই আদালতে চলছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোনো পক্ষই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম রেজাউল বারী দুটি মামলার সব আসামিকেই বেকসুর খালাসের রায় দেন।