শেয়ারবাজারের টানা দরপতনের প্রতিবাদে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শেয়ারবাজারের বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা।

রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ফটকের সামনে আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে এই বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে এই বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

বিক্ষোভকারীরা শেয়ারবাজারের পতনের জন্য বিএসইসির ব্যর্থতাকে দায়ী করে কমিশনের অপসারণের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ৩০ মিনিট বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভ শেষে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে একটি মিছিলও বের করেন। মিছিলটি মতিঝিল থেকে শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড় ঘুরে মতিঝিলের ডিএসই ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে তাঁরা বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন।

বিক্ষোভকালে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল হোসাইন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘গত আট মাসে পুঁজিবাজারের সূচক শুধু নিচেই নেমেছে, ওপরে উঠে নাই। এই সময় সূচক প্রায় নয় শ পয়েন্ট কমেছে। টানা এই দরপতনে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারে পতন চলতে থাকায় বাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৮ লাখ থেকে কমে ৭ লাখে নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীদের অনেকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন।’

বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণে আলটিমেটামও ঘোষণা করেন। বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা জানান, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে যদি বিএসইসি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা না হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীরা জানান, বিএসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা আমলের সুবিধাভোগীরাও বিএসইসিতে সম্পৃক্ত আছেন, তাঁদেরও অপসারণ করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস

এছাড়াও পড়ুন:

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত হতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর নিরীক্ষা সম্পন্ন করা যোগ্য নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরই ধরাবাহিকতায় দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের অতিরিক্ত আরো ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে জিল বাংলা সুগার মিলস

সম্প্রতি এই বিষয়ে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্যানেল অব অডিটরস অ্যান্ড অডিট ফার্মস তালিকাভুক্তির জন্য নীতিমালা’-এর বিদ্যমান খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং ‘আইপিওর জন্য উপযুক্ত এবং যথাযথ তালিকাভুক্তির মানদণ্ড’-সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুসারে নীতিমালা পুনর্নির্মাণ করতে বলা হয়েছে।

তাই কমিশন দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির দায়িত্ব পালন করবেন বিএসইসির প্রধান হিসাব রক্ষক কামরুল আনাম খান এবং বিএসইসির সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমার ঘোষ।

কমিশন এই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ত্রিশ কার্যদিবস বৃদ্ধি করেছে। আদেশের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে।‌ এই আদেশ যথাযথ অনুমোদনের সঙ্গে জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অথবা কোনো কোম্পানি যখন তালিকাভুক্ত হতে চায়, তখন বিএসইসির নির্দিষ্ট তালিকা থেকে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তার আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে হয়। এর বাইরে অন্য কোনো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে নিরীক্ষা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও রুলসেরে নতুন বিধিমালার খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বর্তমানে অংশীজনদের সঙ্গে আইপিও আইনের মতামত নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। তাই এই আইনের সঙ্গে যোগ্য নিরীক্ষক বা নিরীক্ষা ফার্মের নতুন তালিকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত তালিকা কার্যকর হলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও আইপিও প্রক্রিয়ায় আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষার মান আরো উন্নত হবে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সহজ হবে।

বিএসইসি জানিয়েছে, কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা আরো ৩০ কর্মদিবস বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এ আদেশের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে। যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষেই এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলেও কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বাজার-সংশ্লিষ্টদের মতে, নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি স্পষ্ট ও মানসম্মত তালিকা প্রণয়ন হলে আর্থিক অনিয়ম কমবে এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার হবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের পুঁজিবাজার আরো শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/এনটি/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন
  • আবারও ভারতীয় রুপির দরপতন, ডলারের বিপরীতে রেকর্ড তলানিতে
  • স্বতন্ত্র নারী পরিচালক মাত্র ১৩৮ কোম্পানিতে