সৌম্য সরকার যেদিন খেলেন, বড় ইনিংসই খেলেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ ১৫৩ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে নতুন করে সেটির প্রমাণ দিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান। বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে তিন-তিনবার জীবন পেয়ে ১১২ বলে ১৫৩ রান করেছেন সৌম্য। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি তাঁর নবম সেঞ্চুরি।

৯ সেঞ্চুরির চারটিতেই ১৫০ ছুঁয়েছেন এই বাঁহাতি। এর একটি আবার ২০৮ রানের ইনিংস। যেটি এই সংস্করণে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংস। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫০ ছোঁয়া ইনিংস খেলার রেকর্ডও এখন সৌম্যর। তিনটি ১৫০ ছোঁয়া ইনিংস নিয়ে দুইয়ে তামিম ইকবাল।

সৌম্যর সেঞ্চুরির ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংককে ১০৩ রানে হারিয়েছে তাঁর দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে মিরপুরে সেঞ্চুরি করেও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে জয় এনে দিতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। আগের ম্যাচে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৫০তম সেঞ্চুরি পাওয়া এনামুল পরেই ম্যাচেই পেয়ে গেলেন ৫১তম সেঞ্চুরি। এবারের লিগে এটি তাঁর চতুর্থ সেঞ্চুরি। রান তাড়ায় ১০৮ রান করলেও আবাহনীর দেওয়া ২৫০ রানের লক্ষ্য থেকে ১১ রান দূরে থেমেছে তাঁর দল। সর্বশেষ এই জয়ে শীর্ষেই রইল আবাহনী। আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৯৬ রান করেন ওপেনার শাহরিয়ার কমল।  বিকেএসপিতে দিনের আরেক ম্যাচে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান।

সৌম্যর ম্যাচে রূপগঞ্জের জয়

সৌম্য যখন ব্যাটিংয়ে নামেন ১৩.

১ ওভারে ৮১ রান লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের। ওপেনার তানজিদ হাসান ৪৩ রান করে আউট হওয়ার পর নামেন সৌম্য। ১৪ রান পরে ফিরে যান আরেক ওপেনার সাইফ হাসানও। তানজিদের মতো তিনিও ফিরেছেন ৪৩ রানে ।

সৌম্য ফিরতে পারতেন এর আগেই। ২ রানে দাঁড়িয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলেছিলেন সৌম্য। অমিত হাসানের হাত ফসকে পড়ে যায় ক্যাচ। সৌম্যর রান যখন ১০, শর্ট কাভারে ক্যাচ ছাড়েন জাহিদ জাভেদ। এরপর ১৪ রানে দাঁড়ানো সৌম্যর তোলা ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি বোলার তাইবুর রহমান।

তিন-তিনবার জীবন পেয়ে আর পেছনে ফিরে তাকাননি সৌম্য। ৫৮ বলে ফিফটি ও ৯২ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়া ব্যাটসম্যান শেষ ২০ বলে যোগ করেন ৫৩ রান। ১৭টি চার ও ৬টি ছক্কা মারা সৌম্যর ইনিংসে ভর করে ৩ উইকেটে ৩৩৩ রান করে রূপগঞ্জ। রান তাড়ায় ২৩০ রানে অলআউট অগ্রণী ব্যাংক।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য টসম য ন র পগঞ জ র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে মামলার রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বাদীপক্ষের লোকজনের বিক্ষোভ, আদালতের বিষয়ে সম্মানহানি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আদম সুফি তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী সমিতির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। মো. আদম সুফির সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আইবুল আলম আঙ্গুরকে প্রধান করে চারজন আইনজীবীর সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খলিলুর রহমান, পঞ্চগড় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে মো. আদম সুফি বলেন, গত ২০ মার্চ পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার রায় প্রকাশের পর উচ্ছৃঙ্খল কিছু ব্যক্তি আদালতের বিষয়ে সম্মানহানিকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি দুঃখ প্রকাশসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি বস্তুনিষ্ঠ নয়। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আদালত ও আইনজীবীদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালত চত্বরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে করা দুটি মামলার আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন। বিক্ষোভে হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে আদালতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আদালতে আসা উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আদম সুফি আরও বলেন, রায় ঘোষণার পর আদালতের উদ্দেশে বিক্ষোভকারী যে ধরনের স্লোগান দিয়েছেন, তা আদালতকে অসম্মান করার শামিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে যেভাবে টাকাপয়সা লেনদেনের কথা বলছিলেন, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পঞ্চগড়ে বিচারকেরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে তাঁদের বিচারকার্য পরিচালনা করবেন এবং জেলার মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন এমনটাই তাঁদের কামনা। কিন্তু কেউ যদি এই সম্মান আর আস্থার জায়গাটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরও সহায়তা চান।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ মার্চ জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গিগছ এলাকায় কসির উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সামসুল হকের পরিবারের লোকজনের জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে কসির উদ্দিনের ছেলে মো. এরশাদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিনই রাতে এরশাদের বাবা কসির উদ্দিন বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া থানায় ওই ঘটনায় সামসুল হক পক্ষের ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর ২০১১ সালের ১৪ জুন অপর পক্ষ সামসুল হকের স্ত্রী রনজিনা বেগম পঞ্চগড় আদালতে কসির উদ্দিন পক্ষের ১৯ জনকে আসামি করে একই ঘটনায় একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলার কার্যক্রম একই আদালতে চলছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোনো পক্ষই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম রেজাউল বারী দুটি মামলার সব আসামিকেই বেকসুর খালাসের রায় দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ