সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তা–ও নয়—সম্প্রতি বান্দরবানে মিয়ানমার সীমান্তের একটি ভিডিও নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি বান্দরবানের রেমাক্রিতে বৈসাবি উৎসবে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন দেখতে হবে আরাকান আর্মি ফাইট করতেছে অনেক দিন যাবৎ। এদের অনেকে এপারে বিয়ে করে ফেলছে—এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যে হারে ভিডিওতে আসছে বিষয়টা তা নয়। টিকটক ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। সবটা যে সত্য তা না, আবার সবটা যে মিথ্যা তা–ও না। এটার ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যালান্স করতে হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আরাকান ওই বর্ডারটা ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা তো মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি; কিন্তু বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে। এখানে একটা সমস্যা আছে, আপনাকে বুঝতে হবে। এটার সমাধানের চেষ্টা চলছে। আর সীমান্ত পুরোভাবে রক্ষিত আছে।’

সীমান্তের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। পাহাড় অশান্ত কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিও ছিলাম ও ব্রিগেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড় অশান্ত তো আপনারা দেখেনই। ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় এখন পুরোটাই শান্ত। এই ছোটখাটো অপহরণ আমাদের প্লেন ল্যান্ডেও (সমতল) তো হচ্ছে। খালি পাহাড়ের কেন দোষ দেন। পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে, অনেক শান্ত আছে। আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। সেখানে ল্যান্ডমাইন দিয়ে একসঙ্গে পিকআপ উড়াই দিছে। তিনজন–চারজন করে মারা গেছে। সেসময় এই খবরগুলো আসেও নাই, প্লাস ওই এলাকায় এক্সেসেবিলিটিও ছিল না। কিন্তু এখন তো পাহাড়ের অবস্থা এত ভালো—ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন।’

সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে গুলি করে খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া এলাকা হলো পাহাড় ও সমতলের সংমিশ্রণ। এখানকার সমস্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে ডিফারেন্ট। আমরা এই ব্যাপারে আলাপ করছি, এখানে সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্যে কেউ যদি করে থাকে আমি আপনাদের সামনে বলে গেলাম আইনানুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটে, সত্যি ঘটনা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন। তখন আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক সময় আছে দু-একজন করে কি, ঘটনা সত্যি নয় কিন্তু প্রকাশ করে দেয়। সেসময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় যে ঘটনা সত্যি নয়, তখন অসুবিধা হয়। পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকেরা এর সুবিধাটা নেয়। যেহেতু জানেন যে, তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম

এছাড়াও পড়ুন:

যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার সামনে অনুসারীদের স্লোগান

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে যুবলীগ নেতা মো. নানু মিয়াকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের শারফিন সুপারমার্কেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে তার অনুসারীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়েছেন। নানু মিয়া নবীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নবীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সদস্য।
 
পুলিশ জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। ওইদিন সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে আগুন দিয়ে নাশকতার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরদিন গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নানু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, গ্রেপ্তারের পরপরই নানু মিয়ার ২৫-৩০ জন অনুসারী থানার সামনে জড়ো হয়ে মুক্তির দাবী করেন। এ সময় তারা ‘ওসির দুই গালে জুতা মার তালে তালে, ওসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘সারা বাংলার জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই কর’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেট অ্যাকশন, নানু ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ