বাংলাদেশের এসএমই ও মাইক্রোফাইন্যান্স খাতের উন্নয়নে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সিটি ব্যাংক তাদের দুই শীর্ষ নির্বাহী মো. নুরুল আজম মজুমদার এবং কামরুল মেহেদীকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে। এই নিয়োগ দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (সিডিজিএস) অর্জনে ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ব্যাংকের ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করবে।

মো.

নুরুল আজম মজুমদার, যিনি পূর্বে ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মিডিয়াম বিজনেস ইউনিটের প্রধান ছিলেন, তিনি সিটি ব্যাংকের মিডিয়াম বিজনেস খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও ব্যবসা শিক্ষা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা মজুমদার ১৯৯৯ সালে সিটি ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। গত ২৫ বছরে তিনি এ ব্যাংকের ব্যাঞ্চ ব্যাংকিং, কর্পোরেট ব্যাংকিং ও রিটেইল ব্যাংকিংয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সাল থেকে মিডিয়াম বিজনেস ইউনিটের প্রধান হিসেবে তার নেতৃত্ব ব্যাংককে এই খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এনে দিয়েছে।

কামরুল মেহেদী, যিনি পূর্বে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, ২০১৭ সাল থেকে সিটি ব্যাংকের স্মল ও মাইক্রোফাইন্যান্স বিজনেস ইউনিটের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তার নেতৃত্বে ব্যাংকটি সিএমএসএমই খাতের জন্য একাধিক উদ্ভাবনী ও প্রভাবশালী পণ্যের সূচনা করে এবং কৃষি, নারী উদ্যোক্তা ও টেকসই অর্থায়ন খাতে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে। ব্র্যাক ব্যাংকে কর্মজীবন শুরু করা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পূর্ববর্তী সেবার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেহেদী যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি (ম্যাসাচ্যুসেস্ট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজি) থেকে ব্যাংকিং লিডারশিপ বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি প্রাপ্ত। 

নুরুল আজম মজুমদার ও কামরুল মেহেদীর ডিএমডি পদে পদোন্নতি দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে সিটি ব্যাংকের ভূমিকাকে আরও গভীর ও প্রভাবশালী করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জন স

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই

পর্ব–১

একসময় বাংলাদেশের ব্যবসা মানেই ছিল দোকানপাট আর মেলায় বিকিকিনি। কিন্তু ডিজিটাল যুগের হাতছানিতে আজ সেই বাণিজ্য এসেছে মোবাইলের পর্দায়, ল্যাপটপের ক্লিকে। ই-কমার্স এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের নিত্যব্যবহার্য। দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা এই পরিবর্তনের প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত দূর এসেও আমরা কি যথেষ্ট প্রস্তুত? আমাদের বর্তমান অবস্থান কোথায়, আর সামনে যাওয়ার পথ কী?

বাংলাদেশে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা

বাংলাদেশে ই-কমার্সের সূচনা হয় মূলত ২০০৯-১০ সাল থেকে। প্রথম দিকে কিছু ওয়েবসাইট–নির্ভর ব্যবসা শুরু হলেও ফেসবুকের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসার জোয়ার আসে। বর্তমানে প্রায় ২ লাখের বেশি ই-কমার্স উদ্যোগ সক্রিয়, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ফেসবুকভিত্তিক। (সূত্র: ই–ক্যাব অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২৩)

মোবাইল আর্থিক সেবার ভূমিকা

ই-কমার্সের প্রসারে বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৫–৬ লাখ অনলাইন লেনদেন হয়, যার অধিকাংশই ই-কমার্স সম্পর্কিত। এই প্রবাহ গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ই-কমার্স বিস্তারের রাস্তা তৈরি করেছে।

কোভিড-১৯ এবং ই-কমার্স বিপ্লব

কোভিড-১৯ মহামারিকালে যখন মানুষ ঘরবন্দী ছিল, তখন ই-কমার্সই হয়ে ওঠে প্রধান কেনাকাটার মাধ্যম। খাদ্যপণ্য, ওষুধ, পোশাক, এমনকি গৃহস্থালিসামগ্রীর চাহিদা অনলাইনে দ্রুত বেড়ে যায়। লাইটক্যাসল পার্টনারসের গবেষণামতে, কোভিড–পূর্ব সময়ের তুলনায় ই-কমার্স লেনদেন তখন ৩০–৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

অর্জন এবং সম্ভাবনা

* কর্মসংস্থান: প্রায় ২০–২৫ লাখ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত। (ই–ক্যাব, ২০২৩)

* নারী ক্ষমতায়ন: ৫০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা অনলাইন ব্যবসায় সক্রিয়।

* এসএমই অন্তর্ভুক্তি: প্রায় ৪০ শতাংশ ই-কমার্স উদ্যোগ এসএমই মালিকানাধীন।

* ফিনটেক বিস্তার: ৯৫ শতাংশ লেনদেন এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। (বাংলাদেশ ব্যাংক রিপোর্ট ২০২৩)

* লজিস্টিকস উন্নয়ন: পেপারফ্লাই, রেডএক্স, পাঠাও কুরিয়ার সেবা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

মূল চ্যালেঞ্জ

* গ্রাহক আস্থা সংকট: অনিয়মিত পণ্য সরবরাহ, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও টাকা ফেরত (রিফান্ড) জটিলতা এখনো বড় সমস্যা।

* ডিজিটাল নিরাপত্তাঝুঁকি: সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতার কারণে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি রয়েছে।

* রেজিস্ট্রেশন ও করের জটিলতা: এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও ট্যাক্স রেজিম সহজ নয়।

* আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের বাধা: পেপ্যাল, স্ট্রাইপের মতো বৈশ্বিক লেনদেন অনুপস্থিতি।

* দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি: ই-কমার্স পরিচালন, ডিজিটাল বিপণন ও ডেটা অ্যানালিটিকসে দক্ষতা প্রয়োজন।

মোহাম্মদ নূরুজ্জামান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই