দেশের সুবিধাবঞ্চিত কোটি পরিবারকে সহায়তা করতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর কার্যক্রমে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবে টিসিবির আয়োজনে ‘ট্রেড উইথ টিসিবি’ শীর্ষক বিজনেস টকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “পাঁচ আগস্ট বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়েও দেশের বিভিন্ন সেক্টরের মতো টিসিবিও দুর্বৃত্তায়নের বাইরে ছিল না। বিভিন্ন অঞ্চলে পরিদর্শনে গিয়ে এ বিষয়ে অনেক প্রমাণ পেয়েছি।”

তিনি বলেন, “উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতীতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। জুট মিলের মালিক, পাঁচতলা বাড়ির মালিক, এমনকি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাসায় একাধিক টিসিবি কার্ড পেয়েছি, যা প্রকৃত উপকারভোগীদের অধিকার হরণ করেছে।”

টিসিবিকে কার্যকর ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “এক কোটি পরিবারের জন্য সরকার ১২-১৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য কিনে থাকে। আমরা চাই এ বিপুল অর্থ যেন প্রকৃত উপকারভোগীদের কাজে লাগে। এজন্য সঠিক ব্যক্তি নির্বাচন ও আরো অধিক পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা অর্জনে ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরো বলেন, “গত রমজানে সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বাজার ব্যবস্থা তুলনামূলক ভালো ছিল। আমরা একটি দুর্বৃত্তায়িত ব্যবস্থার উত্তরণে কাজ করছি। ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে টিসিবি আরো কার্যকরভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) ড.

নাজনীন কাওসার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ।

কি-নোট উপস্থাপন করেন টিসিবির পরিচালক (কমার্শিয়াল) এস এম শাহীন পারভেজ। প্রকিউরমেন্ট প্রসঙ্গে বক্তব্য দেন পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট ও ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট) মো. আবেদ আলী এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা নিয়ে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পরিচালক আল-আমীন হাওলাদার।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলে এমন উদ্যোগে অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক তহবিল ‘পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি’। কৃষকদের সহায়তা করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আই-ফার্মারকে পাঁচ লাখ ডলারের এই সহায়তা দিচ্ছে তহবিলটি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই তহবিলের অর্থায়ন আই-ফার্মারের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি উপকৃত করবে। এই তহবিল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি ২০২৪ সালে তাদের আঞ্চলিক কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পর প্রথমবারের মতো এই খাতে প্রবেশ করল। ক্ষুদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলছে আই-ফার্মার। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের উচ্চমানের কৃষি উপকরণ, আর্থিক সহায়তা, কৃষি পরামর্শ, বিমা সুবিধা ও ন্যায্য বাজার সংযোগ নিশ্চিত করছে। কৃষক, সরবরাহকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আই-ফার্মার উৎপাদন বাড়াতে, আয় বাড়াতে ও টেকসই কৃষি চর্চা প্রসারে ভূমিকা রাখছে।

নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক লরা আলসেনাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনও সহজ শর্তে অর্থ ও মানসম্মত কৃষি উপকরণ পাওয়ার জন্য নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইফার্মারের উদ্ভাবনী মডেল কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই বিনিয়োগের ঘোষণা তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করতে এবং বাংলাদেশে আরও টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ বলেন, পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই অর্থায়নের ঘোষণা আমাদের আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দিতে সক্ষম করবে। এর মাধ্যমে আমরা আরও ভালো মানের কৃষি উপকরণ, সহজতর আর্থিক সহায়তা ও শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পারবো, যা সরাসরি কৃষকের আয় ও জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করা প্রভাবশালী উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করে আসছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এই তহবিলটি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগগুলোর জন্য এই তহবিল আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ