শব্দদূষণ রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তি‌নি বলেছেন, বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু করে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ‘নীরব এলাকাতে’ শব্দদূষণ রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে, জনগণকে জানাতে হবে, শব্দদূষণও এক ধরনের সহিংসতা, যার পরিণতি মারাত্মক।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের ৩য় সংশোধনীতে উপযুক্ত কার্যক্রম নির্ধারণের লক্ষ্যে’ আয়োজিত পরামর্শমূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তি‌নি এসব কথা বলেন।

উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, শব্দদূষণ রোধে আমাদের ‘লাউড কালচারের’ বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যেমনটি অন্যান্য সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, রাস্তার পাশে হঠাৎ করেই কেউ উচ্চস্বরে চিৎকার করে কথা বলা, যানবাহনে অতিরিক্ত হর্ন বাজানো কিংবা মাইক ব্যবহারে সীমালঙ্ঘন—এগুলো শুধু আইন লঙ্ঘন নয়, এগুলো আচরণগত অবক্ষয়ও বটে। আচরণ পরিবর্তনের জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি এখন সময়ের দাবি।

উপদেষ্টা আরো বলেন, প্রতিটি মোটরসাইকেল, প্রটোকল গাড়ি কিংবা ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহারকারীকেই বুঝতে হবে—তার অপ্রয়োজনীয় হর্ন বা গান চালানো অন্যের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। শব্দদূষণ থেকে রেহাই পেতে হলে আমাদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.

ফারহিনা আহমেদ ও অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. খায়রুল হাসান। কর্মশালায় বিভিন্ন দপ্তরের নীতিনির্ধারক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, পরিবেশবিদ এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু বাস্তবসম্মত পরামর্শ উঠে এসেছে, যা প্রকল্পের পরবর্তী ধাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের কৃষিখাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব ফেলে এমন উদ্যোগে অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক তহবিল ‘পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি’। কৃষকদের সহায়তা করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান আই-ফার্মারকে পাঁচ লাখ ডলারের এই সহায়তা দিচ্ছে তহবিলটি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই তহবিলের অর্থায়ন আই-ফার্মারের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র কৃষকদের সরাসরি উপকৃত করবে। এই তহবিল কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

এই বিনিয়োগের মাধ্যমে পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটি ২০২৪ সালে তাদের আঞ্চলিক কার্যক্রমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পর প্রথমবারের মতো এই খাতে প্রবেশ করল। ক্ষুদ্র কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করে তুলছে আই-ফার্মার। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকদের উচ্চমানের কৃষি উপকরণ, আর্থিক সহায়তা, কৃষি পরামর্শ, বিমা সুবিধা ও ন্যায্য বাজার সংযোগ নিশ্চিত করছে। কৃষক, সরবরাহকারী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে আই-ফার্মার উৎপাদন বাড়াতে, আয় বাড়াতে ও টেকসই কৃষি চর্চা প্রসারে ভূমিকা রাখছে।

নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক লরা আলসেনাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখনও সহজ শর্তে অর্থ ও মানসম্মত কৃষি উপকরণ পাওয়ার জন্য নানারকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আইফার্মারের উদ্ভাবনী মডেল কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই বিনিয়োগের ঘোষণা তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করতে এবং বাংলাদেশে আরও টেকসই ও স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ বলেন, পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির এই অর্থায়নের ঘোষণা আমাদের আরও বেশি কৃষককে সহায়তা দিতে সক্ষম করবে। এর মাধ্যমে আমরা আরও ভালো মানের কৃষি উপকরণ, সহজতর আর্থিক সহায়তা ও শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পারবো, যা সরাসরি কৃষকের আয় ও জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

পাইওনিয়ার ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে নেক্সাস ফর ডেভেলপমেন্ট জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করা প্রভাবশালী উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করে আসছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত এই তহবিলটি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বাংলাদেশে জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগগুলোর জন্য এই তহবিল আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে। এখন পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ