পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে মহানবীর (সা.) ওপর তাহাজ্জুদ নামাজ আবশ্যক ছিল। তিনি জীবনে কখনও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া থেকে বিরত হননি। আল্লাহ তাঁকে বলেছেন, ‘হে চাদরাবৃত, তুমি রাত্রিতে প্রার্থনার জন্য দাঁড়াও, রাত্রির কিছু অংশ বাদ দিয়ে, অর্ধেক অথবা তার কিছু কম বা বেশি। তুমি কোরআন পাঠ করো ধীরে ধীরে, স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ১-৪),
কিন্তু আমরা যারা তাঁর উম্মত, তাদের জন্য এই নামাজ অপরিহার্য নয়, বরং পড়লে অশেষ পুণ্যের ঘোষণা আছে।
আরবি ‘তাহাজ্জুদ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ রাত জাগা। ইসলামি পরিভাষায়, রাত দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে নামাজ আদায় করা হয়, তা-ই ‘সালাতুত তাহাজ্জুদ’ বা তাহাজ্জুদ নামাজ।
তাহাজ্জুদ কখন পড়তে হয়তাহাজ্জুদ কখন পড়তে হবে? কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালক তো জানেন তুমি কখনো রাত্রির প্রায় তিনের দুই ভাগ, কখনো অর্ধেক, আবার কখনো তিনের এক ভাগ জেগে থাকো। আর তোমার সঙ্গীদের একটি দলও জেগে থাকে। আল্লাহই দিন ও রাতের সঠিক হিসেব রাখেন। তিনি জানেন যে তোমরা এর সঠিক হিসেব রাখতে পারবে না। সে জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাপরবশ। তাই কোরআনের যতটুকু পাঠ করা তোমার পক্ষে সহজ তোমরা ততটুকু পড়ো। আল্লাহ তো জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেউ আল্লাহর অনুগ্রহের সন্ধানে সফরে যাবে, আর কেউ আল্লাহর পথে সংগ্রামে ব্যস্ত থাকবে; কাজেই কোরআন থেকে যতটুকু পড়া তোমাদের জন্য সহজ তোমরা ততটুকুই পড়ো করো। তোমরা নামাজ আদায় করো, জাকাত দাও আর আল্লাহকে দাও উত্তম ঋণ। তোমাদের আত্মার মঙ্গলের জন্য তোমরা যা-কিছু ভালো আগে পাঠাবে, পরিবর্তে তোমরা তার চেয়ে আরও ভালো ও বড় পুরস্কার পাবে আল্লাহর কাছ থেকে। আর তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো আল্লাহর কাছে। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ ( সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ২০)
মধ্যরাতে যখন লোকেরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন ঘুম থেকে জেগে ইবাদত-বন্দেগি করাই তাহাজ্জুদের উদ্দেশ্য। দুপুর রাত বা মধ্য রাত থেকে সুবহে সাদিকের আগপর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। সুবহে সাদিক হয়ে গেলে এ নামাজ আর পড়া যায় না। যদি রাত দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে জেগে ওঠার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে এশার নামাজের পর এবং বিতরের আগে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে নেওয়া যায়। তবে রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন‘আত-তাহিয়্যাতু’র মর্মবাণী কী১১ এপ্রিল ২০২৫তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ চার রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। মহানবী (সা.
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সব নফল ইবাদতের চেয়ে বেশি। তাহাজ্জুদ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ বান্দাদের প্রতি তাদের কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানান। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে নেমে এসে তাঁর বান্দাদের ডাকেন, ‘কে আছ যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে, যাতে আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দিতে পারি? কে আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে, যাতে আমি তাকে তার চাওয়া পূরণ করতে পারি? কে আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, যাতে আমি তাকে ক্ষমা করতে পারি?’ (বুখারি, হাদিস: ৬,৩২১ ) তাহাজ্জুদের নামাজ বান্দাকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত রাখে। শত্রুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যও তাহাজ্জুদের গুরুত্ব রয়েছে। তাহাজ্জুদ নামাজে রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের অনুসরণ তো হয়ই, এতে আত্মারও উন্নয়ন হয়। অবশ্য সারা রাত জেগে নামাজ পড়ার পর ভোররাতে বিশ্রাম করতে গিয়ে ফজরের নামাজ ছুটে যাওয়া উচিত নয়। কারণ, ফজরের জামাতের গুরুত্ব অনেক বেশি।
আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ত বল ছ ন র জন য ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার সামনে অনুসারীদের স্লোগান
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে যুবলীগ নেতা মো. নানু মিয়াকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের শারফিন সুপারমার্কেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে তার অনুসারীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়েছেন। নানু মিয়া নবীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নবীগঞ্জ পৌর যুবলীগের সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। ওইদিন সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে আগুন দিয়ে নাশকতার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরদিন গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নানু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, গ্রেপ্তারের পরপরই নানু মিয়ার ২৫-৩০ জন অনুসারী থানার সামনে জড়ো হয়ে মুক্তির দাবী করেন। এ সময় তারা ‘ওসির দুই গালে জুতা মার তালে তালে, ওসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘সারা বাংলার জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই কর’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেট অ্যাকশন, নানু ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।