জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদের ময়মনসিংহের ‘সুন্দর মহল’ নামে পরিচিত বাড়িটিকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নগরীর টাউন হলের পাশে বাড়িটির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন।

রওশন এরশাদের পৈতৃক এ বাড়িটি জাতীয় পার্টির কার্যালয় হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। গত বছরের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের কাছে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়। 

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে নার্স-মিডওয়াইফ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন 

চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল ফেনীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ফ্যাসিস্টদের সহচর রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা এ ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারকে গণহত্যায় পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে। এখন তারা গা বাঁচাতে সুশীলদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সুশীলতার আড়ালে তারা আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করতে চায়। 

ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নাকিব বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে ময়মনসিংহে যাদের অবদান ছিল তাদের একটি অংশ আজকে ‌‘দালাল মহল’-এর সামনে উপস্থিত হয়েছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যতগুলো বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে, সবগুলোতেই রওশন এরশাদ সমর্থন জানিয়েছেন শেখ হাসিনাকে। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।” 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ওয়ালিদ আহমেদ ওলি বলেন, “ছাত্র-জনতার ওপর আপনাদের নির্দেশে গুলি চলেছে। এখন আপনারা গর্তে লুকিয়েছেন। গর্ত থেকে আপনারা ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন। আপনাদের প্রতিহত করার জন্য ছাত্র-জনতা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। এই দেশকে আপনারা চাইলেও আর পেছনে নিয়ে যেতে পারবেন না। ছাত্র-জনতাকে আর কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।” 

‘সুন্দর মহল’-এর ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় ও ভেতরে অবস্থিত কেয়ারটেকার থাকার বাসাটি ভাঙা। সামনে দ্বিতীয় তলার বারান্দায় টানানো হয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড। দেয়াল ভাঙার ইটগুলোর পলেস্তারা খুলে পরিষ্কার করা হয়েছে। ‘সুন্দর মহল’ লেখাটি এখনো জ্বলজ্বলে থাকলেও ভবনের বিভিন্ন অংশে ‘দালাল মহল’ লিখে রেখেছে ছাত্র-জনতা। সরকার পতনের দিন ভবনটি ভাঙচুর করা হয়।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আউয়াল সেলিম বলেন, “সুন্দর মহলের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে রওশন এরশাদের মায়ের কবরটি রয়েছে। অনেকে এখন কারণে-অকারণে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। দলের অবস্থা এখন ভালো না। রওশন এরশাদদের নির্দেশে বাড়িতে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “পরিবারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি রেস্টুরেন্টের কাছে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ১২ বছরের জন্য তারা এখানে থাকতে পারবেন। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ টাকা।”

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ল ল মহল ছ ত র জনত র র জন

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

বিএসসি কৃষিবিদদের প্রতি চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কৃষি অনুষদের  শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনে পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এসব দাবি না মানলে সামনে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ার দেন তারা। 

আরো পড়ুন:

রাবিতে একই খাতের নামে একাধিকবার অর্থ আদায় বন্ধের দাবি

রাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহিন, সম্পাদক মিশন

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ‘তুমি কে আমি কে, কৃষিবিদ কৃষিবিদ’, ‘মেধাবীদের মূল্যায়ন, করতে হবে করতে হবে’, ‘কৃষিবিদের অধিকার, বুঝিয়ে দাও বুঝিয়ে দাও’, ‘মেধাবীদের যুদ্ধ চলছে চলবে’, ‘মেধাবীদের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের আট দফা দাবি অযৌক্তিক। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব দাবি গ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের সব ধরনের বৈষম্য দূর করা। অথচ বিএসসি কৃষিবিদদের সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দশম গ্রেডে চাকরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

তারা আরও বলেন, দেশের কৃষি উন্নয়নে বিএসসি কৃষিবিদরা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং উচ্চফলনশীল জাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। এ জায়গায় যদি মেধাবীদের মূল্যায়ন করা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কৃষিখাত হুমকির মুখে পড়বে।

এগ্ৰোনমি এবং এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম সায়েম বলেন, “আমাদের দাবিগুলো ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের বিপক্ষে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছর কঠোর পরিশ্রম করে একটা ডিগ্ৰি অর্জন করি। কিন্তু তারা একটা ডিপ্লোমা কোর্স করেই নিজেদের কৃষিবিদ দাবি করেন। যা আমাদের কৃষিতে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য অপমানজনক। যদি আমাদের পাঁচ দফা মানা না হয়, তাহলে আমরা ১ দফা দাবি তুলবো।”

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো-

১. প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম ছাড়া কোনোভাবেই পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রাখা যাবে না।

২. নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতীত নবম গ্রেডে পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না এবং ১০ম গ্রেডের পোস্টসমূহ গেজেটের আওতার বাইরে প্রচলিত কাঠামোতেই রাখতে হবে।

৩. দশম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/ সমমান) চাকরিতে বিএসসি এবং ডিপ্লোমা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

৪. কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক স্নাতক ব্যতীত নামের সাথে ‘কৃষিবিদ’ প্রত্যয় ব্যবহার করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

৫. কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) এর অধীনেই রাখতে হবে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুম শিক্ষার্থীদের ফেরত দাবি জবি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির
  • রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটুক্তিকারী ইবি কর্মকর্তার বহিষ্কার দাবি
  • ফটো জার্নালিস্টদের জন্য বরাদ্দ ভবনের একাংশ অবৈধ দখলের প্রতিবাদ
  • রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়ি সুন্দর মহলকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবি
  • সুন্দর মহলকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবি
  • জাবিতে অবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি
  • বোয়ালমারীতে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন
  • কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের
  • গায়েবি মামলায় ভুগছেন জবির ১১ শিক্ষার্থী