শরণার্থী শিবির, স্কুলে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ২০
Published: 23rd, April 2025 GMT
উত্তর গাজার বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়স্থল একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে। একইসময় ইসরায়েলি বাহিনী একটি শিশু হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার মৃতের সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের তুফাহ এলাকার ইয়াফা স্কুলে বিমান হামলায় তাঁবু এবং শ্রেণিকক্ষে আগুন লেগে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী উম মোহাম্মদ আল-হোয়াইতি বলেন, “আমরা ঘুমাচ্ছিলাম এবং হঠাৎ কিছু একটা বিস্ফোরিত হল, আমরা খুঁজতে শুরু করলে পুরো স্কুলে আগুন লেগে যায়। এখানে এবং সেখানে থাকা তাঁবুগুলোতে আগুন লেগেছে, সবকিছুই আগুনে পুড়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “মানুষ চিৎকার করছিল এবং পুরুষরা দগ্ধ পুরুষ ও শিশুদের বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছিটমহলজুড়ে পৃথক ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র গাজা শহরের দুররা শিশু হাসপাতালের উপরের ভবনেও আঘাত করেছে। এর ফলে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সৌর প্যানেল সিস্টেম ধ্বংস হয়েছে। হাসপাতালের হামলায় কেউ নিহত হয়নি।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার ২৫০ জনে পৌঁছেছে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৮৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ৬২ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।