ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-সহ বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারা। খবর ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের।

সাংবাদমাধ্যমটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় গভীর শোক ও নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য ভারতের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে এই ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি লিখেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে।’

আরো পড়ুন:

কাশ্মিরে হামলার সময় বেছে বেছে পুরুষদের গুলি চালানো হয়

কাশ্মিরে হামলার দায় স্বীকার করল টিআরএফ

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “কাশ্মির থেকে গভীরভাবে অশান্তির খবর আসছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের আরোগ্য কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন এবং গভীর সহানুভূতি রয়েছে। আমরা আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি ৷”

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি এই বর্বর সন্ত্রাসী হামলায় গভীরভাবে শোকাহত ৷ তিনি পোস্টে লেখেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলের ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে আছে ৷” 

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন, তিনি পহেলগাঁও-এ সন্ত্রাসী হামলায় গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, আহত, সরকার এবং সমগ্র ভারতীয় জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে পাঠানো এক বার্তায় পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই নৃশংস অপরাধের কোনো যুক্তি নেই ৷ এর অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে। তিনি সন্ত্রাসী হামলার মর্মান্তিক পরিণতির জন্য আন্তরিক সমবেদনাও প্রকাশ করেছেন। পুতিন সব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি করার জন্য রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের পহেলগাঁওয়ের কাছে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করেছে ৷ যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) গোষ্ঠীর সহযোগী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এক্স-এ পোস্ট করে শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জার্মানিও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই: ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে। এটি এমন এক চুক্তি যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ একত্রে গড়ে তুলবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই এবং আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা অন্বেষণ করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক।’ খবর বাসসের

প্রধান উপদেষ্টা আজ মঙ্গলবার কাতারের দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এটি এমন এক সামাজিক চুক্তি যেখানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তবে এখন এমন নানা হুমকি রয়েছে যা আমাদের উন্নয়নকে বিপথে ঠেলে দিতে পারে।

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা এমন এক সময় পার করছি যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে। নতুন নতুন নীতিমালা, প্রযুক্তি এবং শাসন পদ্ধতি আমাদের পৃথিবীকে দ্রুত রূপান্তরিত করছে, যা অতীতের অনেক অনুমানকে অচল করে দিচ্ছে।’

এমন প্রেক্ষাপটে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা সাহসী হই। একটি এমন পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র না হয় যে সে স্বপ্ন দেখতে না পারে, এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় না হয় যে তা অর্জন করা যায় না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয় যা আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাই। এটি এমন কিছু যা আমরা তৈরি করি। এবং আমাদের প্রত্যেকেরই এতে একটি করে ভূমিকা রয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের সক্ষমতাও ব্যাপক।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কাতার যেভাবে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে, তা দেখাচ্ছে কীভাবে একটি দেশ উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ মোকাবিলা করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস তার মূল বক্তব্যে সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।

তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে সময়োপযোগী ও চমৎকার এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

দোহায় আজ শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।

এই শীর্ষ সম্মেলন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও উদ্ভাবনী পন্থাগুলি আধুনিক টেকসই উন্নয়নে কীভাবে অবদান রাখতে পারে, তা অনুসন্ধান করা হয়—যা একটি আরও সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সাবধান করলেন মির্জা আব্বাস
  • কাশ্মিরে হামলার সময় বেছে বেছে পুরুষদের গুলি চালানো হয়
  • কাশ্মিরে হামলা: যে ছবি হৃদয় নাড়িয়েছে
  • ঢাকার দুই সিটিকে এক করার প্রস্তাব
  • কাশ্মিরে হামলার দায় স্বীকার করল টিআরএফ
  • কাতারে ড. ইউনূস: পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ
  • পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
  • ২ কিলোমিটার সড়ক, ২০ হাজার শ্রমিকের দুর্ভোগ 
  • আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই: ড. ইউনূস