তখন সবে লম্বা চুলের লোকটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব। ব্যাট হাতে তাঁর সেই হেলিকপ্টার শট প্রতিপক্ষের বোলারদের দুঃস্বপ্ন হতে শুরু করেছে। ২০০৪-০৫ মৌসুমে হঠাৎ আলোচনায় চলে আসা সেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানকে নিয়ে তখন থেকেই নানা গুঞ্জন!

ব্যাটসম্যানের নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাঠের চারদিকে তাঁর ছক্কা আর চারের ফুলঝুরি দেখেই হয়তো সেই গুঞ্জনের শুরু। তাঁর অবিশ্বাস্য এনার্জি দেখে সবাই অবাক! এই ছেলে খায় কী? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। সেই উত্তরও খুঁজে বের করে ফেললেন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। ধোনির ব্যাটে এত পাওয়ার নাকি আসে প্রতিদিন ‘পাঁচ লিটার মিল্ক ডোজ’ থেকে! কে জানে, মাঠের চারপাশে তাঁকে বল ওড়াতে দেখেই হয়তো সমর্থকেরা ধরে নিয়েছিলেন এই লোকটা রক্তে নয়, দুধে চলে!

আরও পড়ুনআইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ, যা বলল রাজস্থান১ ঘণ্টা আগে

আসলেই কি তা-ই? উত্তরটা এবার ধোনি নিজেই দিলেন। সম্প্রতি একটা প্রচারণা অনুষ্ঠানে গিয়ে। যে অনুষ্ঠানের ছোট ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করা হয়েছে ধোনির দল চেন্নাই সুপার কিংসের এক্স হ্যান্ডলেই।
মঞ্চে বসে থাকা ধোনিকে হঠাৎ সঞ্চালক প্রশ্ন করলেন, ‘আপনার সম্পর্কে শোনা সবচেয়ে হাস্যকর গুজব কোনটা?’

একটু হেসে ধোনি উত্তর দিলেন, ‘আমি নাকি দিনে পাঁচ লিটার দুধ খাই!’
উত্তর শুনে সঞ্চালক নিজেই যেন অবাক—‘মানে এই কথাটা সত্যি না?’
ধোনি এক গাল হেসে বলেন, ‘আরে না। হয়তো এক লিটার খেতাম, তা–ও সারা দিন মিলিয়ে। বাকি চার লিটারের কথা বাড়াবাড়ি। এটা তো যে কারও জন্যই বেশি!’

আরও পড়ুনকোহলি–আনুশকা থেকে পন্ত–ইশা: ভারতীয় ক্রিকেটারদের ‘লাভ স্টোরি’২ ঘণ্টা আগে

গুজবের ফর্দ এখানেই থামেনি। সঞ্চালকের পরবর্তী প্রশ্ন, ‘ধোনি কি সত্যিই ওয়াশিং মেশিনে লাচ্ছি বানিয়ে খেতেন?’
মানে মিক্সার জারে বানানো অল্প লাচ্ছিতে তাঁর চলত না? এটাও সেই সময়ের গুজব। ধোনি উত্তর দিয়েছেন এই প্রশ্নেরও, ‘সত্যি কথা হচ্ছে, আমি লাচ্ছিই খাই না রে ভাই।’
কে জানে, ধোনির সেই শুরুর দিকের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স আর তাঁর ডাকাবুকো চেহারা দেখেই হয়তো লোকে এমন সব আজগুবি গুজব ছড়িয়েছিল।

আবার চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়কত্ব করছেন ধোনি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টেসলার মুনাফা হ্রাসের পর সরকারি দায়িত্ব কমিয়ে ফেলার ঘোষণা মাস্কের

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার মুনাফা ও আয়—দুটোই কমেছে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে নিজের ভূমিকা কমানোর কথা বলেছেন টেসলাপ্রধান ইলন মাস্ক।

মাস্ক হোয়াইট হাউসে একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চরিত্র হয়ে ওঠার কারণে টেসলার বিক্রি কমে গেছে এবং প্রতিষ্ঠানটি তীব্র প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার টেসলা কর্তৃপক্ষ বলেছে, গত বছরের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি থেকে তাদের আয় ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মুনাফা কমেছে ৭০ শতাংশের বেশি।

টেসলা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বলেছে, এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছে, তাদের পণ্যের চাহিদা অর্থপূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ও আয়ে সাম্প্রতিক এই পতন। মাস্ক নিজেও স্বীকার করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ওপর থেকে তাঁর মনোযোগ সরে গেছে।

ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ও আয়ে সাম্প্রতিক এই পতন। মাস্ক নিজেও স্বীকার করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ওপর থেকে তাঁর মনোযোগ সরে গেছে।

ট্রাম্পের এবারের নির্বাচনী প্রচারকালে তাঁর নির্বাচনী তহবিলে ২৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছেন মাস্ক। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর নবগঠিত সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দেন মাস্ককে। ডিওজিই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও জনশক্তি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।

মাস্ক বলেন, ‘আগামী মাস থেকে ডিওজিইতে আমার সময় বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমতে শুরু করবে। সপ্তাহে এক বা দুই দিন সরকারি কাজে ব্যয় করব। তা–ও যত দিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইবেন এবং ওই বিভাগ কার্যকর থাকবে, তত দিন তা করব।’

মাস্কের রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ এবং টেসলাকে বর্জনের ডাক উঠেছে।

মাস্ক এর দায় অবশ্য ওই সব মানুষের ওপর চাপিয়েছেন, যাঁরা ‘তাঁকে ও ডিওজিই দলের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করছেন’। তিনি ডিওজিইতে তাঁর কাজকে খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, সরকার তাঁকে যে কাজ দিয়েছে, তার বেশির ভাগই করা হয়ে গেছে।

বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে টেসলা আয়-ব্যয়ের নতুন যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে মোট আয় ১ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার দেখানো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এটি ৯ শতাংশ কম। প্রথম ত্রৈমাসিকে বিশেষজ্ঞরা টেসলার ২ হাজার ১১০ কোটি ডলার আয় হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। ক্রেতা আকর্ষণের জন্য টেসলা পণ্যের দামও কিছুটা কমিয়েছে।

আগামী মাস থেকে ডিওজিইতে আমার সময় বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমতে শুরু করবে। সপ্তাহে এক বা দুই দিন সরকারি কাজে ব্যয় করব। তা-ও যত দিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইবেন এবং ওই বিভাগ কার্যকর থাকবে, তত দিন তা করব।ইলন মাস্ক, টেসলার সিইও

টেসলা ইঙ্গিত দিয়েছে, চীনের ওপর ট্রাম্পের উচ্চ হারে পাল্টা শুল্কারোপও প্রতিষ্ঠানটির জন্য বড় আঘাত হয়ে এসেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে টেসলা যে গাড়ি বিক্রি করে, সেগুলো সেখানেই সংযোজন করা হয়। কিন্তু সেসব গাড়ির অনেক যন্ত্রাংশ তৈরি হয় চীনে। চীন থেকে গাড়ির যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে আসে।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, এভাবে বাণিজ্যনীতির দ্রুত পরিবর্তনের ফলে টেসলার সরবরাহব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং দাম বেড়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুনইলন মাস্ক শিগগির দায়িত্ব ছাড়ছেন, ঘনিষ্ঠদের বলেছেন ট্রাম্প০২ এপ্রিল ২০২৫

বাণিজ্য বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েকজনের সঙ্গে মাস্কের বিরোধও এখন প্রকাশ্য, যাঁদের একজন ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো।

এ মাসের শুরুতে নাভারোকে ‘নির্বোধ’ বলেছিলেন মাস্ক। সম্প্রতি টেসলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাভারো বলেন, ‘মাস্ক একজন গাড়ি নির্মাতা নন, বরং অনেক ক্ষেত্রে তিনি একজন গাড়ি সংযোজনকারী।’

গতকাল মাস্ক বলেন, তিনি ভেবেছিলেন, টেসলার ওপর শুল্কের প্রভাব খুব একটা পড়বে না। কারণ, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও চীনে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় সরবরাহব্যবস্থা আছে। তিনি বলেন, ‘আমি উচ্চ শুল্ক নয়; বরং নিম্ন শুল্কের পক্ষে পরামর্শ দেওয়া অব্যাহত রাখব। আমার পক্ষে এটুকুই করা সম্ভব।’

আরও পড়ুনডিওজিইর দায়িত্ব ছাড়ার পরও ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন মাস্ক০৩ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ