খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে এসেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার। আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে পৌঁছান।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সামনে বসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। কীভাবে ছয় দফা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের এক দফা দাবি পরিণত হলো, সেই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানান। তাঁরা উপাচার্যের অপসারণ ছাড়া কোনোভাবেই অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না বলেও উপদেষ্টাকে জানান।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ফোন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার।

এদিকে আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্যের দল আজ কুয়েটে আসার কথা রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে গত সোমবার বিকেল ৪টা থেকে ৩২ জন ছাত্র আমরণ অনশন শুরু করেন, তাঁদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন ২৬ জন শিক্ষার্থী অনশনে আছেন।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে তালা ভেঙে আবাসিক হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন এবং ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোয় প্রবেশ করেন। ১৬ এপ্রিল দুপুরে মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয় এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদত য গ র উপ চ র য উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা, ক্লাস বর্জন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং শিক্ষার্থীদের চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস বর্জন ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও এসেসমেন্ট বর্জনের পাশাপাশি দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। যা নগরীর জিরো পয়েন্টে গিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচিতে রূপ নেয়। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম ব্যাচের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

খুবি শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়েটের ঘটনাবলী শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয় নয়। এটি দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, “কুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবি আমাদেরও দাবি। আমরা চাই শিক্ষাঙ্গনে হয়রানি, দমনপীড়ন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অবসান হোক।”

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিলে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জরুরি সভা ডেকে একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং ২ মে হল ও ৪ মে ক্লাস চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, শিক্ষার্থীরা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং ১৫ এপ্রিল হলের তালা ভেঙে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। সর্বশেষে গত ২১ এপ্রিল কুয়েটের ৩২ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

ঢাকা/হাসিব/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা, ক্লাস বর্জন
  • মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট, অনশন প্রত্যাহার
  • মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে চবি চারুকলা ইনিস্টিটিউট, অনশন প্রত্যাহার
  • কুয়েটে শিক্ষা উপদেষ্টা, কথা বলছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
  • কুয়েট ভিসিকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের
  • তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করল কুয়েটের ছাত্রীরা, শিক্ষা উপদেষ্টার ফোন
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর
  • কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন শুরু