এক কড়ইগাছের নিচে কাঁচি-ক্ষুর নিয়ে পণেশ কাটিয়ে দিলেন ৩৯ বছর
Published: 23rd, April 2025 GMT
বৈশাখের রোদঝলমলে সকাল। শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের ভোগাই নদ সেতুর পূর্ব পাশে রাস্তার ধারে ক্রমেই বাড়ছে মানুষের আনাগোনা। এই কোলাহলের মাঝে একটি কড়ইগাছের ছায়ায় কাঠের টুলে বসে গ্রাহকের জন্য অপেক্ষা করছেন পণেশ চন্দ্র শীল (৬৭)। প্রায় চার দশক এই গাছের নিচে বসে তিনি চুল কাটার কাজ করছেন।
আধুনিক সেলুনের চাকচিক্য কিংবা বিলাসিতা—কোনোটিরই উপস্থিতি নেই পণেশের সেলুনে। নালিতাবাড়ী বাজারে খোলা আকাশের নিচে গড়ে তোলা এই সেলুনের সবচেয়ে প্রাচীন সাক্ষী কেবল কড়ইগাছটি। পণেশের কাছে নিম্ন আয়ের মানুষ কম খরচে চুল কাটাতে পারছেন।
বাবা পরেশ চন্দ্র শীল ও চাচাদের দেখাদেখি পণেশ ১২-১৩ বছর বয়সে হাতে কাঁচি ও ক্ষুর তুলে নেন। সেই থেকে শুরু। এরপর এই পেশায় কেটে গেছে তাঁর ৫৪ বছর। এর মধ্যে ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি এই কড়ইগাছের নিচে বসে কাজ করছেন। এক গাছের নিচে ৩৯ বছর কাটিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে পণেশ চন্দ্র বলেন, আগে তো এখনকার মতো এত সেলুন ছিল না। সবাই খোলা জায়গায় বসে চুল কাটাত। সময়ের স্রোতে অনেকেই পেশা বদলেছেন। তিনি খোলা আকাশের নিচে এই গাছের ছায়ায় রয়ে গেছেন।
বৃষ্টির দিনে মাথার ওপর পলিথিন ঝুলিয়ে কিংবা ছাতা মাথায় দিয়ে কাজ চালিয়ে যান পণেশ। ঝড়-বৃষ্টির তীব্রতা বাড়লে কাঁচি-ক্ষুর ব্যাগে ভরে আশ্রয় নেন পরিচিত কারও ঘরের বারান্দায়। দুপুর হলে পুরোনো বাইসাইকেলে চেপে বাড়ি যান, খেয়ে আবার বসে পড়েন কড়ইগাছের নিচে। এই নিয়মেই তাঁর সকাল থেকে সন্ধ্যা কাটে। প্রতিদিন তাঁর ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়।
নালিতাবাড়ী শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজারের কাচারিপাড়া মহল্লায় পণেশ চন্দ্র শীলের সংসার। চার সন্তানের মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলে সুজন শীল (৩৮) ও লোকনাথ শীল (৩২) সামান্য লেখাপড়া করলেও বাবার পেশাকেই বেছে নিয়েছেন। তবে তাঁরা বাবার মতো ফুটপাতে নয়; শহরে নিজেদের সেলুন খুলে কাজ করেন। তাঁদের রোজগারেই এখন কোনোমতে চলে সংসার।
জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে জীবন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই পণেশের। তিনি বলেন, জীবন তো প্রায় শেষ হয়ে এল। এখন আর তেমন কোনো দুশ্চিন্তা করেন না। নিজের কাজ করেন, সেটাই শান্তি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এক কড়ইগাছের নিচে কাঁচি-ক্ষুর নিয়ে পণেশ কাটিয়ে দিলেন ৩৯ বছর
বৈশাখের রোদঝলমলে সকাল। শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের ভোগাই নদ সেতুর পূর্ব পাশে রাস্তার ধারে ক্রমেই বাড়ছে মানুষের আনাগোনা। এই কোলাহলের মাঝে একটি কড়ইগাছের ছায়ায় কাঠের টুলে বসে গ্রাহকের জন্য অপেক্ষা করছেন পণেশ চন্দ্র শীল (৬৭)। প্রায় চার দশক এই গাছের নিচে বসে তিনি চুল কাটার কাজ করছেন।
আধুনিক সেলুনের চাকচিক্য কিংবা বিলাসিতা—কোনোটিরই উপস্থিতি নেই পণেশের সেলুনে। নালিতাবাড়ী বাজারে খোলা আকাশের নিচে গড়ে তোলা এই সেলুনের সবচেয়ে প্রাচীন সাক্ষী কেবল কড়ইগাছটি। পণেশের কাছে নিম্ন আয়ের মানুষ কম খরচে চুল কাটাতে পারছেন।
বাবা পরেশ চন্দ্র শীল ও চাচাদের দেখাদেখি পণেশ ১২-১৩ বছর বয়সে হাতে কাঁচি ও ক্ষুর তুলে নেন। সেই থেকে শুরু। এরপর এই পেশায় কেটে গেছে তাঁর ৫৪ বছর। এর মধ্যে ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি এই কড়ইগাছের নিচে বসে কাজ করছেন। এক গাছের নিচে ৩৯ বছর কাটিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে পণেশ চন্দ্র বলেন, আগে তো এখনকার মতো এত সেলুন ছিল না। সবাই খোলা জায়গায় বসে চুল কাটাত। সময়ের স্রোতে অনেকেই পেশা বদলেছেন। তিনি খোলা আকাশের নিচে এই গাছের ছায়ায় রয়ে গেছেন।
বৃষ্টির দিনে মাথার ওপর পলিথিন ঝুলিয়ে কিংবা ছাতা মাথায় দিয়ে কাজ চালিয়ে যান পণেশ। ঝড়-বৃষ্টির তীব্রতা বাড়লে কাঁচি-ক্ষুর ব্যাগে ভরে আশ্রয় নেন পরিচিত কারও ঘরের বারান্দায়। দুপুর হলে পুরোনো বাইসাইকেলে চেপে বাড়ি যান, খেয়ে আবার বসে পড়েন কড়ইগাছের নিচে। এই নিয়মেই তাঁর সকাল থেকে সন্ধ্যা কাটে। প্রতিদিন তাঁর ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়।
নালিতাবাড়ী শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজারের কাচারিপাড়া মহল্লায় পণেশ চন্দ্র শীলের সংসার। চার সন্তানের মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলে সুজন শীল (৩৮) ও লোকনাথ শীল (৩২) সামান্য লেখাপড়া করলেও বাবার পেশাকেই বেছে নিয়েছেন। তবে তাঁরা বাবার মতো ফুটপাতে নয়; শহরে নিজেদের সেলুন খুলে কাজ করেন। তাঁদের রোজগারেই এখন কোনোমতে চলে সংসার।
জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে জীবন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই পণেশের। তিনি বলেন, জীবন তো প্রায় শেষ হয়ে এল। এখন আর তেমন কোনো দুশ্চিন্তা করেন না। নিজের কাজ করেন, সেটাই শান্তি।