Prothomalo:
2025-04-23@06:29:51 GMT

বিমা কেন করবেন

Published: 23rd, April 2025 GMT

বিমা বলতে সাধারণত ধারণা করা হয়, মানুষের মৃত্যুর পর বিমার টাকা পাওয়া যায়। জীবিত মানুষের সঙ্গে এর তেমন সম্পর্ক নেই। ফলে বিমা মানে মৃত্যুর পর সুবিধা পাওয়া যাবে—এমন ধারণা সমাজে প্রচলিত ছিল। কিন্তু সেই দিন আর নেই। বিমা কোম্পানিগুলো নতুন নতুন অনেক ধরনের পণ্য নিয়ে আসছে। এসব পণ্যের সঙ্গে সহযোগী বিভিন্ন বিমাও আছে।

মূল বিমার সঙ্গে স্বাস্থ্য, দুর্ঘটনা, শিক্ষাবিমা নেওয়া যায়। শুধু মূল বিমার সঙ্গে সহযোগী বিমা হিসেবেই নয়; এখন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাবিমা আলাদা বা পৃথকভাবেও নেওয়া যাচ্ছে। অনেক অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যৎ শিক্ষা ব্যয়ের চিন্তা করে এসব বিমা নিচ্ছেন। এ ছাড়া এককভাবে স্বাস্থ্যবিমাও বিক্রি করছে দেশের বেশ কয়েকটি বিমা কোম্পানি। সামগ্রিকভাবে দেশের বিমাপণ্যের বৈচিত্র্য এসেছে। সেই সঙ্গে এসেছে ব্যাংকাস্যুরেন্স। অর্থাৎ ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি যৌথভাবে এই সেবা দিচ্ছে।

বিমা করার আগে মনে রাখা দরকার, বিমা সাধারণ সঞ্চয় নয়, বরং বিমা হলো একধরনের নিরাপত্তা। মানুষকে নির্দিষ্ট কিছু অনিশ্চয়তার বিপরীতে নিশ্চয়তা দেয় বিমা। সেই সঙ্গে আছে সঞ্চয়। অর্থাৎ এটি কার্যত নিরাপত্তা ও সঞ্চয়ের মিশ্রণ। সেই সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হলো, বিমা আয়করমুক্ত।

মানুষের জীবনের বৈচিত্র্যপূর্ণ চাহিদা পূরণে জীবনবিমা কোম্পানিগুলোও উদ্ভাবনী পণ্য নিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে জীবনবিমা পলিসি গ্রহণ ও প্রিমিয়াম দেওয়া আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। এমনকি প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্যও এখন আর অফিস যেতে হয় না। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে প্রিমিয়াম জমা দেওয়া যাচ্ছে। আছে পলিসিসংক্রান্ত এসএমএস সেবা ও হটলাইন। যদিও সব কোম্পানি এই সেবা দিচ্ছে না।

বিমা খাতের ডিজিটালাইজেশন কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলালিংক মোবাইল ফোনের গ্রাহকেরা পছন্দের বান্ডিল প্যাক রিচার্জ করে জীবনবিমা ও স্বাস্থ্যবিমা পলিসি গ্রহণ করতে পারছেন। গার্ডিয়ান লাইফ এই সেবা দিচ্ছে। এ ছাড়া জীবনবিমা পলিসিতে ভ্রমণবিমাকে সহযোগী বিমা হিসেবে যোগ করা যেতে পারে। এই সহযোগী বিমা গ্রাহকদের ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত বিমাসেবা দেবে। সেই সঙ্গে মূল বিমার সঙ্গে হাসপাতাল, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন খাতে কয়েক বছরে বেশ কিছু উদ্ভাবনী পণ্য নিয়ে এসেছে দেশের বিমা কোম্পানিগুলো। সেই সঙ্গে প্রথাগত বেশ কিছু বিমাপণ্যও বেশ কার্যকর। তার মধ্য থেকে কয়েকটি বিমাপণ্যের বিবরণ দেওয়া হলো:

স্বাস্থ্যবিমা

বাংলাদেশে চিকিৎসা বাবদ ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ—৭২ শতাংশ। এর অর্থ হলো, চিকিৎসা বাবদ গড়ে ১০০ টাকা ব্যয় হলে তার ৭২ শতাংশই খরচ করছেন ব্যক্তি। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এই খরচ মালদ্বীপে ১৮, ভুটানে ২৫, শ্রীলঙ্কায় ৪২, নেপালে ৪৭, পাকিস্তানে ৫৬ ও ভারতে ৬২ শতাংশ। বিগত প্রায় দেড় যুগের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্বাস্থ্য খাত বরাবরই অবহেলার শিকার। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্যবিমা বেশ কার্যকর হতে পারে বলেই মনে করেন বিমা খাত বিশেষজ্ঞরা।

দেশে গুরুতর রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন, তাঁদের সিংহভাগই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সরকারি হাসপাতালে গুরুতর রোগের চিকিৎসা মেলে না বললেই চলে। বাস্তবতা হলো, বড় কোনো অসুখে পরিবার পথে বসে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে দেশে স্বাস্থ্যবিমার ব্যাপক প্রসারের সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। স্বাস্থ্যবিমা যেমন মূল বিমা পলিসির সঙ্গে নেওয়া যায়, তেমনি পৃথক বিমা পলিসি হিসেবেও নেওয়া যায়। ডেলটা লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ, মেটলাইফসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানিগুলো এই বিমাপণ্য দিয়ে থাকে।

শিক্ষাবিমা

প্রত্যেক মা–বাবাই চান, সন্তান উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হোক, যেন তাঁরা জীবনে সফলতা অর্জন করে নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করতে পারেন। কিন্তু সঠিক আর্থিক পরিকল্পনার অভাবে অথবা আকস্মিক দুর্ঘটনার কারণে অনেকেই সন্তানের জন্য উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হন। মেটলাইফসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি এই বিমাসুবিধা নিয়ে এসেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পলিসিগ্রহীতার মৃত্যু হলে দায় বাদ দিয়ে এককালীন প্রদেয় হিসেবে পুরো বিমা অঙ্কে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিমাগ্রহীতার মৃত্যু না হলে সন্তানের শিক্ষালাভ সহজতর করতে নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্দিষ্ট হারে বিমা অঙ্ক ফেরত দেওয়া হয়।

পেনশন বিমা

আপনার অবসরজীবনের আর্থিক নিরাপত্তা দিতে দেশের বিমা কোম্পানিগুলো পেনশন বিমাসেবাও দিচ্ছে। কর্মজীবনে নির্দিষ্ট সময় প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে অবসরকালে নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা দেয় এই বিমা। এই পলিসির প্রধান সুবিধাগুলো হলো সরকারের পেনশন স্কিমের মতো নির্দিষ্ট অঙ্কের পেনশন–সেবা নেওয়া যায়। প্রিমিয়াম দেওয়ার সময় প্রয়োজনে ঋণসুবিধা পাওয়া যায়। অতিরিক্ত প্রিমিয়ামের মাধ্যমে দুর্ঘটনাজনিত বিমাসেবা নেওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত প্রিমিয়ামের মাধ্যমে জীবনকালে বিমাসুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা যোগ করা যায়। অর্থাৎ নিয়মিত পেনশনের সঙ্গে বিমাসুবিধার সংমিশ্রণ ঘটেছে এই বিমায়।

প্রবাসীদের বিমা

দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন প্রজন্মের কোম্পানি গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স গার্ডিয়ান প্রবাসী প্রহরী বিমা পলিসি নিয়ে এসেছে। গার্ডিয়ান প্রবাসী প্রহরী প্রবাসে কর্মরত কর্মীদের এবং তাঁদের পরিবারের আর্থিক ও ভবিষ্যতের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। এককালীন স্বল্প প্রিমিয়ামে নেওয়া যাবে এই পলিসি। এর আওতায় কোনো প্রবাসী কর্মী যদি কর্মজীবনে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে মনোনীতকে এককালীন অর্থ দেওয়া হবে এবং তাঁর মরদেহ দেশে আনার জন্য আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। এ ছাড়া অসুস্থতায় হাসপাতালে চিকিৎসাসুবিধা ও প্রবাসে চাকরি হারানোর পর আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

ব্যাংকাস্যুরেন্স: বিমা বিক্রির আধুনিক পদ্ধতি

এ ছাড়া দেশে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা চালু হয়েছে। এটি বিমা বিক্রির সবচেয়ে আধুনিক প্রক্রিয়া, এই বিমা বিক্রি হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকগুলো তাদের বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক এবং গ্রাহকের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে জীবনবিমা ও সাধারণ বিমা—উভয় ধরনের পলিসি বিক্রি করতে পারে। এটা নতুন কোনো বিমাপণ্য নয়, বরং বিদ্যমান যেসব বিমা পলিসি আছে, সেগুলো বিক্রির আধুনিক পদ্ধতি।

ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ব্যাংকাস্যুরেন্স বিভাগের প্রধান মো.

আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই বিমার মূল সুবিধা হলো, বিমা পরিচালনার অর্থাৎ বিপণন ব্যয় অনেকটা কমে যাওয়া। প্রথাগত বিমা কোম্পানি যেভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে যায়; এ ক্ষেত্রে তা করতে হয় না। ব্যাংকের গ্রাহকদের বিমায় উদ্বুদ্ধ করা হয়। ফলে প্রথাগত বিমা পলিসির চেয়ে এই সেবায় গ্রাহকেরা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। বিষয়টি গ্রাহকদের আকৃষ্ট করবে বলে তিনি মনে করেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ব্যাংক এবং বিমা কোম্পানি যৌথভাবে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা দিচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আর থ ক জ বনব ম দ র ঘটন প রব স এই ব ম এই স ব সহয গ প নশন

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে ত্বকে টোনার ব্যবহার কেন জরুরি ?

গরমের দিনে ঘাম,ধুলা, দূষণে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় বাইরে বের হলে ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার খুবই জরুরি। এর পাশাপাশি এই মৌসুমে ত্বকের পরিচর্যায় স্কিন মিস্ট এবং স্কিন টোনার প্রয়োজন। ত্বকে আর্দ্র বজায় রাখতে সাহায্য করে এই দুই উপকরণ। এছাড়াও ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে এই দুই পদ্ধতি। বাড়িতেই খুব সহজে আপনি ফেস মিস্ট এবং স্কিন টোনার বানিয়ে নিতে পারবেন। তাহলে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে না। এই দুই পদ্ধতি র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফেকশন,ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, জ্বালাভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

যেভাবে বানাবেন ফেস মিস্ট ও টোনার 

গোলাপজল: বাজারে অনেক কোম্পানিরই গোলাপজল কিনতে পাওয়া যায়। বাড়িতে পানির মধ্যে গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে হালকা আঁচে বেশ খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে পানি ছেঁকে নিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন। মেকআপ করার আগে হোক, ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর, বাড়ির বাইরে থাকলেও তুলোর মধ্যে অল্প করে এই তরল স্প্রে করে নিয়ে ভালভাবে মুখ মুছে নিন। এতে ত্বক থাকবে আর্দ্র, মোলায়েম। ত্বকে আসবে সজীবতা। 

শসা, পুদিনা পাতা: ছোট ছোট টুকরো করে শসা কেটে নিন। পানির মধ্যে পুদিনা পাতা আর এই শসার টুকরো দিয়ে রেখে দিন স্প্রে বোতলে। ফেস মিস্ট হিসেবে দারুণভাবে কাজ করবে এই উপকরণ। অনেকে  ডিটক্স ড্রিঙ্ক হিসেবেও এই পানীয় খেয়ে থাকেন নিয়মিত। গরমের সময় এই পানীয় খেতে পারলে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং শরীরের ভিতরে জমে থাকা যাবতীয় টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। যার ফলে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হবে।

গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি : এই দু'ধরনের চায়ের টি-ব্যাগ পানিতে ফুটিয়ে নিন। চাইলে গরম পানিতে টি-ব্যাগ ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এরপর ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ছেঁকে স্প্রে বোতলে ভরে নিন। গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি থেকে থেকে দুই ধরনের তরল আপনি টোনার এবং ফেস মিস্ট দু'ভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন। এই উপকরণ ত্বকের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করবে । নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহারে ত্বক হবে আর্দ্র, মোলায়েম এবং উজ্জ্বল। ত্বকে সজীবতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই মিশ্রণ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ