মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বালিয়াটি ইউনিয়নের বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে যেন খাল দখলের মহোৎসব চলছে। খালজুড়ে অর্ধশতাধিক বাঁধ দিয়ে রাস্তা ও বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে খালটি ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
খাল ভরাটের বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাটুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমদের কার্যালয়ে গেলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রায় ১ ঘণ্টা কার্যালয়ের বাইরে বসিয়ে রেখে কথা না বলেই বেরিয়ে যান।
জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাঙ্গাবাড়ী থেকে ভাটারা হয়ে বাগবাড়ি শিমুলিয়া দিয়ে বনমালিপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি বয়ে গেছে। এটির নাম বাঁকা খাল। শতবর্ষী খালটির বেশির ভাগ ভরাট করে বাড়িঘর ও রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কিছু জায়গায় এখনও খালের চিহ্ন দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, এই খাল দিয়ে এক সময় মালবাহী পালতোলা নৌকা চলত। খালের পানি দিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে সেচ দিতেন। বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে কৃষিজমি আবাদের জন্য প্রস্তুত করত। সেই খালটি এখন মৃত। দখলকারীরা বাঁধ দিয়ে দখল করায় এই খাল দিয়ে আর পানি প্রবাহিত হয় না। ফলে আগে কৃষক দুইবার ফসল ফলাতে পারলেও এখন একবার ফসল ফলায়।
গতকাল মঙ্গলবার বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আধা কিলোমিটার খালের ওপর ১১টি বাঁধ দিয়ে রাস্তা ও বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় আব্দুস সামাদ মিয়া, আবুল হোসেন, রফিক হোসেন, শফিক মিয়া, শহিদুল ইসলাম, জলিল মিয়াসহ অনেকে।
বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ফজল হক বলেন, এখানে বড় নদী ছিল। সেই নদী খালে পরিণত হয়। এখন খালটিও দখল হয়ে গেছে। খাল ভরাট করে অনেকেই রাস্তা, বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছে। খালটি প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে ভরাট ও দখল হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, যারা খাল দখল করে রাস্তা তৈরি করেছে– তারা এলাকার প্রভাবশালী। তারা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করে খাল দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে।
প্রবাসী আবুল হোসেনের ছেলে সামির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার করেন। সাঁকো ভেঙে গেলে খাল পারাপারে সমস্যা হয়। তাই খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন।
আব্দুস সামাদ মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুম এলে তাদের কষ্ট বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় কলাগাছের ভেলা বানিয়ে খাল পারাপার হতে হয়। তাই উপায় না পেয়ে খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করে চলাচল করেছেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়ার ইউএনও ইকবাল হোসেন বলেন, সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে দখলদারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খালটি উদ্ধার করে পানি প্রবাহের ব্যবস্থাও করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এক বছর আগে সুইমিংপুলে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে শিক্ষার্থী সোয়াদ হকের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। গত বছরের ২২ এপ্রিল সোয়াদ হক মারা গিয়েছিলেন।
সোয়াদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়ার আয়োজন করা হয়। এরপর তাঁর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। সোয়াদ হক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ৫টি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো সোহাদের মৃত্যুর যথাযথ কারণ তদন্তপূর্বক নির্ণয় করা। সুইমিংপুলের সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করে তা পুনরায় চালু করা। সাঁতারসহ শরীরচর্চার বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হওয়া।
সুইমিংপুল এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা এবং পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করা ও প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
দোয়া মাহফিলে দর্শন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি২৩ এপ্রিল ২০২৪