বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা, ইসলামপন্থী নেতা নিহত
Published: 22nd, April 2025 GMT
ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে জড়িত লেবানিজ ইসলামপন্থী গোষ্ঠী জামা ইসলামিয়ার এক সামরিক নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেশটির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেবানিজ সিভিল ডিফেন্স জানায়, বৈরুতের ২০ কিলোমিটার দক্ষিণের উপকূলীয় শহর দামৌরের কাছে ইসরায়েলের ড্রোন একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরে উদ্ধারকর্মীরা গাড়িটি থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা আরও জানান, এ হামলায় জামা ইসলামিয়ার সামরিক শাখা আল-ফজর ফোর্সেসের একজন নেতা হুসেইন আতৌয়ি নিহত হয়েছেন।
গোষ্ঠীটি ঘনিষ্ঠভাবে হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে জড়িত।
গোষ্ঠীটি এক বছরের বেশি সময় ধরে সীমান্তবর্তী সংঘাত চলাকালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক হামলার দায় স্বীকার করেছে। নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির আগে চলমান দুই মাসের পূর্ণ যুদ্ধেও অংশ নেয় তারা।
ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর থেকে লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মার্চের ২২ ও ২৮ তারিখে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে দুটি রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে এর দায় কেউ স্বীকার করেনি।
লেবানিজ সেনাবাহিনী গত সপ্তাহে জানিয়েছে, এ হামলায় জড়িত থাকা লেবানন ও ফিলিস্তিনের কয়েকজন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী যাঁদের ভেতর তিনজন হামাস সদস্য রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিমান হামলায় হত্যা করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ইসর য় ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
উপাচার্যের একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বারবার অশান্ত হয়ে উঠছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন উপাচার্য নিযুক্ত হওয়ার পর গত ৭ মাসে একাধিকবার তাঁর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে তারা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন। ড. মুহসিনকে পুনর্বহাল ও উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
ড. মুহসিন জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং উপাচার্যের আস্থাভাজন শিক্ষকরা আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন– তাঁর একটি ভার্চুয়াল সভার অডিও গত শনিবার ভাইরাল হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ওই সভাটি করেছিলেন। অডিও ভাইরাল হওয়ার পর ড. মুহসিনকে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও পরে উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দাবিগুলো হলো– অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা-অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদে পুনর্বহাল; অবসরের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণ; ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন না করে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম ইংরেজি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিন খান জানান, একজন নিরপরাধ শিক্ষককে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় সাধারণ শিক্ষর্থীরা ক্ষুব্ধ। সোমবার তারা উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা জেনেছেন, গতকাল তিনি ক্যাম্পাসে ছিলেন না। চার দফা দাবি না মানলে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
ড. শুচিতা যোগদানের পরই শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর অনুসারী। জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের ৩৫০ বিশিষ্টজন গত বছর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছিলেন। উপাচার্যও সেই বিবৃতিদাতাদের একজন। এ ছাড়া কলিমুল্লাহকে ববির একাডেমিক কাউন্সিলর, পরীক্ষা কমিটি ও পূর্বের চাকরি গণনা কমিটির সদস্য করা হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রত্যাহার করেন তিনি।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ, তিনি সব একাডেমিক কাজের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান করবেন। কিন্তু উপাচার্য তাঁকে বাদ দিয়েই নথিভিত্তিক ও সভাভিত্তিক একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেন। কোষাধ্যক্ষ ড. মামুন অর রশিদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত চেক কোষাধ্যক্ষ এবং তদূর্ধ্ব চেক উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যৌথ স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু উপাচার্য সব চেকে একাই স্বাক্ষর করেন। এসব অভিযোগ এর আগে শিক্ষার্থীরা দুইবার উপচার্যের পদত্যাগে এক দফার আন্দোলনে নেমেছিলেন। গত ২৮ নভেম্বর তাঁর কক্ষে তালাও লাগিয়েছিলেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও মেসেজ দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে সোমবার রাতে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সাকিব হোসেন জানান, উপাচার্য সারাদিন একাধিক বৈঠক করেছেন। এখন তিনি বিশ্রামে রয়েছেন।