গরমে শিশুর পুষ্টি ঠিক রাখার জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা স্কুলগামী শিশু রয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর পরিপাকতন্ত্র বা ইমিউন সিস্টেম সাধারণত দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড গরমে ছোটাছুটি করে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এ সময় সাধারণত বাচ্চাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা, ডায়রিয়া, জন্ডিস বা টাইফয়েড হতে দেখা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন বা জ্বরের প্রবণতা দেখা যায়।
যেহেতু তাদের সারাদিনের ক্যালরি এবং প্রোটিনের চাহিদা অনেক বেশি থাকে, তাই তাদের জন্য সঠিক ও নিরাপদ খাবার সঠিক পরিমাণে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের ঘরের খাবারে অভ্যস্ত করানোর ব্যাপারে জোর দিতে হবে এবং বাইরের কেনা খাবার যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। খুব বেশি লবণাক্ত, প্রসেসড খাবার, ঝাল জাতীয় বা মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো তাদের দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খুব বেশি ঠান্ডা বা ফ্রিজের খাবারগুলো সরাসরি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে যেন তৈরি হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চাদের টিফিনে এমন খাবার দিতে হবে যেন খাবারগুলোয় ব্যাকটেরিয়া সহজে না জন্মায়। শুকনো জাতীয় খাবারগুলো তাদের দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে– যেমন খেজুর, বাদাম, বিস্কিট, কলা, আপেল, কমলা, ডিম চপ, মুরগির কাবাব, মোমো, কাটলেট নুডলস, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। তবে খুব বেশি ভাজা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
খাবার এবং পানীয় অবশ্যই ফুড গ্রেড উপকরণের পাত্রে দিতে হবে। যে কোনো প্লাস্টিকের পাত্র ছয় মাসের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। পানি বা পানীয় জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে স্টিল বা কাচের বোতল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। স্কুলগামী বাচ্চারা যেন স্কুলে যাওয়ার আগে কোনোভাবেই নাশতা বাদ না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সহজপাচ্য নাশতা তাদের জন্য নির্বাচন করা বেশ জরুরি। সে ক্ষেত্রে নরম সবজির খিচুড়ি, হাতে বানানো রুটি, চিকেন স্যুপ বা ওটস তাদের জন্য হতে পারে উপযুক্ত খাবার। তাদের খাবারের তালিকা থেকে যেন ডিম বাদ না পড়ে যায়, সেদিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
তাদের খাবারের তালিকায় অবশ্যই ফল, শাক এবং সবজি জাতীয় খাবারগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকতে হবে; যা থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন মিনারেলস ও ফাইবার পাবে এবং পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবারগুলোর দিকেও বেশি জোর দিতে হবে। যেমন ফলের (বাঙ্গি, তরমুজ, কমলা, মাল্টা, আম, বেল) শরবত, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, দই দিয়ে লাচ্ছি বা মাঠা। দুধ জাতীয় খাবারে যদি তাদের হজমে সমস্যা হয় তাহলে সরাসরি দুধ না দিয়ে দুধের তৈরি খাবার যেমন– পায়েস, সেমাই, পুডিং, কাস্টার্ড বা ফালুদা তাদের একবেলা দেওয়া যেতে পারে। তাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মাছ বা মুরগি রাখতে হবে, যা প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। অল্প অল্প খাবার বারবার তাদের দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাদের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং তারা সারাদিন কতটুকু পানি গ্রহণ করছে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণত বয়সভেদে শিশুদের জন্য দেড় থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হয়। সহজপাচ্য, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে এ গরমেও শিশু থাকবে রোগমুক্ত, সুস্থ ও সুন্দর।
পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত দ র জন য খ ব রগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলগামী শিশুর খাবার
গরমে শিশুর পুষ্টি ঠিক রাখার জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা স্কুলগামী শিশু রয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর পরিপাকতন্ত্র বা ইমিউন সিস্টেম সাধারণত দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড গরমে ছোটাছুটি করে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এ সময় সাধারণত বাচ্চাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা, ডায়রিয়া, জন্ডিস বা টাইফয়েড হতে দেখা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন বা জ্বরের প্রবণতা দেখা যায়।
যেহেতু তাদের সারাদিনের ক্যালরি এবং প্রোটিনের চাহিদা অনেক বেশি থাকে, তাই তাদের জন্য সঠিক ও নিরাপদ খাবার সঠিক পরিমাণে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের ঘরের খাবারে অভ্যস্ত করানোর ব্যাপারে জোর দিতে হবে এবং বাইরের কেনা খাবার যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। খুব বেশি লবণাক্ত, প্রসেসড খাবার, ঝাল জাতীয় বা মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো তাদের দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খুব বেশি ঠান্ডা বা ফ্রিজের খাবারগুলো সরাসরি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে যেন তৈরি হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চাদের টিফিনে এমন খাবার দিতে হবে যেন খাবারগুলোয় ব্যাকটেরিয়া সহজে না জন্মায়। শুকনো জাতীয় খাবারগুলো তাদের দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে– যেমন খেজুর, বাদাম, বিস্কিট, কলা, আপেল, কমলা, ডিম চপ, মুরগির কাবাব, মোমো, কাটলেট নুডলস, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি। তবে খুব বেশি ভাজা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
খাবার এবং পানীয় অবশ্যই ফুড গ্রেড উপকরণের পাত্রে দিতে হবে। যে কোনো প্লাস্টিকের পাত্র ছয় মাসের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। পানি বা পানীয় জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে স্টিল বা কাচের বোতল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। স্কুলগামী বাচ্চারা যেন স্কুলে যাওয়ার আগে কোনোভাবেই নাশতা বাদ না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং সহজপাচ্য নাশতা তাদের জন্য নির্বাচন করা বেশ জরুরি। সে ক্ষেত্রে নরম সবজির খিচুড়ি, হাতে বানানো রুটি, চিকেন স্যুপ বা ওটস তাদের জন্য হতে পারে উপযুক্ত খাবার। তাদের খাবারের তালিকা থেকে যেন ডিম বাদ না পড়ে যায়, সেদিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
তাদের খাবারের তালিকায় অবশ্যই ফল, শাক এবং সবজি জাতীয় খাবারগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকতে হবে; যা থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন মিনারেলস ও ফাইবার পাবে এবং পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবারগুলোর দিকেও বেশি জোর দিতে হবে। যেমন ফলের (বাঙ্গি, তরমুজ, কমলা, মাল্টা, আম, বেল) শরবত, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, দই দিয়ে লাচ্ছি বা মাঠা। দুধ জাতীয় খাবারে যদি তাদের হজমে সমস্যা হয় তাহলে সরাসরি দুধ না দিয়ে দুধের তৈরি খাবার যেমন– পায়েস, সেমাই, পুডিং, কাস্টার্ড বা ফালুদা তাদের একবেলা দেওয়া যেতে পারে। তাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মাছ বা মুরগি রাখতে হবে, যা প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। অল্প অল্প খাবার বারবার তাদের দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাদের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং তারা সারাদিন কতটুকু পানি গ্রহণ করছে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণত বয়সভেদে শিশুদের জন্য দেড় থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হয়। সহজপাচ্য, স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে এ গরমেও শিশু থাকবে রোগমুক্ত, সুস্থ ও সুন্দর।
পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা