ব্রোকারেজ হাউসের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে ছাড়
Published: 22nd, April 2025 GMT
শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির সুযোগ দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে নিজস্ব রূপরেখা বিএসইসিকে জানাতে হবে। তার ভিত্তিতে ‘কেস-টু-কেস’ সিদ্ধান্ত জানাবে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার বিএসইসির সঙ্গে শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। লোকসানের বিপরীতে পর্যাপ্ত প্রভিশন না রেখে আর্থিক হিসাব তৈরিতে ছাড় গত ডিসেম্বরে শেষ হয়। ফলে ব্রোকারেজ হাউসগুলো বার্ষিক আর্থিক হিসাব প্রস্তুত করতে পারছিল না। এমন প্রেক্ষাপটে ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর অনুরোধে বৈঠকটি হয়।
বিএসইসির হিসাবে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক মিলে মোট ৩৬ হাজার মার্জিন অ্যাকাউন্টে মূলধনি লোকসান রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রেখেছে। অনেক ব্রোকারেজ হাউসে মার্জিন ঋণের অ্যাকাউন্টে ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ রয়েছে। এছাড়া প্রচুর ‘আনরিয়ালাইজড লস’ বা সম্ভাব্য ক্ষতি রয়েছে।
নেগেটিভ ইক্যুয়িটি হলো নিজস্ব মূলধনের বাইরে মার্জিন ঋণ নিয়ে কেনা শেয়ারের দাম যখন এতই কমে যায় যে, সব শেয়ার বিক্রি করেও ঋণের অর্থ আদায়ে ঘাটতি থাকে। শেয়ারে আনরিয়েলাইজড লস হলো– বিনিয়োগের পর বিক্রির আগে বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় সম্ভাব্য ক্ষতি। এমন ক্ষতির বিপরীতে মুনাফা থেকে লোকসানের সমপরিমাণ অর্থ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়, যা করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শেয়ারবাজার ধসে মূলত ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ তৈরি হয়েছে। ঋণে কেনা শেয়ারের বাজারমূল্য ঋণের তুলনায় ১২৫ শতাংশে নামলে ‘ফোর্স সেল’ করে ঋণ আদায় করার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। তবে দরপতন ঠেকানোর নাম করে ২০১১ সাল থেকে বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে ফোর্স সেল করতে বাধা দেয়। এজন্য প্রভিশন সংরক্ষণে ছাড় দিয়ে আসছিল। নতুন কমিশন আর ছাড় দিচ্ছিল না।
এ সংকট সমাধানে আলোচনার অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর পক্ষ থেকে বিএসইসিকে চিঠি দেওয়া হয়। জানতে চাইলে আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিবিএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও আইডিএলসি সিকিউরিটিজের এমডি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। দ্রুততম সময়ে আলোচনায় সাড়া দেওয়ায় বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন সমকালকে বলেন, শেয়ারবাজারে ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ সমস্যাটি গত এক যুগেরও বেশি সময়ের, যা ‘ক্যান্সারে’ রূপ নিয়েছে। বিএসইসি বলেছে, এটি বয়ে বেড়ানোর সুযোগ নেই। ব্রোকাররাও তা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সমাধান করতে সম্মত হয়েছে। কমিশন প্রত্যেকের কাছ থেকে পৃথক পরিকল্পনা চেয়েছে। পরিকল্পনা জানানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে চলতি প্রান্তিকের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস আর থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বুধবার
পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত আছে। এতে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসার প্রত্যাশায় ফের সক্রিয় হন বিনিয়োগকারীরা। তবে, দীর্ঘ আট মাসেও তা দৃশ্যমান না হওয়া বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ। এমন পরিস্থিতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)।
আগামীকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) সমন্বয়ক ও প্রধান মুখপাত্র মো. নুরুল ইসলাম মানিক রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অপসারণের দাবিতে আগামীকাল বুধবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। সকল বিনিয়োগকারী ও অংশীজনকে এ বিক্ষোভ মিছিলের অংশ নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে গত ১৫ এপ্রিল বিএসইসি ও আইসিবির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
ঢাকা/এনটি/রফিক