মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর আগামীকাল বুধবার থেকে শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্টের প্রকাশিত কার্যতালিকায় দেখা যায়, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলো ২৩ এপ্রিল শুনানির জন্য রয়েছে।

এই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত আছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শামীমা সুলতানা। মঙ্গলবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর বুধবার থেকে শুনানি শুরু হচ্ছে।

এর আগে ওই মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো.

লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব; কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।

কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা এসব আপিল ও আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনপ্রদীপ কুমার ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড৩১ জানুয়ারি ২০২২

সিনহা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে, যা একই বছর ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স মামলা শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করতে হয়। পেপারবুক প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান।

আরও পড়ুনসিনহা হত্যা: সেদিন যা ঘটেছিল৩১ জানুয়ারি ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপ ল ও ও আপ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৩১ ঘণ্টা অনশনে চবির নয় শিক্ষার্থী, দু’জনকে স্যালাইন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের তীব্র গরমে খোলা আকাশের নিচে বিছানা পেতে শুয়ে আছেন ৯ শিক্ষার্থী। সঙ্গে বসে আছেন তাদের সহপাঠীরা। গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে আমরণ অনশনে আছেন তারা। পিপাসা ও ক্ষুধার্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন দুজন। তবুও ভাঙেননি অনশন। কিছুক্ষণ পর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা হেঁটে গেছেন তাদেরই সামনে দিয়ে। দুই-একজন আশ্বাস দিলেও বেশিরভাগ কর্মকর্তাই ছিলেন নীরব।  

মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে ৩১ ঘণ্টা ধরে অনশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার তীব্র গরমে ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তারা। বিকেল চারটায় দু’জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। 

প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল অফিসার আব তৈয়ব বলেন, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের সুগার লেবেল ডাউন হয়ে যাচ্ছে। ফলে মাথা ঘোরানো, বমি ও অজ্ঞান হওয়াসহ গরমে হিট স্ট্রোক হতে পারে। আমি দু’জনকে স্যালাইন দিয়েছি। 

অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম; ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি; ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল; ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়ামিন, মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা; ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তরিকুল ইসলাম মাহী ও মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ ।

অনশনরত শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল বলেন, আমাদের অনশনের একটাই উদ্দেশ্য দ্রুত সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে চারুকলার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। হয় চারুকলা প্রত্যাবর্তন নয়তো আমাদের মৃত্যু। শিক্ষকরা সভায় এই সিদ্ধান্তের বাহিরে কোনো কিছুই আমরা মেনে নেব না।

এদিকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সভা চলছিল। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। এর পর ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক করে গঠন করা হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এখন এর অবস্থান। 

২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চলে। ওই শিক্ষার্থীরা চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি জানান। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের ১০০তম দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা ও হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সেশনজট কমাতে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এর পর বিভিন্ন সময়ে এই দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। 

সর্বশেষ অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে আবারও আন্দোলন নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ১২ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মার্চের মধ্যেই চারুকলা ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। তবে এই প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখায় সোমবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩১ ঘণ্টা অনশনে চবির নয় শিক্ষার্থী, দু’জনকে স্যালাইন
  • ভিন্ন ধরনের কৃষ্ণগহ্বরের খোঁজ মিলেছে
  • অনশনে অসুস্থ চবির ২ শিক্ষার্থী
  • গায়েবি মামলায় ভুগছেন জবির ১১ শিক্ষার্থী
  • ধর্ষণের দায়ে তরুণের যাবজ্জীবন, জরিমানার টাকা ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ
  • চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি, আশা ট্রাম্পের
  • ‘ইলিশের বাড়ি’ সংরক্ষণে নজর দিন আগে
  • বাংলার কণ্ঠে বিশ্ব মুগ্ধ, আমেরিকায় রয়া চৌধুরীকে সম্মাননা
  • আবারও শুরু হচ্ছে ‘ঢাকা রক ফেস্ট’